ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চলে সৈন্য পাঠিয়েছে রাশিয়া। সেখানে আক্রমণের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে উয়েফার রাশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল আয়োজনের সম্ভাবনা খুব কম বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী ট্রেসি ক্রাউচ বিবিসি স্পোর্টকে বলেছেন, ‘অবিলম্বে’ রশিয়া থেকে ফাইনাল সরিয়ে নেওয়া উচিত উয়েফার।
ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পুরো পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছে। একই সঙ্গে নতুন একটি ভেন্যুও খুঁজছে তারা। কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে গত দুই আসরের ফাইনালও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল পর্তুগালের লিসবনে।
প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, ২০২১-২২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হওয়ার কথা আগামী ২৮ মে। বিবিসি স্পোর্টের ধারণা, ফাইনালের দিনক্ষণ পাল্টাবে না উয়েফা। বিকল্প ভেন্যু হিসেবে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। ওই সপ্তাহান্তে এই মাঠে লিগ টু ও চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে-অফ ফাইনাল হওয়ার কথা আছে।
উয়েফা তাদের যুব লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচ নিয়ে দিনামো কিয়েভ ও স্পোর্তিং লিসবনের সঙ্গে আলোচনা করছে। ২ মার্চ ম্যাচটি হওয়ার কথা ইউক্রেইনের রাজধানীতে।
উয়েফার অন্যান্য প্রতিযোগিতার ম্যাচগুলোও সরানোর প্রয়োজন হতে পারে। এই মৌসুমে অন্য কোনো ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ইউক্রেইনের কোনো দল অবশ্য এখন টিকে নেই। তবে রাশিয়ান ক্লাব জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গ এখনও ইউরোপা লিগে আছে। আগামী বৃহস্পতিবার স্পেনে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে তারা প্লে-অফ রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগ খেলবে। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে জেনিত হেরেছে ৩-২ গোলে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আগামী ২৪ মার্চ বিশ্বকাপের প্লে-অফে পোল্যান্ডকে আতিথ্য দেবে রাশিয়া। যদি রাশিয়া ম্যাচটি জেতে, তাহলে ২৯ মার্চ সুইডেন অথবা চেক রিপাবলিকের মুখোমুখি হবে তারা।
ইউক্রেইনও বিশ্বকাপের প্লে-অফে আছে। কাতারের টিকেট পেতে প্রথমে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে তারা। ওই ম্যাচ জিতলে পরে ওয়েলস অথবা অস্ট্রিয়াতে খেলতে যাবে দলটি।
ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে সোমবার ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখানে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফলে সেখানে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনুমান, ইউক্রেইনের সীমান্তে প্রায় দেড় লাখ সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ফলে সেখানে তাদের আগ্রাসনের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
সমর্থকদের নিরাপত্তার জন্য উয়েফাকে আরও শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানালেন যুক্তরাজ্যের সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী ক্রাউচ।
“ইউক্রেইনে রুশ কর্মকাণ্ডে (আক্রমণের হুমকির মুখে) ব্রিটিশ ও ইউরোপীয়দের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে উয়েফাকে অবিলম্বে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল সরিয়ে নেওয়া উচিত।”
“রাশিয়া আয়োজিত ২০১৮ বিশ্বকাপে রাজনীতিবিদ এবং কর্মকর্তাদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে মৃদু বার্তা, যা কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তৈরি করেনি। তাই সেখানে ভ্রমণে যাওয়া সমর্থকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উয়েফাকে আরও শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”
গত ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের বেশ কয়েকটি ম্যাচ হয়েছিল সেন্ট পিটার্সবার্গে।
