ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে কোয়ারেন্টিনের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ নিয়ে মাঠে উপস্থিত হয়েছেন ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাদের আপত্তির মুখে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে গেছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার লড়াই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2021, 07:29 PM
Updated : 5 Sept 2021, 09:29 PM

সুপার ক্লাসিকোর তখন পঞ্চম মিনিটের খেলা চলছে। সাইড লাইন পেরিয়ে মাঠে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকা একজনকে দেখে আর্জেন্টিনার দুই খেলোয়াড় নিকোলাস ওতামেন্দি ও মার্কোস আকুনা এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন তিনি কে? সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘিরে ধরলেন অনেকেই।

আর্জেন্টিনার ক্রীড়া পত্রিকা টিওয়াইসি জানায়, ম্যাচ অফিসিয়ালদের বাইরের উপস্থিত ব্যক্তিরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। ইংল্যান্ড থেকে আসা আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়ের ব্যাপারে খোঁজ নিতে এসেছেন তারা।

পরে রয়টার্স জানায়, কোয়ারেন্টিনের নিয়ম ভাঙার দায়ে আর্জেন্টিনার একাদশের তিন খেলোয়াড়- গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস, ডিফেন্ডার ক্রিস্তিয়ান রোমেরো ও মিডফিল্ডার জিওভানি লো সেলসোর খেলা নিয়ে আপত্তি জানায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগের পর করিন্থিয়ান্স আরেনা ছেড়ে ড্রেসিং রুমে চলে যায় সফরকারীরা।

ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ঘিরে ধরার পর তারা কথা বলেন মেসি ও নেইমারের সঙ্গে। সেখানে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় রেফারি কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়নদের ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেয়।

ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়-কোচদের স্বাস্থ্যা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি পুরোটা সময় মাঠেই ছিলেন। তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও ব্রাজিল কোচ তিতের সঙ্গে কথা চালিয়ে যান। পরে এসে যোগ দেন মেসিও।

কিছুক্ষণ পর স্কালোনি ও মেসিসহ আর্জেন্টিনার সবাই চলে যায় ড্রেসিংরুমে। ম্যাচ শুরুর প্রায় ঘণ্টা খানেক পর ম্যাচ অফিসিয়ালরা এসে ব্রাজিল দলকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়। মাঠ না ছেড়ে স্বাগতিকরা ওয়ার্ম আপ করে অপেক্ষা করতে থাকেন।

ম্যাচের আগেই ব্রাজিলিয়ান হেলথ রেগুলেটরি এজেন্সি (আনভিসা) জানায়, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অ-ব্রাজিলিয়ানদের জন্য ব্রিটেন, উত্তর আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা বা ভারত থেকে ব্রাজিলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। যাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, তাদের অবশ্যই (ব্রাজিলে) আসার সময় কর্তৃপক্ষকে অবগত করতে হবে এবং ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

“যারা কারাকাস (ভেনেজুয়েলা) থেকে গুয়ারুলোসের একটি ফ্লাইটে ব্রাজিলে এসেছে, সেই খেলোয়াড়রাই প্রশ্নের মুখে রয়েছে। বিধিনিষেধের আওতায় থাকা চারটি দেশ থেকে আসা এই খেলোয়াড়রা কোথাও শেষ ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকেনি।”

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে জেরবার ব্রাজিল। এ কারণেই দেশটি অনেক নিয়মে কড়াকড়ি করছে এখন। আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে নিয়ম ভাঙার অভিযোগের বিষয়ে পৃথক বিবৃতিতে সাও পাওলো স্টেট হেলথ সেক্রেটারিয়েটের পক্ষ থেকে ‘একটি এপিডেমিওলজিক্যাল এবং স্যানিটারি তদন্ত শুরুর’ কথা বলা হয়েছিল।

ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ইউওএল জানায়, অভিযুক্ত চার খেলোয়াড় যদি কোয়ারেন্টিন থেকে অব্যাহতি পাওয়ার নথিপত্র দেখাতে না পারে, তাহলে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে তাদের অংশগ্রহণ আটকে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো। ম্যাচই স্থগিত হয়ে গেল, আবার খেলা কখন শুরু হবে তা নিশ্চিত নয়।