আবাহনী কোচ লেমোসের শূন্যতা পূরণের আনন্দ

শেষের বাঁশি বাজতেই ডাগআউট থেকে ছুটলেন শিষ্যদের দিকে। একদফা উদযাপন শেষ করে একাই ছুটে গেলেন দক্ষিণ দিকের গ্যালারির দিকে। সমর্থকদের সঙ্গে মেতে উঠলেন শিরোপা উৎসবে। আবাহনীর কোচ হিসেবে মারিও লেমোসের প্রথম শিরোপা জয়ের আনন্দ হলো এমনই বাঁধনহারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2021, 04:04 PM
Updated : 18 Dec 2021, 05:04 PM

কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শনিবার গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কিংসকে ৩-০ গোলে হারায় আবাহনী। ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম মুকুট ফিরে পেল তারা।

৫৪তম মিনিটে আনিসুর রহমান জিকোর পাশ দিয়ে নিখুঁত শটে আবাহনীকে এগিয়ে নেন রাকিব হোসেন। ৬১তম মিনিটে স্পট কিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দোরিয়েলতন গোমেজ নাসিমেন্তো। ৭২তম মিনিটে ব্রাজিলের এই ফরোয়ার্ডই দারুণ শটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে আবাহনীর জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে দেন।

২০১৮ সালে আবাহনীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম শিরোপার স্বাদ পেলেন লেমোস। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় ৩৫ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ কোচের কণ্ঠে পরিশ্রমে ফল পাওয়ার আনন্দ।

“অবশ্যই আমার কাছে বিশেষ ট্রফি। তিন বছরের এক বছর কোভিডে পার হয়েছে, এর মাঝেও অনেক পরিশ্রম করেছি। এটা হতাশার যখন আপনি ট্রফি না জিতে দ্বিতীয় বা তৃতীয় হয়ে শেষ করবেন বা টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার-ফাইনাল বা সেমি-ফাইনাল থেকে বাদ পড়বেন। এখন মনে হচ্ছে যেন আমার কাজ স্বীকৃতি পেল।”

“বিগত বছরে বসুন্ধরা কিংস টানা শিরোপা জিতেছিল। গতবারের চেয়ে আমাদের এবারের দল আরও শক্তিশালী। খারাপ বা ভালো হোক আমরা সবসময় খেলোয়াড় পরিবর্তন করে খেলিয়েছি। আমরা টুর্নামেন্ট জিততেই চেয়েছিলাম।”

চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে এ মৌসুমেই আবাহনীতে যোগ দেন রাকিব। প্রথম গোল পেলেন, শিরোপাও জিতলেন। লক্ষ্যপূরণের অন্যরকম আনন্দ অনুভব করছেন এই ফরোয়ার্ডও।

“আমাদের যে খেলছে, যে খেলছে না, আমরা সবাই পরিবারের মতো ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। আমরা শুধু চেয়েছিলাম শিরোপাটা জিততে। সেটা আমরা করতে পেরেছি। আবাহনীর জার্সিতেই প্রথম গোল পেলাম, আনন্দ লাগছে। আপনারা দেখেছেন, কয়েকটা ম্যাচ ধরেই আমরা চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু হচ্ছিল না। আমি একটু টেনশনে ছিলাম। ফাইনালে গোল করতে পেরেছি, খুব ভালো লাগছে।”

“(চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে আবাহনীতে আসা)…আমি এখানে এসেছিই সাফল্য পাওয়ার জন্য। আবাহনী চ্যাম্পিয়ন টিম, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই তারা দল গড়ে। প্রথমবার এসেই ট্রফি পেয়েছি, খুব ভালো লাগছে। গতবারও আবাহনী ভালো টিম গড়েছিল, কিন্তু ইনজুরি ছিল অনেকের। এবার কারো ইনজুরি ছিল না। আমরা দল হয়ে খেলতে পেরেছি, এ কারণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।”

স্বাধীনতা কাপের মুকুট হারিয়ে হতাশ কিংস কোচ অস্কার ব্রুসন। জোনাথন দি সিলভেইরা ফের্নান্দেস, তপু বর্মন ও কাজী তারিক রায়হানের মতো খেলোয়াড়দের চোটের কারণে না পাওয়াটা ফাইনালে ভুগিয়েছে বলে মনে করেন এই স্প্যানিশ কোচ।

“চোটের কারণে তিন জন খেলোয়াড় না থাকাটা আমাদের ভুগিয়েছে। সোহেল রানা (স্বাধীনতা কাপে নৌবাহিনীতে খেলতে হয়েছে) থাকলেও জোনাথনের জায়গায় ওকে খেলাতে পারতাম। আমাদের ভাগ্য খারাপ।”

প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন রাফায়েল অগাস্তো দি সিলভা। সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন দোরিয়েলতন (৪টি)। ফেয়ার প্লে পুরস্কার পেয়েছে সাইফ স্পোর্টিং।