সেরা ৫ উদ্ভাবনী ভাবনা পেল মাইক্রোসফট-ইয়াং বাংলা প্ল্যাটফর্ম

চার দিনব্যাপী উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন শেষে পাঁচটি উদ্ভাবক-উদ্যোক্তা দলকে খুঁজে পেল ‘মাইক্রোসফট ইয়াং বাংলা সামিট ২০১৮’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2018, 03:46 PM
Updated : 6 Oct 2018, 03:58 PM

তরুণদের উদ্ভাবনী ভাবনার বিকাশের সুযোগ করে দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে গত ৩ অক্টোবর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে শুরু হয় এই সামিট।

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) তারুণ্যের প্ল্যাটফর্ম ইয়াং বাংলার উদ্যোগে ও মাইক্রোসফট বাংলাদেশের সহায়তায় আয়োজিত স্টার্ট আপ ইন্টার্নদের এই সামিটে অংশ নিতে এবার আবেদন করেন এক হাজারের বেশি উদ্যোক্তা।    

ইয়াং বাংলা জানায়, এবারের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামে অংশ নিতে সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন করে ৩২৪টি দল। এর মধ্যে থেকে বাছাইকৃত ২৫০টি দল সামিটে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।

এবছর মার্চ মাসে ইন্টার্নশিপ শেষে বাছাই করা হয় ১০টি দল এবং এই সামিটে ৫ অক্টোবর আরও ১০টি দলকে বেছে নেন বিচারকরা। মোট ২০টি দল শনিবার তাদের উদ্ভাবনী ভাবনা উপস্থাপন করেন যেখান থেকে পাঁচটি সেরা উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন করা দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বিজয়ী দলগুলো হল- গরুর ডাক্তার, ফিন্যান্স উইজার্ড, ব্লেজ ওয়ারিয়ার্স, বিএসএল এবং মাইক্রো বিটস।

‘গরুর ডাক্তার’ দলের মূল ভাবনা গবাদি পশুর চিকিৎসক সরবরাহ নিয়ে। গবাদি পশু অসুস্থ হলে কিভাবে দ্রুত একজন খামারি পশু চিকিৎসক খুঁজে পাবেন, সেই ভাবনা থেকেই অ্যাপ তৈরিসহ আরও ধারণা দেন দলটির সদস্যরা।

নিজেদের মত তরুণ উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তার কথা মাথায় রেখে অ্যাপ তৈরি করতে চায় ‘ফিন্যান্স উইজার্ড’। তাদের মূল লক্ষ্য কোনো ধারণাই যেন অর্থের অভাবে নষ্ট হয়ে না যায়।

‘ব্লেজ ওয়ারিয়ার্স’ চায় নিঃসঙ্গ বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ সোশ্যাল সাইট তৈরি করতে।

বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষামূলক অ্যাপ বানাতে কাজ করবে ‘বিএসএল’। স্মার্টফোন ব্যবহার করে স্কুলের শিক্ষা নিতে করতে পারবে তারা।

‘মাইক্রো বিটস এর লক্ষ্য অপচনশীল দ্রব্য, যেমন পলিথিনের বদলে পচনশীল প্যাকেজিং ব্যবস্থা এবং পণ্য সরবরাহের এমন এক প্রক্রিয়া তৈরি, যাতে প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। 

বিজয়ী পাঁচটি দলের জন্য থাকছে ব্যবসা শুরুর মূলধন যোগান থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট ও ইয়াং বাংলার তরফ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা।

ইয়াং বাংলা নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত সেরা পাঁচ স্টার্ট আপ প্রতিষ্ঠানের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ পাবে এই পাঁচটি দল। তারা নিজেদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে স্টার্ট আপ ওগমেডিক্স, সোল শেয়ার, প্রিয়শপ, সেবা এক্সওয়াইজেড ও ই-ভিলেজের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দিতে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশীর কবির।

সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক বলেন, “ইয়াং বাংলার স্লোগান কানেক্টিং দ্য ডটস। তরুণদের লবিস্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ইয়াং বাংলা। বর্তমান প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা ও আইডিয়ার সাথে দেশের নীতি নির্ধারকদের সেতুবন্ধন তৈরির উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।

“ইয়াং বাংলার মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সাথে মাইক্রোসফটের মত একটি ব্রান্ডকে যুক্ত করতে পেরেছি আমরা।”

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “তরুণদের কাছ থেকে ইনোভেটিভ আইডিয়া চাই আমরা। শুধু চাকরির পেছনে দৌড়ে লাভ নেই। সরকার তিন হাজারের বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি করতে পারে না বছরে। তার পেছনে না ছুটে নিজের নতুন আইডিয়া নতুন উদ্যোগ নিয়ে যারা এগিয়ে যাবেন তাদের হাতেই থাকবে উন্নত বাংলাদেশের কাণ্ডারি।”

মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ডিরেক্টর সোনিয়া বশীর কবির তাদের ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডরদের উদ্দেশে জানান, ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা ১০০ ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এখন মাইক্রোসফট ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে যাচ্ছেন।

ইয়াং বাংলার সেক্রেটারিয়েট সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) কো-অর্ডিনেটর তন্ময় আহমেদ জানান, সামিটে বেশ কিছু ভিন্নধর্মী সেশনের মাধ্যমে প্রতিযোগী গ্রুপগুলোকে প্রস্তুত করা হয়। গ্রুপগুলোর নিজস্ব ধারণা বিচার বিশ্লেষণ শেষে সেরা দশ গ্রুপ নির্বাচন করা হয়।

আর ৬ অক্টোবর চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী গ্রুপগুলোর জন্য ব্যবসা শুরুর মূলধনের যোগান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের সাপোর্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সিআরআইর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাব্বির বিন শামস জানান, শুধু বিজয়ী দলগুলো নয়, সামিটে অংশ নেওয়া সব দলকে নিয়ে কাজ করবে ইয়াং বাংলা। তাদের স্টার্ট আপ ধারণাগুলোর সাথে অন্য মন্ত্রণালয়, এনজিও বা প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে ইয়াং বাংলা চেষ্টা করবে।