ফেইক অ্যাপ বানাচ্ছে তারকাদের ‘গলা কাটা’ পর্ন

গলা কাটা পাসপোর্ট বলে একটি বিষয় ছিলো এককালে। মেশিন রিডএবল পাসপোর্ট যুগের আগে পাসপোর্ট জাল করার জন্য পাসপোর্ট মালিকের চেহারা পাল্টিয়ে সেখানে অন্য চেহারা বসিয়ে দেওয়া হতো। আর পাসপোর্টে মূল ছবির নিচের অংশটি রাখা হতো সিলমোহর ঠিকঠাক রাখার জন্য। প্রায় একই কয়দায় এখন তৈরি হচ্ছে পর্নোগ্রাফিক ভিডিও। আর এতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে নারী তারকাদের চেহারা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2018, 01:45 PM
Updated : 2 Feb 2018, 01:45 PM

চলতি মাসের শুরুতে আসা বিনামূল্যের নতুন এক টুল পর্নোগ্রাফিক ভিডিওতে চেহারা বদলে দেওয়ার এই প্রক্রিয়া সহজ করে দেয়। এরপরই এ ধরনের ভিডিও আরও প্রচলিত হয়ে উঠে বলে উল্লেখ করা হয় বিবিসি’র প্রতিবেদনে।

এই ধরনের ভিডিও শনাক্ত করার পর সার্ভার থেকে সরিয়ে দিয়েছে কনটেন্ট হোস্টিং সাইট জিফিক্যাট। যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রানসিসকোভিত্তিক এই সাইটটির পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের মতে এই কনটেন্টগুলো “আপত্তিকর”।

আরেক ডিপফেইক পর্নোগ্রাফিক ভিডিওতে বসিয়ে দেওয়া হয় মার্কিন পপ তারকা আরিয়ানা গ্রান্দে’র চেহারা। ছবিটি ওই ভিডিও’র স্ক্রিনশট।

নির্মাতাদের দাবি ফেইকঅ্যাপ নামের এই সফটওয়্যার ১০ হাজারেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। একটি মেশিন-লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে অ্যাপটি কারও চেহারার কম্পিউটারে বানানো একটি সংস্করণ তৈরি করে।

এটি করতে বিশ্লেষণার জন্য যার চেহারা বসানো হবে তার কয়েকশ’ ছবি আর যে ভিডিওতে চেহারা বদলানো হবে সেটি দরকার হয়। এর ফলে যে নতুন ভিডিও তৈরি হয় তা ‘ডিপফেইকস’ নামে পরিচিত। চেহারা বদলে দিলেও এই ভিডিও’র মান মূল ভিডিও’র তুলনায় ভিন্ন হয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে যার চেহারা বদলানো হবে আর যার চেহারা বসানো হবে তাদের গঠনে যদি মিল থাকে তবে পার্থক্যটা বোঝা যায় না-- বলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

কেউ কেউ পর্নোগ্রাফিক নয় এমন কনটেন্ট তৈরিতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। এমন ভিডিওগুলোর মধ্যে একটিতে দেখা যায়, জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মের্কেল-এর চেহারার জায়গায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর চেহারা বসানো হয়েছে।

ফেইকঅ্যাপ

এই অ্যাপের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার দেখা যায় পর্নোগ্রাফিক কনটেন্টে কোনো তারকা অভিনেত্রী বা গায়িকার চেহারা বসিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে। এমন অনেক ক্লিপ ইতোমধ্যে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

এ ধরনের কনটেন্টের অনেক নির্মাতা তাদের ভিডিও ক্লিপগুলো জিফিক্যাট-এ আপলোড করেছে। ছোট ভিডিওগুলো হোস্ট করতে এই সেবা ব্যবহার করা হয়। জিফিক্যাট প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্টের অনুমতি দেয় কিন্তু চলতি সপ্তাহের শুরুতে তারা কিছু ডিপফেইক ভিডিও সরানো শুরু করে। এ নিয়ে সবার আগে খবর প্রকাশ করে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট মাদারবোর্ড। 

সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে জিফিক্যাট-এর পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমাদের শর্তাবলী আমারা যেসব কনটেন্ট আপত্তিকর হিসেবে পাই সেগুলো সরানোর অনুমোদন দেয়। আমরা সক্রিয়ভাবে এসব কনটেন্ট সরাচ্ছি।” 

রেডিট এখনও জিফিক্যাট বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের হোস্ট করা ডিপফেইক ভিডিওগুলো দেখার সুযোগ দিচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমটি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রেডিট-এর কনটেন্ট নীতিমালায় ‘অনিচ্ছাকৃত পর্নোগ্রাফি’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।