শেষ মুহূর্তের গোলে বার্সাকে হারিয়ে দিল রেয়াল

ইলকাই গিনদোয়ানের গোলে শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা।

জোড়া গোল করে আবারও রেয়াল মাদ্রিদের জয়ের নায়ক জুড বেলিংহ্যাম। ছবি: রয়টার্স

প্রতিপক্ষের ছোট্ট ভুল এবং সেই সুযোগে শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার পর চাপ বাড়াল বার্সেলোনা। সুযোগও মিলল; কিন্তু ভাগ্যের ফেরে দুই দফায় পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়াল তাদের সামনে। এরপর পাল্টা চাপ দিল রেয়াল মাদ্রিদ এবং জ্বলে উঠলেন দারুণ ছন্দে থাকা জুড বেলিংহ্যাম। সমতা টানার পর একেবারে শেষ সময়ে আরেকটি গোল করে দলকে এনে দিলেন অসাধারণ এক জয়।

প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার লা লিগার ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে রেয়াল। ম্যাচের শুরুতে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ইলকাই গিনদোয়ান।

প্রথম ৪৫ মিনিটে গোছালো ফুটবল এবং আক্রমণের বিচারে প্রায় একপেশে চাপ ধরে রাখে বার্সেলোনা। অবশ্য সেই তুলনায় খুব বেশি যে সুযোগ তারা তৈরি করতে পেরেছে, তা নয়। বরং অনেকটা সময় দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে থাকা রেয়াল শেষ আধা ঘণ্টাতেই গড়ে দিয়েছে ব্যবধান।      

স্নায়ুচাপের লড়াইয়ে গোলের উদ্দেশ্যে প্রথম শটটি নিতে পারে বার্সেলোনা এবং তা থেকেই এগিয়ে যায় তারা। ষষ্ঠ মিনিটের এই গোলে অবশ্য অনেক বড় দায় আছে রেয়ালের দুর্বল রক্ষণেরও।

ফেররান তরেসের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ছিলেন গিনদোয়ান। ফরোয়ার্ড তরেস যদিও ঠিকমতো ফিরতি পাসটা দিতে পারেননি, তবে প্রতিপক্ষের পায়ে বল যাওয়া আটকাতেই টোকা দিয়ে বসেন রেয়াল মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি। ডি-বক্সে বলের পেছনে ক্ষিপ্রতায় ছুটে যান গিনদোয়ান। স্লাইডে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করে পারেননি ডিফেন্ডার ডাভিড আলাবা, ঠাণ্ডা মাথায় ওয়ান-অন-ওয়ানে লক্ষ্যভেদ করেন জার্মান মিডফিল্ডার।

ষোড়শ মিনিটে নিজেদের ভুলে আবারও গোল খেতে বসেছিল রেয়াল। নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে তারা পজেশন হারালে সতীর্থের পা ঘুরে পেয়ে যান ফেরমিন লোপেস। রেয়ালের ভাগ্য ভালো, বার্সেলোনার তরুণ এই মিডফিল্ডারের শট বাধা পায় পোস্টে।

প্রথমার্ধের অধিকাংশ সময় বল দখলে রেখে পাসিং ফুটবল খেলে বার্সেলোনা। আক্রমণে আধিপত্যও করে তারা, যদিও ওই দুটি ছাড়া উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। এই সময়ে রেয়ালের ফুটবল ছিল ধীরগতির, দূরপাল্লার শটে কয়েক দফায় চেষ্টা করে তারা; তবে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে মুহূর্তের মধ্যে দুটি সুযোগ পায় বার্সেলোনা। প্রথমে ইনিগো মার্তিনেসের হেড পোস্টে লাগার পর ফিরতি বল ধরে শট নেন রোনালদ আরাউহো। এবার দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগা।

এরপর আক্রমণে জোর দেয় রেয়াল। ৬৮তম মিনিটে গোলও পেয়ে যায় তারা। অনেক দূর থেকে বুলেট গতির শটে দলকে সমতায় ফেরান এই মৌসুমেই বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে রেয়ালে আসা বেলিংহ্যাম।

যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন বেলিংহ্যাম। ডান দিক থেকে ডি-বক্সে ক্রস বাড়ান দানি কারভাহাল, লুকা মদ্রিচের পায়ে লেগে বল যায় ছয় গজ বক্সে। সেখানে ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে ডান পায়ের টোকায় জালে বল পাঠান তরুণ ইংলিশ মিডফিল্ডার।

লা লিগায় অভিষেক মৌসুমে ১০ ম্যাচে এই নিয়ে ১০ গোল করলেন বেলিংহ্যাম, তালিকার শীর্ষে আছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেয়ালের জার্সিতে তিন ম্যাচে তার গোল তিনটি।

১১ ম্যাচে ৯ জয় ও ১ ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট লিগ টেবিলের শীর্ষে রেয়াল। সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে জিরোনা।

সমান ম্যাচে ৭ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে তিন নম্বরে।