প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যাম হটস্পারের মাঠে সবশেষ আট ম্যাচে জয় নেই, এর শেষ তিনটিতে সঙ্গী হারের বিষাদ। ব্যর্থতার এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু থেকে চাপ বাড়াল আর্সেনাল। খেই হারিয়ে ভুগল টটেনহ্যাম; দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া চেষ্টা করেও খুঁজে পেল না ঘুরে দাঁড়ানোর পথ। তাদের মাঠ থেকে অবশেষে দারুণ জয় নিয়ে ফিরল মিকেল আর্তেতার দল।
টটেনহ্যাম হটস্পার্স স্টেডিয়ামে রোববার লিগ ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে আর্সেনালে। শুরু থেকে স্নায়ুর চাপে জবুথবু টটেনহ্যাম আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মার্টিন ওডেগোর।
আসরে গত ম্যাচে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের কাছে পয়েন্ট খোয়ানো আর্সেনাল ফের জয়ে ফিরল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে এগিয়ে গেল ৮ পয়েন্টে।
চাপ যেন শুরুতেই পেয়ে বসে টটেনহ্যামকে। সপ্তম মিনিটে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন গোলরক্ষক উগো লরিস। মার্টিন ওডেগোরের চার্জে বল তাড়াহুড়ো করে ক্লিয়ার করতে ডান দিকে থাকা ক্লেঁমো লংলেকে বাড়ান তিনি, কিন্তু লংলেও ক্লিয়ার করতে পারেননি। পরে বল গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি হয়ে পেয়ে যান এডি এনকেটিয়া, কিন্তু ওয়ান-অন-ওয়ানে এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড মারেন গোলরক্ষকের গায়ে।
চতুর্দশ মিনিটে ঠিকই আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় আর্সেনাল। সতীর্থের লং বল ধরে ঠাণ্ডা মাথায় বক্সে ঢুকে পড়েন বুকায়ো সাকা। এরপর বাইলাইনের একটু উপর থেকে বক্সে বল বাড়াতে শট নিয়েছিলেন তিনি। সামনে থাকা রায়ান সেসেগননের গায়ে লেগে কিছুটা দিক পাল্টে লরিসের হাত হয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে।
কোণঠাসা টটেনহ্যাম প্রথমার্ধে একবারই শট লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়। অষ্টাদশ মিনিটে সেসেগননের পাসে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সন হিউং-মিন, কিন্তু তার জোরাল শট কোনো মতে পা দিয়ে আটকে আর্সেনালের ত্রাতা গোলরক্ষক অ্যারন র্যামসডেল।
২৫তম মিনিটে বক্সের বেশ বাইরে থেকে টমাস পার্টির বুলেট গতির ভলি পোস্টে প্রতিহত হয়ে। তবে প্রতিপক্ষের রক্ষণে চাপ ধরে রেখে ৩৬তম মিনিটে ঠিকই ব্যবধান দ্বিগুণ করে আর্সেনাল। প্রিমিয়ার লিগে নভেম্বর-ডিসেম্বরের সেরা খেলোয়াড় ওডেগোরের ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া নিচু জোরাল শটে ঝাঁপিয়ে পড়েও নাগাল পাননি লরিস।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে হ্যারি কেইনের ফ্লিক হেড র্যামসডেল ফেরালে চালকের আসনে থেকে বিরতিতে যায় আর্সেনাল।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া টটেনহ্যাম একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে থাকে। কিন্তু ৫০তম মিনিটে কেইনের শট ফিস্ট করে, একটু পর সেসেগননের শট পা দিয়ে আটকে দেন র্যামসডেল।
৬৯তম মিনিটে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ আসে আর্সেনালের সামনে। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে জাকার বাড়ানো পাস ধরে লরিসের গায়ে মেরে নষ্ট করেন এনকেটিয়া।
একটু পর আক্রমণের গতি বাড়াতে ম্যাট ডোহার্টিকে তুলে রিশার্লিসনকে নামান স্পার্স কোচ আন্তোনিও কন্তে। ৮১তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের কোনাকুনি শট জমে যায় র্যামসডেলের গ্লাভসে। বাকিটা সময়ে রিশার্লিসন কিংবা কেইন কেউই পারেননি আর্সেনালের জমাট রক্ষণে চিড় ধরাতে।
১৮ ম্যাচে আর্সেনালের পয়েন্ট হলো ৪৭। দুইয়ে ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ৩৯।
নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পয়েন্ট সমান ৩৮, গোল ব্যবধানে এগিয়ে তিনে নিউক্যাসল। তারা অবশ্য এক ম্যাচ বেশি খেলেছে।
নিউক্যাসলের সমান ১৯ ম্যাচ খেলা টটেনহ্যাম ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে পঞ্চম স্থানে।