বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের কেলেংকারি নিয়ে হওয়া তদন্তে তাকে ডাকাই হয়নি বলে জানালেন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ।
Published : 29 Jul 2023, 08:20 PM
যার কেলেংকারির প্রেক্ষাপটে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে), সেই আবু নাঈম সোহাগকে কোনো জিজ্ঞাসাবাদই করেনি কমিটি! অথচ তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ, রোববার আরেকবার ‘রিভাইজ’ দিয়ে তা নির্বাহী কমিটির কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানালেন কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ।
বাফুফে ভবনে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বৈঠকে বসে তদন্ত কমিটি। তাদের দীর্ঘ আলোচনা শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টার পরে। এরপর গণমাধ্যমকে নাবিল জানান, তদন্ত কমিটির কাজ প্রায় শেষ। বরাবরের মতো তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাননি বাফুফের সহ-সভাপতির দায়িত্বেও থাকা নাবিল।
“আজকে আমাদের দীর্ঘ সভা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত যা ছিল, তা আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের লক্ষ্য আগামীকাল এই প্রতিবেদন শেষ করার; আজ সে অনুযায়ী কাজ করেছি। আগামীকাল জমা দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের। আজকে আমাদের কাজ ছিল এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, সব তথ্যগুলো সন্নিবেশিত করা, তথ্যগুলো আরও ভালোভাবে পর্যালোচনা করে সন্নিবেশিত করা।”
“ফিফার যে অভিযোগগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে আমাদের যে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো আছে, সেখানকার কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, নথিপত্র যেগুলো ছিল, সেগুলো পর্যালোচনা করেছি, আরও গভীরে গিয়ে সেগুলো দেখেছি, কোথায় কোথায় আমাদের ঘাটতি ছিল, দুর্বলতাগুলো ছিল, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি, সে কাজেরই শেষ আজ আমরা টানছি। কাল আমরা আবারও মিটিংয়ে বসব, তারপর চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিব। যে কাজটি আমরা করেছি, কাল আবার রিভাইজ করব, এরপর জমা দিব।”
তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে ‘সন্তুষ্টি’ জানালেও কত জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, সে প্রশ্নের উত্তর দেননি নাবিল। এই তদন্ত রিপোর্ট বাফুফের সামনের পথচলায় ‘মাইলফলক’ হয়ে থাকবে বলেও মনে করেন তিনি। সোহাগকে তদন্তে না ডাকার কারণ হিসেবে জানালেন ফিফার নিষেধাজ্ঞার কথা।
“(কত জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি) সেগুলো আমাদের রিপোর্টেই আছে। নামগুলো দেওয়া আছে। যে প্রক্রিয়ায় কার্যক্রম হয়েছে আমি সন্তুষ্ট। (সোহাগকে) না, ডাকা হয়নি, তার সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি। তাকে যেহেতু ফিফা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবলের আর কোনো সংযোগ নেই।”
আর্থিক কেলেংকারির অভিযোগে গত এপ্রিলে বাফুফের সেসময়কার সাধারণ সম্পাদক সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা। ওই কেলেংকারি খতিয়ে দেখতে ১৭ এপ্রিল নাবিলকে চেয়ারম্যান করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে বাফুফে। কমিটি গঠনের কদিন পরই আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহি পদত্যাগ করেন, বাকিদের নিয়ে কাজ চালিয়েছে কমিটি।
গত ৭ মে থেকে তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কাছ থেকে জুলাই পর্যন্ত সময় চেয়ে নেওয়ার কথা। অবশেষে শনিবার তদন্ত কার্যক্রম শেষ এবং প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা জানালেন কমিটির চেয়ারম্যান।
ফিফার ফান্ডের অপব্যবহারের কারণে সোহাগকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় বলে ফিফার বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বাফুফেকে দেওয়া ফিফার ফান্ডের খরচের হিসাব দিতে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। ওই সময় সোহাগের মতো হিসাবরক্ষক আবু হোসেন ও ম্যানেজার অপারেশন্স মিজানুর রহমানের যোগসাজশের গুঞ্জন উঠেছিল। দুজনেই পদত্যাগপত্র জমা দিলে তা গুঞ্জনে যোগ করে নতুন মাত্রা। গত ২৩ জুলাই দুজনের পদত্যাগপত্র ‘শর্তসাপেক্ষে’ গ্রহণ করে বাফুফে।