“এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল, একটি অভিযোজিত ইউএভি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যা গোটা বিশ্বের বন্য প্রাণী সংরক্ষকরা ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।”
Published : 12 Nov 2024, 06:21 PM
শিগগিরই যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পশায়ার চিড়িয়াখানায় এমন এক ড্রোন ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে, যা ১২০ মিটার ওপর থেকেও কোনো প্রাণীর কান থেকে শিরা পর্যন্ত দেখতে পারে।
এটি এমন এক পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য হল বনের ‘স্নো লেপার্ড’ বা শ্বেত চিতাবাঘ ও অন্যান্য বিপন্ন প্রাণীকে মনিটর করা।
বিভিন্ন প্রাণীকে বিরক্ত না করেই এদের শনাক্ত ও মূল্যায়নের লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছে ‘আনক্রুড এরিয়েল ভেহিকলস (ইউএভি)’ নামের ড্রোনটি, যা বানাতে একত্রে কাজ করছে অলাভজনক সংস্থা ‘মারওয়েল ওয়াইল্ডলাইফ’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটন’।
কাজাখস্তানের ‘আলটিন-এমেল ন্যাশনাল পার্ক’-এর শ্বেত চিতাবাঘ ও বিভিন্ন খুড়ওয়ালা প্রাণী এবং কেনিয়ার গ্রেভি’স প্রজাতির জেব্রা মনিটর করার মাধ্যমে এই প্রকল্পটি শুরু হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
প্রকল্প দলটি এমন এক প্রযুক্তি বিকাশ করছে, যেখানে থার্মাল ইমেজিং, এইচডি ক্যামেরা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় আকাশ থেকেই বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য করা যাবে।
মারওয়েল ওয়াইল্ডলাইফের এক মুখপাত্র বলেছেন, “ধরুন, প্রতিটি জেব্রারই বিশেষ ধরনের ডোরা কাটা প্যাটার্ন থাকে, যা আঙুলের ছাপ বা বারকোডের মতো ব্যবহার করে এদের শনাক্ত করা যেতে পারে।”
মারওয়েল ওয়াইল্ডলাইফের পরিচালক অধ্যাপক ফিলিপ রিওরডান আরও যোগ করেন, “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এরইমধ্যে বড় পরিসরে বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা গেলেও এদের বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয়।”
মারওয়েল ওয়াইল্ডলাইফ বলেছে, ড্রোনগুলো বেশ কয়েকবার পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গিয়েছে, যার মধ্যে দুটি ছিল হ্যাম্পশায়ার চিড়িয়াখানায়।
অলাভজনক সংস্থাটির মুখপাত্র আরও যোগ করেন, “এর সবচেয়ে সাম্প্রতিক পরীক্ষায় ড্রোনগুলো যথেষ্ঠ স্পষ্টতার সঙ্গে ছবি ধারণ করতে পেরেছিল, যেখানে ১২০ মিটার ওপর থেকে একটি জেব্রার শিরা থেকে কান পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে।”
“এমনকি প্রাণীদের ছায়া অন্য কোন প্রাণীর দিকে তাকাচ্ছে, ড্রোনটি থেকে সে তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছেন সংরক্ষকরা। উদাহরণ হিসেবে, তরোয়ালের মতো শিংওয়ালা সকল ‘অরিক্স’ ওপর থেকে দেখতে একই রকম হলেও পুরুষ অরিক্সের ছায়ায় তাদের শিং স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।”
“জুম ফিচারের সহায়তায় আমাদের দলটি প্রাণীর শারীরিক অবস্থাও পর্যবেক্ষণ করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে, কোনো প্রাণীর শ্রোণি ও পাঁজর দেখা যাচ্ছে কি না, এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, তারা হয়ত পর্যাপ্ত খাবার খুঁজে পাচ্ছে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “সামনের বছর থেকে কাজাখস্তান ও কেনিয়ায় বিভিন্ন ইউএভি বসানো হবে, যেখানে ‘গ্রেভি’স জেব্রা ট্রাস্ট’ ও ‘কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস’-এর সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করব।”
“এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল, একটি অভিযোজিত ইউএভি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যা গোটা বিশ্বের বন্য প্রাণী সংরক্ষকরা ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।”