সাদামাটা বার্সাকে আবারও রুখে দিল কাদিস

প্রথমার্ধের বিবর্ণ পারফরম্যান্সের পর ম্যাচের দ্বিতীয় ভাগে একটু জ্বলে ওঠার আভাস দেয় বার্সেলোনা। তবে ফ্রেংকি ডি ইয়ং বহিষ্কার হওয়ার পর আবার তারা দিকহারা। সুযোগ বুঝে চাপ দেয় কাদিস, তাতে ঘর সামলাতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় দলটিকে। শেষ পর্যন্ত এক পয়েন্ট মিললেও রোনাল্ড কুমানের দলের জন্য যা কোনোভাবেই স্বস্তির নয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2021, 09:55 PM
Updated : 23 Sept 2021, 10:33 PM

কাদিসের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র করে ফিরেছে বার্সেলোনা।

এবারের লিগে পাঁচ ম্যাচে টানা দুই ও মোট তিনটিতে পয়েন্ট হারাল তারা। পয়েন্ট টেবিলে পড়ে রইলো বেশ পেছনেই।

সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ১০ দিনে এই নিয়ে তিন ম্যাচ জয়শূন্য রইলো বুসকেতস-পিকেরা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর গত সোমবার লা লিগায় গ্রানাদার বিপক্ষে কোনোমতে হার এড়িয়েছিল বার্সেলোনা।

বরাবরের মতো বল দখলে এদিনও আধিপত্য করে বার্সেলোনা। তবে প্রতিপক্ষকে ভাবানোর মতো খুব বেশি কিছু করতে পারেনি তারা। দুই-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে ছয়টি শট নেয় দলটি, যার মাত্র দুটি ছিল লক্ষ্যে। আর মাত্র ৩২ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখতে পারা কাদিস ১৩টি শট নেয়, যার তিনটি লক্ষ্যে।

কাদিসের মাঠে এই নিয়ে টানা দুই ম্যাচে জয়শূন্য রইলো বার্সেলোনা। গত ডিসেম্বরের ম্যাচটিতে নিজেদের দুই ভুলে ২-১ গোলে হেরেছিল তারা। পরে গত মৌসুমের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে তাদের মাঠেও রুখে দিয়েছিল ১৫ বছর পর সেবারই লিগে ফেরা দলটি।

ম্যাচের শুরু থেকেই কাদিসের কৌশল ছিল পরিষ্কার; সুযোগ পেলেই প্রতি-আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে কাঁপিয়ে দেওয়া। দশম মিনিটেই ঠিক সেভাবেই মাঝ বরাবর দিয়ে ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রুবেন সবরিনো। একটু ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জে বল ক্লিয়ার করেন জেরার্দ পিকে।

‘তিকি-তাকা’ ফুটবল খেলার জন্য সেই মানের খেলোয়াড় দলে নেই বলে গ্রানাদার বিপক্ষে হোঁচট খাওয়ার পরই মেনে নেন কুমান। তবে বরাবরের মতো শুরু থেকেই বল দখলে আধিপত্য করে বার্সেলোনা। পাসিং ফুটবলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টাও করে তারা; কিন্তু অসংখ্য ভুল পাসে বারবার তা ভেস্তে যাচ্ছিল।

২৭তম মিনিটে একটি হাফ-চান্স তৈরি করে বার্সেলোনা। ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ক্রস ঠেকাতে যদিও তেমন বেগ পেতে হয়নি গোলরক্ষক হেরেমিয়াস লেদেসমার। খানিক পর ভালো পজিশন থেকে দুর্বল শটে লেদেসমার হাতে বল তুলে দেন মেমফিস ডিপাই।

প্রথমার্ধের ধারহীন বার্সেলোনা বিরতির পর প্রথম ১০ মিনিটে দারুণ দুটি সুযোগ পায়। ৫০তম মিনিটে সতীর্থের ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে শট নিতেই ব্যর্থ হন মেমফিস। দুই মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ফেরান লেদেসমার।

৫৯তম মিনিটে গোলমুখে জটলার মধ্যে বল পেয়েও শট না নিয়ে সতীর্থের খোঁজে কাটব্যাক করেন মেমফিস। জায়গা মতো কেউ না থাকায় হতাশা বাড়ে বার্সেলোনার।

ছয় মিনিট পরেই বড় ধাক্কাটা খায় বার্সেলোনা। মাঝমাঠে আলফোন্সো এসপিনোকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডি ইয়ং। টিভি রিপ্লে দেখে যদিও মনে হয়েছে, সিদ্ধান্তটি বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। প্রতিপক্ষের সঙ্গে পায়ে পায়ে সংঘর্ষের আগে বলে স্পর্শ করেছিলেন ডাচ মিডফিল্ডার।

মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের নৈপুণ্যে ৮০তম মিনিটে বেঁচে যায় বার্সেলোনা। বদলি নেমেই মাঝমাঠে বল হারিয়ে ফেলেন রিকি পুস। সেই সুযোগে এসপিনো দ্রুত আক্রমণে উঠে ডান দিকে খুঁজে নেন সালভি সানচেসকে। তবে তার শট সময়মতো এগিয়ে গিয়ে রুখে দেন জার্মান গোলরক্ষক।

শেষ দিকে দারুণ জমে ওঠে লড়াই। পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়েই দুই পাশেই কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি হয়। মেমফিসের আরও একটি প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কাদিসের দুটি প্রচেষ্টা কোনোভাবে ঠেকিয়ে পয়েন্ট নিশ্চিত করে বার্সেলোনা।

তবে পয়েন্ট মিললেও বার্সেলোনার খেলার ধরন এদিনও আশানুরূপ নয়। শেষদিকে আবারও খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা ছিল দৃষ্টিকটু। সব মিলিয়ে, এ যেন এক ছন্নছাড়া দলের রূপ।

প্রবল সমালোচনার মুখে থাকা কুমানের ওপর চাপ বাড়ল আরও। শেষ দিকে রেফারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে লাল কার্ডও দেখেন তিনি।

পাঁচ ম্যাচে দুই জয় ও তিন ড্রয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে বার্সেলোনা।  

৬ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ। তিন নম্বরে রিয়াল সোসিয়েদাদের পয়েন্ট ১৩।

৬ ম্যাচে কাদিসের পয়েন্ট ৬।