চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
সালসবুর্ককে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পয়েন্ট টেবিলে বড় লাফ দিল কার্লো আনচেলত্তির দল।
Published : 23 Jan 2025, 03:56 AM
নিজেদের গুছিয়ে নিতে যা একটু সময় লাগল রেয়াল মাদ্রিদের। গোলের পথ খুলে যেতেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল তারা। রদ্রিগোর দুর্দান্ত নৈপুণ্যে প্রথমার্ধেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিল দলটি। পরে সালসবুর্কের জালে গোল উৎসব করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টেবিলে বড় লাফ দিল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার রাতে ৫-১ গোলে জিতেছে রেয়াল।
রদ্রিগোর জোড়া গোলের পর দুবার জালে বল পাঠান ভিনিসিউস জুনিয়রও। মাঝে একটি গোল করেন কিলিয়ান এমবাপে।
সরাসরি শেষ ষোলোয় জায়গা পাওয়ার আশা আগেই ফিকে হয়ে গেছে রেয়ালের। শেষ রাউন্ড পর্যন্ত সামান্য সম্ভাবনাটুকুও বাঁচিয়ে রাখতে এখানে কেবল জিতলেই হতো না তাদের, ব্যবধানটাও করতে হতো বড়। সেই লক্ষ্য ভালোভাবেই পূরণ করল ১৫ বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
দারুণ এই জয়ে সাত ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে এক লাফে ছয় ধাপ এগিয়ে ১৬তম স্থানে উঠেছে রেয়াল। সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ওপরে জার্মানির দুই ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
খুব কঠিন ও অনেক জটিল হিসাব-নিকাশ সামনে রেখে আগামী বুধবার প্রথম পর্বের শেষ রাউন্ডে মাঠে নামবে এমবাপে-ভিনিসিউসরা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ব্রেস্ত। ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ফরাসি ক্লাবটি বড় কোনো নাম না হলেও, এবারের আসরে চার জয় ও এক ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৩ নম্বরে আছে তারা।
ম্যাচের শুরুটা যদিও হয় বেশ অপ্রত্যাশিত। রেকর্ড ও টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের রক্ষণে প্রতি-আক্রমণে ভীতি ছড়াতে থাকে সালসবুর্ক। দশম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত তারা; তবে মিডফিল্ডার অস্কার গ্লুকের কোনাকুনি শটটি দূরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
প্রথম ২০ মিনিটে সালসবুর্ক যেখানে গোলের জন্য তিনটি শট নেয়, সেখানে রেয়াল নিতে পারেনি একটিও। তবে ২৩তম মিনিটে প্রথম শটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
মাঝমাঠ থেকে কিলিয়ান এমবাপের পাস ধরে একটু এগিয়ে ডি-বক্সে ডান দিকে লম্বা ক্রস বাড়ান ভিনিসিউস। ওখানে বেলিংহ্যাম পা বাড়িয়ে বলে স্পর্শ করলেও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি; তবে পাশেই ছুটে আসা রদ্রিগো দারুণ কোনাকুনি শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
চার মিনিট পর বাড়তে পারত ব্যবধান। কিন্তু রদ্রিগোর শট প্রতিহত হওয়ার পর, বক্সেই ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন ভিনিসিউস।
রদ্রিগো-বেলিংহ্যামের দারুণ বোঝাপড়ায় ৩৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। আরেক সতীর্থের পাস ধরে বেলিংহ্যামকে বল বাড়িয়ে চোখের পলকে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রদ্রিগো, ইংলিশ মিডফিল্ডারও অসাধারণ দক্ষতায় পেছনে না তাকিয়েই ব্যাকহিল করেন এবং ফিরতি পাস পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় দুর্দান্ত এক শটে দূরের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই গড়বড় করে ফেলেন সালসবুর্ক গোলরক্ষক ইয়ানিস এবং প্রতিপক্ষের উপহার কাজে লাগাতে ভুল করেননি এমবাপে।
সতীর্থের পাস পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় বল ডি-বক্সে বাড়িয়ে পেছনে ছুটে যান এমবাপে, যদিও পাশের ডিফেন্ডারের সঙ্গে গতিতে পেরে ওঠেননি তিনি। কিন্তু ডিফেন্ডার তের্জিচের ব্যাকপাস পেয়ে ইয়ানিসও বল পায়ে রাখতে পারেননি, সেই সুযোগে ছুটে গিয়ে বল কেড়ে ফাঁকা জালে পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
দারুণ এক গোলে ৫৫তম মিনিটে স্কোরলাইনে নাম লেখান ভিনিসিউস। লুকা মদ্রিচের পাস ধরে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুজনের বাধা এড়িয়ে জোরাল শটে গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
৭২তম মিনিটে একসঙ্গে রদ্রিগো ও এমবাপেকে তুলে নেন কোচ। তাদের জায়গায় নামান ব্রাহিম দিয়াস ও এন্দ্রিককে।
মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে গোলরক্ষকের কঠিন পরীক্ষা নেন ব্রাহিম। দুরূহ কোণ থেকে তার বুলেট গতির শট লাফিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান ইয়ানিস।
এর পাঁচ মিনিট পর পঞ্চম গোলের দেখা পায় রেয়াল। ফেদেরিকো ভালভের্দের পাস ধরে সবাইকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে প্লেসিং শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ভিনিসিউস।
নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে, ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে নিজেদের একমাত্র গোলটি করেন মাডস।
সাত ম্যাচের মাত্র একটিতে জয়ী অস্ট্রিয়ান ক্লাব সালসবুর্কের পরের ধাপে ওঠার আশা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।
২ গোল হজমের পর ৪ গোল করে সিটিকে হারাল পিএসজি