রাশিয়াকেই দুষছে জার্মান গুপ্তচর সংস্থা

জার্মানির রাষ্ট্রীয় কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার আক্রমণের ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ গুপ্তচর সংস্থা বিএফভি।

ইফতেখার আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2016, 11:45 AM
Updated : 14 May 2016, 11:45 AM

রয়টার্স জানায়, ২০১৫ সালে জার্মান পার্লামেন্টে সাইবার আক্রমণ চালানো হ্যাকার দলটির পেছনে রাশিয়ান সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে একই দলটি জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মের্কেল-এর নেতৃত্বাধীন ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টিতেও হানা দেয় বলে এ সপ্তাহে জানা গেছে।

বিএফভি-এর প্রধান হ্যানস-জর্জ ম্যাসেন জানান, 'সোফ্যাসি/এটিপি ২৮' নামের একটি হ্যাকার দলের উপর্যুপরি শিকার হচ্ছে জার্মানি। এই দলটি রাশিয়া সরকার এবং সিডিইউ পার্টির উপর সাইবার আক্রমণ চালানোর দায়ে অভিযুক্ত 'পন স্টর্ম' গ্রুপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত - বিশেষজ্ঞেরা এমনটাই আশংকা করছেন বলে জানান তিনি।

২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ দলটি বিপুল সংখ্যক সরকারি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালিয়ে আসছে বলে ধারণা করা হয়।

মি. ম্যাসেন জানান, জার্মান পার্লামেন্টে এ আক্রমণে কর্মী ও এমপিদের ব্যবহার্য কম্পিউটারে প্রবেশাধিকারের জন্য ছদ্মবেশী সফটওয়্যার ইনস্টল করতে উৎসাহিত করা হয়। এ ছাড়াও অন্যান্য আক্রমণের ঘটনায় পাওয়ার প্ল্যান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো সংক্রান্ত তথ্যাবলী সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়।

তিনি আরও জানান, এ দলটি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিতে এ ধরনের আক্রমণ চালিয়ে আসছে এবং তার দল দীর্ঘদিন ধরেই এ দলটিকে নজরে রেখে আসছে।

তিনি বলেন, "সাইবার স্পেস হলো সংকর প্রকৃতির যুদ্ধক্ষেত্র। এটি গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগের সৃষ্টি করেছে।"

তবে বিএফভি-এর এই অভিযোগের বিপরীতে রাশিয়া এখনও পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি।

এর আগে রয়টার্সে এক প্রতিবেদনে জানা যায়, প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সক্রিয় রয়েছে পন স্টর্ম। এই হ্যাকার দলটিকে দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকা সাইবার গুপ্তচর দলগুলোর মধ্যে 'অন্যতম' বলে বিবেচনা করা হয়।

কয়েকটি বড় কম্পিউটার গবেষণা দলের ভাষ্যমতে, হ্যাকার দলটি রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের লক্ষ্য হিসেবে নিয়ে থাকে। আর এর মধ্যে ন্যাটো, তুরস্ক আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার অন্তর্ভূক্ত।

ট্রেন্ড মাইক্রো'র পক্ষ থেকে বলা হয়, "পন স্টর্ম স্পষ্টভাবে রাশিয়ার রাজনীতি বা আগ্রহে ঝুঁকি হতে পারে এমন দলগুলোকেই লক্ষ্য হিসেবে নিয়ে থাকে।"

২০১৫ সালে প্রথম জার্মান পার্লামান্টে সাইবার আক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ে। সে সময় জার্মান গণমাধ্যম জানায়, কম্পিউটার সিস্টেম-কে বদলে ফেলতে সরকারকে লাখ লাখ ইউরো খরচ করতে হবে।

জার্মানির সাপ্তাহিক সংবাদ সাময়িকী দার স্পিগেল জানিয়েছে, রাশিয়ান গুপ্তচর সংস্থা এই আক্রমণ ঘটিয়েছে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

২০১৫ সালের জানুয়ারিতে, মের্কেলের ওয়েবসাইটসহ জার্মান সরকারের একাধিক ওয়েবসাইট হ্যাক হয়। ইউক্রেইন সরকারকে সমর্থন করা একটি দল এই হ্যাকের দায় স্বীকার করে নেয়।