অনেক সুযোগ হারিয়ে বায়ার্নের মাঠে বার্সার হার

টানা দুই জয়ে গ্রুপের শীর্ষে উঠে গেল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2022, 08:53 PM
Updated : 13 Sept 2022, 08:53 PM

বায়ার্ন মিউনিখ আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও সুযোগ বেশি তৈরি করল বার্সেলোনা। প্রথমার্ধেই পাঁচটি দারুণ সুযোগ পেলেন ছন্দে থাকা রবের্ত লেভানদোভস্কি। কিন্তু সাবেক দলের বিপক্ষে পেলেন না জালের দেখা। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধে চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে শাভি এরনান্দেসের দলকে হতাশায় ডোবাল জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় লুকাস এরনঁদেজ বায়ার্নকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লেরয় সানে।

প্রথম কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচে জয়ের কীর্তি গড়লেন নাগেলসমান। গত মৌসুমে গ্রুপ পর্বে দুইবারই বায়ার্ন জিতেছিল ৩-০ গোলে।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ৫ ম্যাচে ২০ গোল করে বায়ার্নের বিপক্ষে খেলতে এসেছিল শাভির দল। আত্মবিশ্বাসী ছিল আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা থেকে প্রথম জয় নিয়ে ফেরার। কিন্তু হলো না, স্প্যানিশ দলটি পেল মৌসুমে প্রথম হারের তেতো স্বাদ।

বল দখলে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। এগিয়ে ছিল গোলের জন্য শট করার দিক থেকেও। কাতালান ক্লাবটির ১৮ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। ৪৭ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা বায়ার্নের ১৩ শটের চারটি লক্ষ্যে, এর দুটি যায় জালে।

বার্সেলোনার বিপক্ষে আগের তিন ম্যাচে ১৪ গোল করা বায়ার্ন শুরুতেই আক্রমণাত্মক ফুটবলে চেপে ধরার চেষ্টা করে সফরকারীদের। আলফুঁস ডাভিসের গতি ভীতি ছড়ায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে। কিন্তু প্রবল চাপের পরও গোলের তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।

বরং নবম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। মার্সেল সাবিৎজারকে এড়িয়ে রবের্ত লেভানদোভস্কি খুঁজে নেন রাফিনিয়াকে। তার কাছ থেকে গাভির পা ঘুরে বল পান পেদ্রি। তার নিচু শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন বায়ার্ন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার।

ম্যাচের আগে মুলারকে মজা করে সাদিও মানে বলেছিলেন, ভুল করে যেন লেভানদোভস্কিকে পাস দিয়ো না। চতুর্দশ মিনিটে সেই ভুলটাই করে বসলেন নয়ার! দুর্বল শটে বল দেন সাবেক সতীর্থ ও দাইয়ু উপামিকানোর মাঝামাঝি। ছুটে এসে আগে বল স্পর্শ করেন লেভানদোভস্কি, তবে উপামিকানোর প্রবল বাধায় ঠিক মতো শট নিতে পারেননি পোলিশ স্ট্রাইকার। বেঁচে যায় বায়ার্ন।

Also Read: আয়াক্সের বিপক্ষে লিভারপুলের নাটকীয় জয়

অষ্টাদশ মিনিটে আবার সুযোগ আসে লেভানদোভস্কির সামনে। উসমান দেম্বেলের কাছ থেকে বল পেয়ে গাভি খুঁজে নেন লেভানদোভস্কিকে। কিন্তু নয়ারকে একা পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। বুলেট গতির ভলি পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বাইরে।

তিন মিনিট পর আবার দলকে হতাশ করেন লেভানদোভস্কি। মার্কোস আলোনসোর ক্রসে তার হেড ঠেকিয়ে দেন নয়ার। তবে বিপদ কাটেনি তখনও। রাফিনিয়ার শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ২৬তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের দারুণ বাঁকানো শট বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

৩০তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে চেষ্টা করেন সাবিৎজার, তবে রাখতে পারেননি লক্ষ্যে। ১০ মিনিটে পর বাইলাইন থেকে দারুণ ক্রসে সুযোগ তৈরি করেন জামাল মুসিয়ালা। কিন্তু একই সঙ্গে শট নেওয়ার চেষ্টায় তালগোল পাকিয়ে পারেননি মুলার ও মানে।

৪৩তম মিনিটে দুর্দান্ত ব্লকে লেভানদোভস্কিকে রুখে দেন নুসায়ার মাজরাউই। ফরাসি ডিফেন্ডার বাঁজামাঁ পাভার্দের চোটে ২১তম মিনিটে বদলি নামেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের কিক অফের পরেই আক্রমণে যায় বার্সেলোনা। রাফিনিয়ার বুলেট গতির শট একটুর জন্য ঠিকানা খুঁজে পায়নি।

৫০তম মিনিটে বায়ার্নের বদলি খেলোয়াড় লেয়ন গোরেটস্কার শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। সেই কর্নার থেকেই হেডে বায়ার্নকে এগিয়ে নেন এরনঁদেজ।

গোলের ধাক্কা হজম করার আগেই আরও পিছিয়ে পড়ে বার্সেলোনা। ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে মুসিয়ালা খুঁজে নেন সানেকে। বাকিটা অনায়াসে সারেন জার্মান ফরোয়ার্ড।

৬৩তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন পেদ্রি। লেভানদোভস্কির চমৎকার পাস যখন পান তিনি, সামনে ছিলেন কেবল বায়ার্ন গোলরক্ষক নয়ার। তার শরীর ছুঁয়ে পোস্টে লেগে ফেরে বল।

এরপর খেলার গতি মন্থর হয়ে যায়। সুযোগ তৈরি করতে ভুগতে থাকে দুই দলই। ৮৯তম মিনিটে দারুণ গতিতে ছুটে গিয়ে বাইলাইন থেকে কাট ব্যাক করেন ফেররান তরেস। কিন্তু ডি-বক্সে ছিলেন না বার্সেলোনার কেউই!

টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বায়ার্ন উঠে গেল শীর্ষে। গ্রুপের অন্য ম্যাচে প্লাজেনকে ২-০ গোলে হারানো ইন্টার মিলান আছে তিন নম্বরে। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থেকে দুই নম্বরে বার্সেলোনা।

‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে ঘরের মাঠে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ২-০ গোলে হারিয়েছে স্পোর্টিং লিসবন। অন্য ম্যাচে আনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছে মার্সেই।