শেষ মুহূর্তের গোলে পিএসজির জয় হাতছাড়া

লিগ ওয়ানে টানা দুই ম্যাচে জয়শূন্য থাকল ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 09:52 PM
Updated : 29 Jan 2023, 09:52 PM

শেষের ত্রিশ মিনিট একজন কম নিয়ে খেলেও জয়ের পথেই ছিল পিএসজি। কিন্তু অন্তিম সময়ে তালগোল পাকিয়ে পয়েন্ট হারাল ক্রিস্তফ গালতিয়ের দল। চমৎকার ফুটবল উপহার দিয়ে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরল রাঁস। 

রোববার রাতে লিগ ওয়ানের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দলকে এগিয়ে নেন নেইমার। যোগ করা সময়ের চমৎকার ফিনিশিংয়ে সমতা ফেরান ফ্লোরিয়ান ব্যালোগান। 

লিগে টানা দুই ম্যাচে জয়শূন্য রইল পিএসজি। আগের ম্যাচে রেনের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল তারা। সবশেষ চার ম্যাচে তাদের জয় কেবল একটি!

বল দখল ও আক্রমণে এগিয়ে ছিল পিএসজি। কিন্তু গোলের জন্য শট বেশি নিয়েছিল রাঁস। তাদের ১২ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। স্বাগতিকরা আট শটের পাঁচটি রাখতে পারে লক্ষ্যে।

প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম মিনিটেই দারুণ এক উপহার পেয়ে যাচ্ছিল রাঁস। পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মার দুর্বল শট মাঝপথে পেয়ে যান মার্শাল মুনেটসি। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এই মিডফিল্ডার।

তৃতীয় মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নেয় পিএসজি। ডি-বক্সে আশরাফ হাকিমির কাছ থেকে বল পেয়ে ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন লিওনেল মেসি।

বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো শুরুর একাদশে মেসি-নেইমার-এমবাপেকে পেলেও আক্রমণে তেমন ভীতি ছড়াতে পারেনি পিএসজি। উল্টো প্রতি-আক্রমণে তাদের কাঁপিয়ে দেয় রাঁস।

নবম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে শট নিয়ে একটুর জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি রাঁসের ইংলিশ ফরোয়ার্ড ফ্লোরিয়ান ব্যালোগান। পাঁচ মিনিট পর জুনিয়া ইতোর বাঁকানো শট পিএসজির একজনের গায়ে লেগে বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

সপ্তদশ মিনিটে দুর্দান্ত সেভে পিএসজির ত্রাতা দোন্নারুম্মা। দূরের পোস্টে মুনেটসির শট দারুণ দক্ষতায় ব্যর্থ করে দেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক। সাত মিনিট পর আবারও রাঁসকে হতাশ করেন তিনি।  

ফরাসি কাপে পি দে কেসেলের বিপক্ষে পাঁচ গোলের অনন্য কীর্তি গড়া এমবাপে যেন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। কার্যকর কিছু করতে পারছিলেন না মেসি ও নেইমারও। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এই দুই জনের নৈপুণ্যেই এগিয়ে যায় পিএসজি।

৫১তম মিনিটে বল পেয়ে, ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে এগিয়ে যান মেসি। তার শট সতীর্থ ডিফেন্ডার হুয়ান বেরনাতের পায়ে লেগে একটু দিক পাল্টালে বল পেয়ে যান নেইমার। দারুণ দক্ষতায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, কাছেই থাকা গোলরক্ষকের মরিয়া চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে জালে পাঠান তিনি।

মার্কো ভেরাত্তি লাল কার্ড দেখলে ৫৯তম মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি। মার্কিনিয়োসের একটি চ্যালেঞ্জের জন্য পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। তবে এর আগেই ইতোকে ফাউল করেন বিরতির সময় বদলি নামা ভেরাত্তি। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি, বাতিল করেন পেনাল্টি।

৬২তম মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ প্রায় হয়েই যাচ্ছিল। এমবাপের শট কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন রাঁস গোলরক্ষক। পরের মিনিটে কর্নার থেকে সের্হিও রামোসের হেড ফেরে ক্রসবারে লেগে। ফিরতি বলেই চেষ্টা করেন অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার। কিন্তু দুইবার গোললাইন থেকে তার চেষ্টা ফিরিয়ে দেন দুই জন।

৬৫তম মিনিটে জালে বল পাঠান হাকিমি। তবে তিনি অফসাইডে থাকায় গোল পাননি।

৮২তম পা বাড়িয়ে এমবাপের শট ঠেকিয়ে দেন রাঁস গোলরক্ষক। কয়েক সেকেন্ড পর পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মেসি।

শেষ দিকে প্রবলভাবে চেপে ধরে রাঁস। তবে রক্ষণ জমাট রেখে তিন পয়েন্টের পথেই ছিল পিএসজি। শেষ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে দোন্নারুম্মা বল পাঠান মাঝ মাঠে। পিএসজির একজন হেড করে বল দিতে চেয়েছিলেন রেনাতো সানচেসকে। তার আগেই বল পেয়ে যান কামোরি ডুম্বিয়া। তিনি কিছুটা এগিয়ে গিয়ে খুঁজে নেন ব্যালোগানকে। গোলরক্ষককে কাটিয়ে বাকিটা সারেন আর্সেনাল থেকে ধারে রাঁসে খেলা এই ফরোয়ার্ড।

প্রবল হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়া পিএসজি ২০ ম্যাচে ১৫ জয় ও তিন ড্রয়ে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষেই। ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে লঁস।