সিরাত জাহান স্বপ্না যখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়লেন, ম্যাচের তখন ১০ মিনিট। ভারত ম্যাচের জোড়া গোল, ভুটান ম্যাচে ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে গোল করা স্বপ্নার শূন্যতা পূরণের মহাভার নিয়ে মাঠে নামলেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। আর চার মিনিটের মধ্যে দারুণ এক গোল উপহার দিলেন। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও জানালেন, শামসুন্নাহারের ওই গোলই বেঁধে দিয়েছিল ম্যাচের সুর।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে সোমবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। চতুর্দশ মিনিটে চোখ ধাঁধাঁনো ফ্লিকে শামসুন্নাহার জুনিয়র দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর আরও দুই গোলে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার।
গত চার ম্যাচের মতো নেপালের বিপক্ষে ফাইনালেও ছোটনের চাওয়া ছিল দ্রুত গোল পাওয়ার। সেটাই পূরণ করেছেন শামসুন্নাহার। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ কোচকে তাই ম্যাচের ‘টার্নিং পয়েন্ট’ খুঁজে নিতে কোনো সমস্যাই হয়নি।
“আমাদের যে পরিকল্পনা থাকে, সেটা হচ্ছে খেলাটা শুরু করতে হবে ভালোভাবে। শুরুও ভালো হয়েছে এবং তাড়াতাড়ি গোল পাওয়াটা আমি মনে করি আজকের ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।”
৭০তম মিনিটে অনিতা বাসনেতের গোলে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিল নেপাল। ওই পরিস্থিতিতে সাবিনা দলের হাল শক্ত মুঠোয় ধরেছিলেন। অধিনায়ককে তাই পুরস্কার দিতে চান কোচ।
“যখন স্কোরলাইন ২-১ হয়ে গেছে এবং এই পরিমাণ দর্শক যখন মাঠে থাকে…খুবই কঠিন পরিস্থিতি..তখন খেলোয়াড়রাও আমার বার্তা শুনতে পাচ্ছিল না। আমাদের যে নেতা (সাবিনা), এই টুর্নামেন্টের বেস্ট লিডার। সে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছে, সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছে, আমি মনে করি আমারও সাবিনাকে একটা পুরস্কার দেওয়া উচিত।”
এতদিনের পরিশ্রমের ফল পেয়ে ছোটন এতটাই খুশি যে আজ রাতে ঘুম হবে না বলে জানালেন তিনি! এত প্রাপ্তির ফাঁকে আগামীর লক্ষ্যটা জানাতেও ভোলেননি ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ।
“পাকিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত আমার ঘুম হয়নি। এরপর ভালো ঘুম হয়েছে। কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে ঘুম নাও আসতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, এবার সেন্ট্রাল এশিয়ায় ভালো করাই লক্ষ্য।”