গোপনে ডেটা সংগ্রহ করে বিক্রি করত অ্যাভাস্ট

ব্রাউজার প্লাগইনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের ডেটা সংগ্রহ করতো অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস। ডেটা সংগ্রহের পর তা তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রিও করতো প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির ক্রেতাদের তালিকায় ছিল মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রযুক্তি জায়ান্ট।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2020, 11:28 AM
Updated : 29 Jan 2020, 11:28 AM

বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪৩ কোটি ৫০ লাখ উইন্ডোজ, ম্যাক এবং মোবাইল ডিভাইসে অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস ‘ইনস্টল’ করা অবস্থায় রয়েছে। মূলত ব্রাউজার প্লাগ-ইনের মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহ করতো প্রতিষ্ঠানটি। পরে তা বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতো তারা। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ব্রাউজার এক্সটেনশনের মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহের ওই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। -- খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আইএএনএস-এর।

মাদারবোর্ড ও পিসিম্যাগের এক যৌথ তদন্তে অ্যাভাস্ট ও ডেটা সংগ্রহের বিষয়টি উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, পৃথিবী জুড়ে লাখো মানুষ নিজেদের ডিভাইসের নিরাপত্তায় অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাসের বিনামূল্যের সংস্করণটি ব্যবহার করে থাকেন। মাদারবোর্ড ও পিসিম্যাগের তদন্তে জানা গেছে, “এ ধরনের ডেটা বিক্রির বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেতা ও গ্রহীতা দুই পক্ষই গোপনতা বজায় রাখবে বলে সম্মত হত।”

আইএএনএস’কে দেওয়া এক বিবৃতিতে অ্যাভাস্টের বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহী অন্দ্রেজ ভ্লেক জানিয়েছেন, ডিসেম্বর ২০১৯-এ ব্রাউজার স্টোর মানের সঙ্গে তাল মেলাতে খুব দ্রুত কাজ করেছে তারা এবং বর্তমানে নিজেদের নিরাপত্তা এক্সটেনশনের জন্য ব্রাউজার এক্সটেনশনের ধরাবাঁধা নিয়ম মেনে চলছে।

“একই সময়ে শুধু মূল নিরাপত্তা ইঞ্জিনের প্রয়োজন ছাড়া পুরোপুরিভাবে ব্রাউজার এক্সটেনশনের মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহের কর্মকাণ্ড বন্ধ করেছি, এমনকি নিজেদের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘জাম্পশট’-এর সঙ্গেও শেয়ার করাও।”

তদন্তের সময় হাতে আসা প্রতিবেদনগুলো জাম্পশট থেকে ফাঁস হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে আইএএনএস। ওই প্রতিবেদনগুলোর বরাতে জানা গেছে, অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করে রাখা কম্পিউটারের ব্রাউজার হিস্টোরি ডেটা সংগ্রহ করা হতো এবং সেগুলোকে নানাবিধ পণ্যে রূপান্তর করে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করতো জাম্পশট।

এসব ডেটার সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে ছিল “গুগল, ইয়েলপ, ম্যাকিনজে, পেপসি, সেফোরা, হোম ডিপো, কন্ডে নাস্ট, ইনটুইট এবং আরও অনেকে।”

অ্যাভাস্টের বৈশ্বিক প্রধান নির্বাহী অন্দ্রেজ ভ্লেক জানিয়েছেন, ডেটা বিক্রি হলেও কোনো ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত পরিচিতি তথ্য, নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস বা যোগাযোগ বিস্তারিত বিক্রি করা হয়নি।”

অ্যাভাস্ট অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান জাম্পশটের মাধ্যমে এভাবে বিক্রি হওয়া ডেটায় প্রবেশাধিকার পেতে এক বিপণণ সংস্থা ২০ লাখ ডলারের বেশি খরচ করেছে বলে জানা গেছে ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনের বরাতে।

তদন্তের তথ্য মোতাবেক, এখনও ডেটা সংগ্রহ করছে অ্যাভাস্ট। এবার আর ব্রাউজার প্লাগইনের মাধ্যমে নয়, সরাসরি অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যারের মা্ধ্যমে ডেটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।