অস্ট্রিয়ার মাঠে এমবাপের গোলে রক্ষা ফ্রান্সের

ক্রোয়েশিয়াকে উড়িয়ে অভিযান শুরু করা অস্ট্রিয়া তখন আরেকটি অসাধারণ জয়ের অপেক্ষায়। তাদের জমাট রক্ষণে ভেস্তে যাচ্ছিল ফ্রান্সের সব প্রচেষ্টা। কোণঠাসা দলকে উদ্ধার করলেন কিলিয়ান এমবাপে। অসাধারণ এক গোলে এনে দিলেন মূল্যবান একটি পয়েন্ট।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2022, 08:45 PM
Updated : 10 June 2022, 09:25 PM

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় শুক্রবার রাতে নেশন্স লিগের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। ‘এ’ লিগের ১ নম্বর গ্রুপের লড়াইয়ে আন্দ্রেয়াস ভাইমানের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর বদলি নেমে সমতা টানেন এমবাপে।

চ্যাম্পিয়নের বেশে আসর শুরু করা ফ্রান্স প্রথম ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে এগিয়েও গিয়েও হেরে বসে ২-১ গোলে। পরের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে করে ১-১ ড্র।

জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা প্রায় দুই তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে আক্রমণে আধিপত্য করে। গোলের উদ্দেশ্যে তাদের নেওয়া ১৫ শটের সাতটিই ছিল লক্ষ্যে।

তাদের আটকে রাখে অস্ট্রিয়ানদের রক্ষণভাগ দারুণ কৃতিত্ব দেখিয়ে। মূলত তারা ঘর সামলে পাল্টা আক্রমণের কৌশল নেয়। পরিসংখ্যানেও যা পরিষ্কার; পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে তারা মাত্র চারটি শট নেয়, অবশ্য এর তিনটিই ছিল লক্ষ্যে।

এরন্সট-হাপেল স্টেডিয়ামে আক্রমণাত্মক শুরু করা ফরাসিরা ম্যাচের অষ্টাদশ দারুণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ডাবল সেভ করেন গোলরক্ষক পাত্রিক পেনৎস। ডান দিক থেকে থিও এরনঁদেজের ফ্রি কিক গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ফেরালেও বল চলে যায় ছয় গজ বক্সের বাইরে করিম বেনজেমার কাছে। তার নিচু হয়ে নেওয়া হেড পড়ে থাকা অবস্থাতেই দারুণ রিফ্লেক্সে এক হাত দিয়ে আটকান পেনৎস।

ফ্রান্স চাপ ধরে রাখলেও প্রতিপক্ষের গোলমুখে গিয়ে সুবিধা করতে পারছিল না। একটু একটু করে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে অস্ট্রিয়া। ৩৭তম মিনিটে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায়ই এগিয়ে যায় তারা।

গোলটিতে বড় ভূমিকা আন্দ্রেয়াস ভাইমানের। প্রতি-আক্রমণে ডি-বক্সে সতীর্থের দারুণ পাস ধরে ছুটে আসা ডিফেন্ডারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে বল বাড়ান কনরাড লাইমার আর ডান পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ভাইমান।

১০ বছর আগে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া এই ফরোয়ার্ডের এটি আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম গোল।

চার মিনিট পর দ্বিতীয় গোলও পেতে পারত স্বাগতিকরা। তবে দারুণ পজিশনে বল পেয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন মার্কো আর্নাওতোভিচ। পরের মিনিটে বেনজেমার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে ব্যবধান ধরে রাখেন পেনৎস।

দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে সতীর্থের ক্রস ছয় গজ বক্সের বাঁ দিকে ফাঁকায় পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট ভলি মারেন বেনজেমা। ৫৫ ও ৫৬তম মিনিটে আরও দুবার সুযোগ তৈরি করেও সফল হতে পারেনি ফ্রান্স। বাঁজামাঁ পাভার্দের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর পর কিংসলে কোমানের একজনকে কাটিয়ে নেওয়া শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

আক্রমণের ধার বাড়াতে ৬৩তম মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমানকে তুলে এমবাপেকে নামান ফ্রান্স কোচ। তিনি কোচের আস্থার প্রতিদান দেন ৮৩তম মিনিটে।

মাঝমাঠে সতীর্থের পাস ধরে বাঁ দিকে আরেক সতীর্থ ক্রিস্টোফা এনকুকুকে বল বাড়িয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটতে থাকেন এমবাপে। এনকুকুও থ্রু বল বাড়াতে দেরি করেননি। ডি-বক্সের মুখে প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানাতে আসা ডিফেন্ডারকে কোনো সুযোগ না দিয়ে জোরাল উঁচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন পিএসজি তারকা।

এখানে হার এড়াতে পারলেও পয়েন্ট টেবিলে অবনমন হয়েছে ফ্রান্সের। চার দলের গ্রুপে তিন ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে নেমে গেছে তারা।

আরেক ম্যাচে ডেনমার্ককে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। তাদের ও অস্ট্রিয়ার পয়েন্ট সমান ৪ করে। অস্ট্রিয়া আছে দুই নম্বরে।

প্রথম দুই রাউন্ডে জেতা ডেনিশরা ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে।