পরিধেয় প্রযু্ক্তি পণ্য নির্মাতা ফিটবিট-কে কিনতে চাইছে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট। তবে অ্যালফাবেটের সে চেষ্টা বাস্তবে রূপ নেবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে জড়িত সূত্ররাও।
এক প্রতিবেদনে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ওই পরিধেয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটিকে কী পরিমাণ অর্থে কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে, সে তথ্যটি এখনও গোপন রাখা হয়েছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই পরিধেয় প্রযু্ক্তির বাজারে নিজেদের অপারেটিং সিস্টেম ‘ওয়্যার ওএস’ নিয়ে পাল্লা দিচ্ছে গুগল। বাজারে এলজি, ফসিল এবং টিকওয়াচ এর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিধেয় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেও অ্যাপলের সঙ্গে ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। স্যামসাং নিজেদের অনেক ডিভাইসে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ওএস ব্যবহার করলেও, নিজেদের পরিধেয় প্রযুক্তির বেলায় এড়িয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটিকে। নিজেদের পণ্যে ব্যবহার করেছে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ‘টাইজেন’।
জানুয়ারি মাসেই চার কোটি ডলারের বিনিময়ে ফসিলের কাছ থেকে ‘কিছু সংখ্যক’ স্মার্ট ওয়াচ প্রযুক্তি কেনে গুগল। তবে ঠিক কোন প্রযুক্তি কেনা হয়েছে তা এখনও জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রসঙ্গে ফসিলের এক নির্বাহী বলেছেন, “এটি এমন নতুন প্রযু্ক্তি যা এখনও বাজারে আসেনি।”
কয়েক বছর ধরেই গুজব শোনা যাচ্ছে, নিজস্ব ব্র্যান্ডের পিক্সেল স্মার্টওয়াচ বাজারে আনতে চাচ্ছে গুগল। ভার্জ বলছে, ২০১৬ সালের দিকে ওই গুজব প্রায় সত্যি হয়ে-ও গিয়েছিল, আরেকটু হলেই বাজারে চলে এসেছিল ওই স্মার্টওয়াচ। কিন্তু অনেকটা হুট করেই সে পরিকল্পনার ইতি টানে গুগল। নিজেদের হার্ডওয়্যার ব্র্যান্ডে স্মার্টওয়াচ তৈরির জন্যই পিছিয়ে এসেছিল প্রতিষ্ঠানটি। পরে অবশ্য এলজি ওয়াচ স্পোর্ট এবং এলজি ওয়াচ স্টাইল নামে ২০১৭ সালে বাজারে এসেছিল স্মার্টওয়াচ দুটি। পরিধেয় ওই প্রযুক্তিপণ্য দুটি মাঝারি মানের রিভিউ পেয়েছিল।
ওই ঘটনার পর থেকেই নিজেদের হার্ডওয়্যার ব্র্যান্ড তৈরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গুগল। ২০১৭ সালে পিক্সেল ফোন তৈরির স্বার্থে এইচটিসি স্মার্টফোন বিভাগের একটি অংশ কিনে নিয়ে তাদের প্রকৌশলী দলকে নিজেদের শিবিরে ভিড়িয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ফিটবিটের ক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে বলে ধারণা করছে ভার্জ।
এদিকে, স্মার্টওয়াচ তৈরিতে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি ফিটবিট। তবে ফিটনেস ট্র্যাকার প্রযুক্তির দিক থেকে বিশ্বে প্রথমসারির একটি প্রতিষ্ঠান এটি। ভালো স্মার্টওয়াচ তৈরির লক্ষ্যে ২০১৬ সালে স্মার্টওয়াচ নির্মাতা পেবল-কে দলে ভিড়িয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তারপরেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। এ অবস্থায় গুগল কী করবে, এখন সেটিই দেখার বিষয়।
রয়টার্স বলেছে, বর্তমান অবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য জানাতে রাজি হয়নি ফিটবিট ও গুগল।