‘জাদুকরি রাতে’ আর্সেনালের ১৪ বছরের খরা কাটানোর উচ্ছ্বাস

২০১০ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে বাঁধানহারা আনন্দে মেতে উঠছে আর্সেনাল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2024, 05:20 AM
Updated : 13 March 2024, 05:20 AM

বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে গালেনোর শট ঠেকিয়েই দু হাত প্রসারিত করে ছুটলেন দাভিদ রায়া। মাঠের মাঝ থেকে তার দিকে ছুটে এলেন সতীর্থরাও। বাঁধনহারা উদযাপনে মেতে উঠলেন সবাই। এই জার্সিতে এমন স্বাদ যে তারা আগে পাননি কখনোই! ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল আর্সেনাল। কোচ মিকেল আর্তেতা, টাইব্রেকারে জয়ের নায়ক গোলকিপার দাভিদ রায়া, সবার কণ্ঠেই অসাধারণ প্রাপ্তির প্রতিধ্বনি। 

সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দুর্দান্ত ফর্মে আছে আর্সেনাল। সবশেষ ৮টি ম্যাচ টানা জিতে এখন তারা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বাস্তবতাই আলাদা। সেটা আগেও যেমন টের পেয়েছে আর্সেনাল, উপলব্ধি করতে পেরেছে এবারও। 

ইউরোপ সেরার মঞ্চে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে পোর্তোর মাঠে গিয়ে হেরে আসে তারা ১-০ গোলে। ঘরের মাঠে মঙ্গলবার দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধে তারা সেই গোল শোধ করে দেয়। কিন্তু পোর্তোর প্রতিরোধ ভাঙতে পারেনি আর। দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। 

সেখানে আর্সেনালের নায়ক রায়া। এই মৌসুমে ধারে খেলতে আসা গোলকিপার দুটি শট ঠেকিয়ে দেন। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের জয়ে শেষ আটে পৌঁছে যায় আর্সেনাল। 

সবশেষ ২০১০ সালে পোর্তোকে হারিয়েই এই স্বাদ পেয়েছিল ইংলিশ ক্লাবটি। এরপর টানা সাত মৌসুমে শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে যায় তারা, পরে ছয় মৌসুম তো খেলতেই পারেনি এই আসরে। এবার কেটে গেল দীর্ঘ সেই খরা।

পোর্তোর বাধা পেরিয়ে জয়ের পর স্বস্তি, উল্লাস, প্রাপ্তি, সবকিছুর প্রতিফলন ফুটে উঠল কোচ আর্তেতার কণ্ঠে। 

“জাদুকরি এক রাত। প্রতিপক্ষ খুব কঠিন হবে বলেই ধারণা ছিল আমাদের। ওদের বিপক্ষে মোমেন্টাম তৈরি করা কঠিন এবং সেই কৃতিত্ব অবশ্যই পোর্তোকে দিতে হবে।” 

“গত ১৪ বছরে ক্লাব যা করতে পারেনি, এই ছেলেদের তা করতে পারাই বলে দিচ্ছে, কাজটা কতটা কঠিন ছিল। জয়ের জন্য যে কোনো কিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত ওরা।” 

জয়ের মূল কৃতিত্ব গোলকিপারকেই দিলেন আর্সেনাল কোচ। 

“আমাদের জন্য এটা বিশাল এক অভিজ্ঞতা। টাইব্রেকারেও এটা ধরে রাখতে হয়েছে আমাদের। গোলকিপার দাভিদ (রায়া) শুরুতে কিছুটা কঠিন সময় কাটিয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য প্রতিজ্ঞা দেখিয়েছে, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এবং পুরস্কার পেয়েছে।”

গোলকিপার রায়ার ক্যারিয়ারের সেরা রাত নিঃসন্দেহে এটিই। ব্রেন্টফোর্ড থেকে এই মৌসুমের জন্য ধারে আর্সেনালে এসেছেন তিনি। ক্যারিয়ারে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার স্বাদ পাচ্ছেন। আর্সেনালের মতো একটি ক্লাবের দীর্ঘ খরা কাটানোর সঙ্গী হতে পেরে ২৮ বছর বয়সী স্প্যানিশ গোলকিপার যেন খুশির জোয়ারে ভাসছিলেন। 

“প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসে এত বছরের মধ্যে প্রথমবার ক্লাবকে কোয়ার্টার-ফাইনালে নিয়ে যাওয়া, এটা ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য অসাধারণ এক অনুভূতি। এই বছর আমরা পেনাল্টি নিয়ে অনেক কাজ করেছি এবং গোলকিপিং কোচের সঙ্গে ও দলের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রমের ফল মিলেছে।”   

“ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে অসাধারণ এক মুহূর্ত। এটা আমাদের কাছে সবকিছু। এই ধরনের মুহূর্তের জন্যই আমরা ফুটবল খেলি এবং আর্সেনালের হয়ে খেলতে পেরে আমি সৌভাগ্যবান।”