আইফোন ১৪: নতুন কী, কমতি কিসের?

‘ক্র্যাশ ডিটেকশন’ আর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এসওএস বার্তা পাঠানোর ফিচারগুলোসহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, নতুন হার্ডওয়্যার পণ্যকে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার আনুসাঙ্গিক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে কোম্পানিটি।

আব্দুল্লাহ জায়েদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2022, 10:53 AM
Updated : 8 Sept 2022, 10:53 AM

‘ফার আউট’ আয়োজনে অ্যাপল একসঙ্গে নতুন আইফোনের চারটি মডেল দেখালেও প্রশ্ন উঠেছে, নতুন কী আছে ডিভাইসগুলোতে যার জন্য এতো প্রচারণা আর হইচই?

গেল কয়েক মাসে বাজারে গুজব রটেছিল, নতুন আইফোনের দাম বাড়াবে অ্যাপল; তেমনটা হয়নি। অ্যাপলের নিজস্ব সাইটে নতুন আইফোনের দাম শুরু ৭৯৯ ডলার থেকে।

‘ফার আউট’ আয়োজনে প্রধান নির্বাহী টিম কুক নতুন আইফোনকে উপস্থাপন করেছেন ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ডিভাইস বলে। ‘ক্র্যাশ ডিটেকশন’ আর স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এসওএস বার্তা পাঠানোর ফিচারগুলোসহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, নতুন হার্ডওয়্যার পণ্যকে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার আনুসাঙ্গিক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে কোম্পানিটি।

কিন্তু হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও নকশার বিচারে ডিভাইসগুলোতে নতুন ও চমকপ্রদ কিছুর অনুপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়।

দুই ভাগে বিভক্ত ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ

নতুন আইফোন সিরিজকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করে উপস্থাপন করেছে অ্যাপল। আইফোন ১৪-এর ‘বেসিক’ সংস্করণ দুটির সঙ্গে প্রো মডেল দুটির মূল পার্থক্য ক্যামেরা আর চিপের ক্ষেত্রেই।

নতুন আইফোন, পুরনো মডেলের চিপ

আইফোন ১৪ এবং ১৪ প্লাসের মধ্যে পার্থক্য কেবল ডিসপ্লের আকারে, আইফোন ১৪-এর ডিসপ্লে ৬.১ ইঞ্চির; ১৪ প্লাসের স্ক্রিনের আকার ৬.৭ ইঞ্চি। উভয় ডিভাইসেই গত বছরের আইফোন ১৩ প্রো মডেলের এ১৫ বায়োনিক চিপ রেখেছে অ্যাপল। তবে আইফোন ১৪’র এ১৫ বায়োনিক চিপে জিপিইউ কোরের সংখ্যা চারটি থেকে বেড়ে হয়েছে পাঁচটি।

আইফোন ১৩’র পেছনে ‘ডুয়াল ক্যামেরা সিস্টেম’ রেখেছিল অ্যাপল, মূল ক্যামেরা ছিল ১২ মেগাপিক্সেলের। ছিল আল্ট্রা-ওয়াইড ও ট্রুথ ডেপথ ফ্রন্ট ক্যামেরা। আইফোন ১৪-এর বেলায় আইফোন ক্যামেরা সিস্টেমকে চিহ্নিত করছে ‘অ্যাডভান্সড ডুয়াল ক্যামেরা সিস্টেম’ বলে। আগের ১২ মেগাপিক্সেলের মূল ক্যামেরাই আছে এতে, কিন্তু ট্রুডেপথ ফ্রন্ট ক্যামেরায় যোগ হয়েছে অটোফোকাস ফিচার।

আইফোন ১৩-তে একবারের চার্জে একটানা ১৯ ঘণ্টা ভিডিও দেখা যায় বলে নিজস্ব ওয়েবসাইটে বলে রেখেছে অ্যাপল। আইফোন ১৪-এর ক্ষেত্রে এই ভিডিও প্লেব্যাক টাইম বেড়েছে ২৬ ঘণ্টায়।

এ ছাড়া, আইফোন ১৩ এবং ১৪ উভয় সিরিজেই ফেইস আইডি আর ৫জি সংযোগ সুবিধা আছে।

বাজির ঘোড়া কি তবে ‘প্রো’ মডেলগুলো?

নতুন আইফোনের দুটি নতুন ‘প্রো’ মডেল দেখিয়েছে অ্যাপল; আইফোন ১৪ প্রো এবং আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স।

‘প্রো’ মডেল দুটিতে এ১৬ বায়োনিক চিপ রেখেছে কোম্পানিটি। কিন্তু অ্যাপলের নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, অন্তত কোর আর নিউরাল ইঞ্জিনের সংখ্যার হিসেবে এ১৫ আর এ১৬-এর মধ্যে নাম বাদে কোনো পার্থক্যই নেই।

অন্যান্য মডেলগুলোর সঙ্গে আইফোন ১৪ প্রো মডেল দুটির লক্ষ্যণীয় পার্থক্য এর মূল ক্যামেরা এবং ডিসপ্লেতেই। ‘অলওয়েজ অন ডিসপ্লে’ ফিচার যোগ হয়েছে প্রো মডেল দুটিতে।

এ ছাড়াও নোটিফিকেশন দেখানোর নতুন ফিচারটিকে ‘ডায়নামিক আইল্যান্ড’ বলে ডাকছে অ্যাপল। তবে, কাজের বিচারে ফিচারটি কোনো নতুনত্ব যোগ করছে নাকি কেবল নোটিফিকেশনের আকারের ভিত্তিতে কেবল বাবল ছোট-বড় হচ্ছে সে উত্তর সম্ভবত একজন ব্যবরকারীই দিতে পারবেন।

সবচেয়ে বড় হ্যার্ডওয়্যার আপডেট যখন ক্যামেরা

আইফোন ১৩ এবং আইফোন ১৪-এর মডেলগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্সের সবচেয়ে বড় হার্ডওয়্যার আপডেট এসেছে সম্ভবত এর ক্যামেরা সেন্সরে। প্রো মডেল দুটির মূল ক্যামেরায় ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা রেখেছে অ্যাপল। কিন্তু অ্যাপারচারের হিসেবে ১৪-এর প্রো মডেলের চেয়ে বেসিক মডেল এবং আইফোন ১৩-ই সম্ভবত বেশি কার্যক্ষম।

ক্র্যাশ ডিটেকশন

নতুন আইফোন এবং অ্যাপল ওয়াচগুলোতে নতুন সংযোজন হিসেবে ‘ক্র্যাশ ডিটেকশন’ ফিচার যোগ করেছে অ্যাপল। ব্যবহারকারী গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে অ্যাক্সিস জাইরোস্কোপ, জি-ফোর্স অ্যাক্সেলেরোমিটার, জিপিএস সেন্সর আর মাইক্রোফোন ব্যবহার করে দুর্ঘটনা চিহ্নিত করতে পারবে ফিচারটি। স্বয়ংক্রিয়ভাবে খবর চলে যাবে জরুরী সেবাদাতা এবং ব্যবহারকারীর কাছের মানুষদের কাছে।