স্বচালিত গাড়ি যাতে তুষার বা কুয়াশায় ঢেকে থাকা পথ দেখতে পায়, সে উপায় বের করেছে এমআইটি’র ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ল্যাব’ (সিএসএআইএল)। নতুন ওই পন্থায় ম্যাপিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তুষারে ডেকে থাকা পথ বুঝতে ও সে পথে চলতে পারবে স্বচালিত গাড়ি। প্রক্রিয়াটির নাম রাখা হয়েছে ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রেডার’ (জিপিআর)। -- খবর প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের।
অধিকাংশ স্বচালিত গাড়িই নিজ অবস্থান বুঝতে ও পথে চলতে এলআইডিএআর সেন্সর ও ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অনেক সময়ই আলোক স্বল্পতার জন্য বা রাস্তা ঢেকে থাকার জন্য ঠিকভাবে হিসেব করে উঠতে পারে না ক্যামেরা। কিন্তু জিপিআর-এর মাধ্যমে খুব সহজে ওই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পালস পাঠিয়ে মাটি, পাথর ও শেকড়বাকরের একদম সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে জেনে মানচিত্র তৈরি করে নিতে পারবে প্রক্রিয়াটি।
আদতে এই প্রক্রিয়াটি এমআইটি উদ্ভাবিত ‘লোকালাইজিং গ্রাউন্ড পেনেট্রেটিং রেডার’ বা এলজিপিআর ব্যবহার করে থাকে। এলজিপিআর-ও কিন্তু এক ধরনের জিপিআর প্রযুক্তি। এই প্রক্রিয়ায় রাস্তা খুঁজে পেতে কোনো ক্যামেরা বা লেজারের প্রয়োজন পড়বে না বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা।
এ প্রসঙ্গে সিএসএআইএলের পিএইচডি শিক্ষার্থী টেডি অর্ট বলেন, “আপনি বা আমি যদি কোদাল নিয়ে মাটি খুড়ি, তাহলে মাটি ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাব না। কিন্তু এলজিপিআর নিখুঁতভাবে সব উপাদান পরিমাপ করতে পারবে এবং তা নিজের তৈরি ম্যাপের সঙ্গে তুলনা করতে পারবে। ফলে এটি জানবে, ঠিক কোন জিনিসটি কোথায় রয়েছে। এর জন্য কোনো ক্যামেরা বা লেজারের প্রয়োজন পড়বে না।”
এখন পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে প্রযুক্তিটি। গ্রামীণ রাস্তায় স্বল্প গতিতে স্বচালিত গাড়ি চালিয়ে প্রযুক্তিটিকে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এনগ্যাজেট। সামনে ‘আইইই রোবোটিকস অ্যান্ড অটোমেশন লেটারস’ জার্নালে প্রকল্পটির গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। পুরো প্রক্রিয়ায় যে যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর আকারকে আরও ছোট করে আনার বিষয়টি নিয়েও ভাবছেন গবেষকরা। বর্তমানে ছয় ফিট চওড়া যন্ত্রাংশ গাড়ির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।