ঘরের মাঠে দলের কাছে কাবরেরার চাওয়া

নিজেদের আঙিনায় বাংলাদেশ দলকে আরও শক্তিশালী মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2024, 02:07 PM
Updated : 23 March 2024, 02:07 PM

বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত মোটে একটি পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ, লেবাননের বিপক্ষে ঘরের মাঠে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে একই ভেন্যুতে, সমর্থকদের সামনে মাঠে নামার আগে দলের প্রতি তাই প্রত্যাশাও বেশি থাকবে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরাও দলকে দিলেন সেই বার্তা-প্রত্যাশা পূরণে নিজ আঙিনায় নিজেদেরকে আরও বেশি মেলে ধরতে হবে।

২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ফিরতি লেগে আগামী মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে দুই দল। কুয়েতে প্রথম লেগে ভালো শুরুর পর বিরতির আগ মুহূর্তে হঠাৎ খেই হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের কাছে তারা হেরে যায় ৫-০ গোলে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭-০ গোলের বড় ব্যবধানের হার দিয়ে বাছাই শুরুর পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় লেবাননের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ার পর শেখ মোরসালিনের গোলে সমতায় শেষ করেছিল কাবরেরার দল, খুলেছিল পয়েন্টের খাতা। কুয়েত থেকে ফিরে এ মাঠেই শনিবার বিকালে অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ।

ফিরতি লেগের প্রস্তুতি আর শেষ মুহূর্তের গোছগাছ সেরে নিতে খুব বেশি সময় নেই হাতে। তবে এই অল্প সময়েই প্রথম লেগের ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান এবং তার সমাধান খুঁজে নিতে চান কাবরেরা। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে একশ’র মধ্যে থাকা ফিলিস্তিনের (৯৭তম) বিপক্ষে হঠাৎ খেই হারিয়ে বড় হারের হতাশা আছে ঠিকই, তবে ওই ফলকে ‘বিপর্যয়কর’ মনে করেন না তিনি।

“বিপর্যয়… এটা একটু কঠিন শব্দ, কিন্তু আমাদের কাছে এটা (প্রথম লেগের ফল) এমন বিষয়…আমাদেরও মনে হয়েছিল ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০০-এর মধ্যে থাকা, সবশেষ এশিয়ান কাপের শেষ ষোলোয় খেলা দলের বিপক্ষে এমন কিছু ঘটতে পারে। আমাদের শুরুর ৪০ মিনিট ছিল খুবই ইতিবাচক, যেটা আমরা টেনে নিতে পারিনি, কিন্তু এই পর্যায়ে কেন আমরা ৯০ মিনিট পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারলাম না, তার কারণে খুঁজে বের করতে হবে।”

“বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ২টি গোল হজম করা আমাদের জন্য কঠিন ছিল। সম্ভবত এটা মানসিকভাবে আমাদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল, এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আরও দুই গোল খেলাম, তাতে ম্যাচ শেষ হয়ে গেল। কিন্তু আবারও বলছি, এখন সময় পর্যালোচনার, বিশ্লেষণের ও শেখার। ইতিবাচক দিকগুলো নিতে হবে, নিশ্চিতভাবে কিছু বিষয় অ্যাডজাস্ট করতে হবে। ফিরতি লেগে নিজেদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, চাহিদা আরও বেশি হতে হবে। আমরা জানি, নিজেদের মাঠে আমরা আরও বেশি শক্তিশালী।”

প্রথম লেগে রক্ষণের ভুলে প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুই গোল হজম করে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে সোহেল রানা জুনিয়র নষ্ট করেন গোলের সুবর্ণ সুযোগ। তবে ওই ব্যর্থতা নিয়ে পড়ে থাকতে চান না কাবরেরা।

“(কুয়েতের ম্যাচে) হাই লাইন ডিফেন্ডিংয়ের চেষ্টা করেছিলাম আমরা… এই শেপে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আগ্রাসী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের, যেভাবে আসলে আমরা প্রথমার্ধে খেলতে পেরেছিলাম, কয়েকটি ভালো সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। হয়তো, ওগুলো হলে ম্যাচও ভিন্নরকম হতে পারত। শেষ পর্যন্ত আমরা রক্ষণে ভুগেছি, ফিলিস্তিন শক্তিশালী দল, ভালো খেলোয়াড়, গতিময় খেলোয়াড়, শক্তিশালী (পাওয়ারফুল) খেলোয়াড় আছে তাদের। আবারও বলছি, এখন সময় পুনর্গঠনের এবং দ্বিতীয় লেগের জন্য প্রস্তুত হওয়ার।”

চোটের কারণে কাজী তারিক রায়হানের অনুপস্থিতির প্রভাব রক্ষণে পড়েছে। তপু বর্মন, বিশ্বনাথ ঘোষরা পারেননি দৃঢ়তা ধরে রাখতে। তবে কাবরেরার মনে হচ্ছে, ব্যবধান মূলত দুই দলের মানের।

“আমি ডিফেন্ডারদের নিয়ে খুশি। জটিল পরিস্থিতিতে তারা নিজেদের কাজ খুব ভালোভাবে করেছে। আমরা একটু হাই লাইন ডিফেন্ডিং করেছি, যাতে করে ফিলিস্তিনের ক্রসের জায়গা সংকুচিত করতে পারি, কিন্তু সেটা আমরা পুরো ম্যাচজুড়ে করতে পারিনি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পেরেছি। আসলে বিষয়টা আমাদের দুর্বলতার নয়, তার চেয়ে বরং ফিলিস্তিনের মানের। ছেলেদের প্রতি আমার পুরো আত্মবিশ্বাস আছে। কোনো অভিযোগ নেই তাদের প্রতি।”

“তারিকের অনুপস্থিতি…এটা আমার কাছে বলার মতো কোনো পয়েন্ট নয়। কেননা, শুরু থেকেই আমরা জানতাম সে খেলতে পারবে না। সে অনুযায়ী আমরা সবকিছু গুছিয়েছিলাম। তারিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, কিন্তু স্কোয়াডে অন্য যারা আছে, তার জায়গা পূরণের সামর্থ্য তাদের আছে। আবারও বলছি, রক্ষণভাগ নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই।”