বোকা জুনিয়র্সের মাঠে বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে ৩-০ গোলে জিতেছে লিওনেল স্কালোনির দল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে প্রথমার্ধে নিকোলাস গনসালেস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান আনহেল দি মারিয়া। শেষ গোলটি করেন স্বাগতিক অধিনায়ক।
লাতিন আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে কখনও খেলতে না পারা একমাত্র দেশ ভেনেজুয়েলা এবারও লড়াই থেকে ছিটকে গেছে বেশ আগেই। তবে প্রতিপক্ষের মাঠে দলটি খেলেছে প্রবল পরিশ্রম করে।
গত ফেব্রুয়ারিতে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারানো দলে ১০ পরিবর্তন আনেন আর্জেন্টিনার কোচ স্কালোনি। তবে পরিবর্তনের ছড়াছড়িতেও খেলায় কোনো প্রভাব পড়েনি। নিজেদের চেনা ফুটবলটাই খেলে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠলেও ক্লাবের অনুরোধে সবশেষ দুই ম্যাচে মেসিকে খেলায়নি আর্জেন্টিনা। দলে ফেরা অধিনায়কই পান প্রথম ভালো সুযোগ। চতুর্থ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দূরের পোস্টে তার বাঁকানো শট ঝাপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক।
২৫তম মিনিটে দে পলের উঁচু করে বাড়ানো বলে ডি-বক্সে বিপজ্জনক জায়গায় একটুর জন্য নাগাল পাননি মেসি। পাঁচ মিনিট পর দারুণ কারিকুরিতে সুযোগ তৈরি করেন তিনি, কিন্তু শট স্লাইড করে ব্লক করেন ভেনেজুয়েলার এক খেলোয়াড়। এ সময় বল তার হাতে লাগলেও পেনাল্টির আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ভিএআরের সহায়তা নিয়ে নাকচ করে দেন তা।
৩৩তম মিনিটে মেসির দারুণ পাসে হোয়াকিন কোররেয়ার শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর আর পারেননি তিনি। দে পলের চমৎকার নিচু ক্রসে দারুণ স্লাইডে বাকিটা সারেন গনসালেস।
চার মিনিট পর সমতা ফেরানোর খুব ভালো সুযোগ হাতছাড়া করে ভেনেজুয়েলা। রন্দনের ক্রসে ডি বক্সে মার্তিনেস বুক দিয়ে বল জালে পাঠানোর চেষ্টায় সফল হননি। ৫৩তম মিনিটে আবার সুযোগ আসে তার সামনে। এবার ক্রসে হেড রাখতে পারেননি লক্ষ্যে।
৭৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন একটু আগেই বদলি নামা দি মারিয়া। নিজেদের অর্ধ থেকে দে পলের বাড়ানো বল ধরে তিন ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে চিপ শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
৮২তম মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন মেসি। ডি বক্সে দি মারিয়াকে বল বাড়িয়ে অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে বিদ্যুৎ গতিতে ছয় গজ বক্সে ঢুকে যান মেসি। পিএসজি সতীর্থের পাস পেয়ে বুক দিয়ে বল নামিয়ে বাকিটা সারেন তিনি।
দারুণ চেষ্টা করলেও এরপর আর ব্যবধান বাড়তে পারেনি আর্জেন্টিনা। সব মিলিয়ে টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত রইল আগেই কাতার বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করা দলটি, যার শুরুটা হয়েছিল ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে।
১৬ ম্যাচে ১১ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে স্কালোনির দল আছে দুই নম্বরে। তাদের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট কম নিয়ে তিন নম্বরে একুয়েডর। সমান ২৫ পয়েন্ট নিয়ে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে চারে উরুগুয়ে। ৪২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ব্রাজিল। এই চার দল এরই মধ্যে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার টিকেট পেয়েছে।
পঞ্চম স্থানে থাকা দলকে খেলতে হবে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে অফ। এর জন্য লড়াইয়ে আছে পেরু (২১), কলম্বিয়া (২০) ও চিলি (১৯)।
জয় দিয়ে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে যাওয়ার অভিযান শেষ করল আর্জেন্টিনা। আগামী মঙ্গলবার একুয়েডরের মাঠে খেলবে তারা। এছাড়া ব্রাজিলের বিপক্ষে তাদের মাঠে খেলবে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বাতিল হয়ে যাওয়া ম্যাচটি।