রোববার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু করতে গিয়ে জটিলতা ধরা পড়ে। ত্রুটি সারিয়ে লেনদেন শুরু করতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায়।
Published : 05 Jan 2025, 12:41 PM
শেয়ার কেনাবেচায় ব্যবহৃত সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সপ্তাহের প্রথম দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর।
রোববার সকাল ১০টায় নির্ধারিত সময়ে লেনদেন শুরু করতে গিয়ে জটিলতা ধরা পড়ে। ত্রুটি সারিয়ে লেনদেন শুরু করতে বেলা সাড়ে ১১টা বেজে যায়।
প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে এ বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১১ পয়েন্ট কমে যায়। ওই সময়ে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়।
গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইক্স ছিল ৫১৯৯ পয়েন্টের ঘরে। সেদিন সূচক কমে প্রায় ১৯ পয়েন্ট। হাতবদল হয় ৩১৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার।
ব্রোকারেজ হাউজ ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার সকালে সব প্রস্তুতি নিয়েও তারা সার্ভারে প্রবেশ করতে পারছিলেন না। পরে ডিএসই থেকে ইমেইলের মাধ্যমে তাদের জটিলতার কথা জানানো হয়।
“আমরা ১০টার অনেক পরে একটি চিঠি পাই। এর আগেই ডিএসইর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে আমাদের আইটি টিম। আমাদের জানানো হয়, কারগিরি ত্রুটির কারণে অনিবার্য কারণবশত ট্রেড সাসপেন্ড করা হয়েছে। সমস্যার সমাধান হলে ট্রেড পুনরায় শুরু হবে।”
লেনদেন শুরু হওয়ার পর ডিএসইর জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কারিগরি ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। আইটি টিম কাজ করে সমাধান করায় লেনদেন শুরু হয়েছে। কেন এরকম হল তার ব্যখ্যা বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হবে।”
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ফ্লেক্সট্রেডের যে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যার দিয়ে ডিএসইর লেনদেন হয়, সেখানেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
ডিমিউচু্য়ালাইজেশনের পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নাসডাক ওএমএক্স ও ফ্লেক্সট্রেড সিস্টেমসের সহযোগিতায় অটোমেটেড ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম চালু করে ডিএসই।
নাসডাক ওএমএক্স সরবরাহ করে ম্যাচিং ইঞ্জিন ও ফ্লেক্সট্রেড সরবরাহ করে অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওএমএস)। গত দশ বছরে ওই সফটওয়্যার দিয়েই ডিএসইর লেনদেন চলছে।
পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হওয়ার পরে মোট লেনদেনের তথ্য ‘ওএমএস’ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যায় ব্রোকারেজ হাউজগুলো। ওই তথ্য দিয়ে ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট সম্পন্ন করা হয় সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মাধ্যমে।
এরপর বিনিয়োগকারীর কেনাবেচা হওয়া শেয়ার ও নগদ টাকার তথ্য পুনরায় সফটওয়্যারে হালনাগাদ করতে পারে ব্রোকারেজ হাউজ, যাতে পরের দিনের লেনদেন সম্ভব হয়।
সফটওয়্যার জটিলতায় এর আগেও বেশ কয়েকবার ডিএসইর লেনদেন বিঘ্নিত হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অগাস্টে ‘ফ্লেক্সট্রেড’ এ ক্রুটির কারণে আগের দিনের শেয়ার কেনাবেচার নিষ্পত্তি হতে পরদিন ভোর হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ে ব্রোকারেজ হাউসগুলো।
ওই বছর জুলাই মাসে পরপর দুই দিন সার্ভার ত্রুটিতে লেনদেন বিভ্রাটে পড়ে ডিএসই। সমস্যা সমাধান শেষে ডিএসই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, লেনদেন সফটওয়্যার ‘ওএমএস’ এ নতুন সেবা মডিউল সংযোজন করায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
এর আগেও ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে এক সপ্তাহে পরপর দুবার কারিগরি ত্রুটির মধ্যে পড়েছিল ডিএসই।
ঘন ঘন কারিগরি ত্রুটির কারণ খতিয়ে দেখতে ডিএসইর পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একাধিকবার তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।