গবেষণায় দেখা যায়, মানুষের কণ্ঠ বা কথার জন্য মস্তিষ্কের যে অংশ কাজ করে সেখানে যুক্ত করা গেইমে রোগীরা একটি রকেট নামিয়ে আনতে পারছেন। এই সময়ে রোগীরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে হ্যালুসিনেশন বা অলীক কিছু দেখার ক্ষমতা কমাতে শিখেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। তবে এটি একটি ছোট পরীক্ষামূলক গবেষণা আর এর ফলাফল নিশ্চিত নয় বলেও জানানো হয়েছে।
কিংস কলেজ লন্ডন-এর ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি, সাইকোলজি অ্যান্ড নিউরোসায়েন্স আর ইউনিভার্সিটি অফ রোয়েহ্যাম্পটন-এর গবেষকরা বলেছেন, ওষুধে কাজ হচ্ছে না এমন সিজোফ্রেনিয়া রোগীদের চিকিৎসায় এই কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ধরনের সমস্যায় থাকা মানুষদের অডিটরি করটেক্স বেশি থাকতে শোনা যায়। এর মানে হচ্ছে তারা শব্দ ও কন্ঠে অনেক বেশি স্পর্শকাতর।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ১২ রোগীর সবাই প্রতিদিন বাজে ও হুমকিমূলক ভারবাল হ্যালুসিনেশন-এর সম্মুখীন হন। ভারবাল হ্যালুসিনেশন বলতে অলীক কিছু শুনতে পাওয়াকে বোঝায়।
নিজেদের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণে তাদেরকে একটি ভিডিও গেইম খেলতা বলা হয়। এ সময় তারা একটি এমআরআই স্ক্যানারে তাদের নিজস্ব মানসিক কৌশল ব্যবহার করে একটি কম্পিউটারাইজড রকেটকে নড়াতে পারছিলেন। এর মাধ্যমে তারা বাইরের যেসব শব্দ শুনছেন সেগুলো কমাতে সক্ষম হন।
কিংস কলেজ লন্ডন-এর ড. নাতাশা অরলোভ বলেন, “রোগীরা জানেন তাদের কণ্ঠস্বর কখন শুরু হতে পারে- তারা এটি বুঝতে পারেন, তাই আমরা চাই তারা তাৎক্ষণিকভাবে এই কৌশলের সহায়তা নেবেন যাতে ওই শব্দগুলো কমানো বা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া যায়।”
গবেষণায় প্রত্যেক রোগীকে চারবার এমআরআই স্ক্যানারে নেওয়া হয়। সবাই খেয়াল করেন তাদের কন্ঠস্বর বাইরের দিকে কম কিন্তু ভেতরে বেশি, যা তাদের চাপ কমায়। তারা এরসঙ্গে মানিয়ে নিতেও পেরেছেন। অরলোভ আরও বলেন, “যদিও এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা কম আর আমাদের নিয়ন্ত্রণ দলের অভাব ছিল, তাও এই ফলাফল আশাদায়ক।”
“আমরা এখন আরও বেশি অংশগ্রহণকারী নিয়ে এই কৌশল পরীক্ষার পরিকল্পনা করছি।”
ট্রান্সলেশনাল সাইকিয়াট্রি নামের এক জার্নালে এই গবেষণা প্রকাশ করা হয়েছে।