অনলাইনে নারীদের হয়রানিকে ‘স্বাভাবিক’ হিসাবে দেখছেন অনেক মা-বাবা। তাদের ধারণা, অনলাইনে মেয়েদের হয়রানি একেবারেই তুচ্ছ বিষয়।
সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক অলাভজনক অনলাইন নিরাপত্তা দাতব্য সংস্থা ‘ইন্টারনেট ম্যাটার্স’-এর এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, যুক্তরাজ্যের ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৭৭ শতাংশ মেয়ে এমন ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন, যেগুলো তাদের জন্য ক্ষতিকর।
১৫ বছর বয়সী এক মেয়ের মা ওই প্রতিবেদনে বলেছেন, অনলাইনে ‘পুরুষাঙ্গের ছবি’ এতটাই ‘প্রচলিত হয়ে উঠেছে যে তা উল্লেখ করারও যোগ্য নয়’।
গবেষণার উপসংহারে বলা হয়, “এ গবেষণায় অবাক করার মতো বিষয় হল– কয়েকজন মা-বাবাও নারীদের অনলাইন হয়রানিকে তুচ্ছ বিষয় হিসাবে বিবেচনা করছেন এমনকি একে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছেন।”
এর মানে হচ্ছে, ওইসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের সহায়তা করার পরিবর্তে পুরুষদের পাঠানো আপত্তিকর কনটেন্ট ‘এড়িয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ দিচ্ছেন।
‘ইন্টারনেট ম্যাটার্স’-এর সহ-প্রধান নির্বাহী ক্যারোলিন বান্টিং বলেছেন, “বেশিরভাগ মা-বাবা সন্তানদের প্রতি তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। আর নিজেদের সন্তানকে সমর্থন দেওয়ার সেরা চেষ্টাই করে যাচ্ছেন তারা।”
“তবে আমি উদ্বিগ্ন কারণ আমরা সবাই এ সত্য দেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি যে, অফলাইনে যা অগ্রহণযোগ্য, তা অনলাইনেও গ্রহণ করা উচিৎ নয়।”
এদিকে, ‘অনলাইনে উপযুক্ত আচরণ নিয়ে নতুন করে নীতিমালা’ তৈরির জন্যে একটি সর্বজনীন প্রচারণার আহ্বান জানিয়েছে দাতব্য সংস্থাটি, যার মধ্যে রয়েছে পুরুষদের উদ্দেশ্যে বার্তা পাঠানোর বিষয়টিও।
এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’-এর সেই নির্দেশিকাও দেখতে চায় সংস্থাটি, যেখানে অনলাইন হয়রানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে লড়াই করার নির্দেশনা রয়েছে।
গবেষণাটিতে অংশ নেওয়া ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৫৭ শতাংশ কন্যাশিশুর মতে, তারা অনলাইনে সময় কাটাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তাদের দাবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
“সো স্ট্যান্ডার্ড ইটস নট নোটেয়ার্য়া: টিনেজ গার্লস এক্সপেরিয়েন্স অফ হ্যাম অনলাইন” শীর্ষক এক গবেষণাপত্রের জন্য ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন টিনএজ মেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে ১২টি সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিশ্লেষক কোম্পানি ‘বিএমজি রিসার্চ’, যা প্রকাশ পেয়েছে সোমবার।