বার্সা-আতলেতিকোর শিরোপা স্বপ্নে ড্রয়ের ধাক্কা

লিগ টেবিলের এক ও তিন নম্বরের লড়াইটা হলো দারুণ জমজমাট। দুই অর্ধে আক্রমণে আধিপত্য করল দুই দল। কিন্তু মিলল না গোলের দেখা। বার্সেলোনা ও আতলেতিকো মাদ্রিদের ড্রয়ে লা লিগার শিরোপা ভাগ্য চলে গেল রিয়াল মাদ্রিদের হাতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 04:08 PM
Updated : 8 May 2021, 05:15 PM

কাম্প নউয়ে শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে শুরু হওয়া লা লিগার ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।

ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারানোয় শিরোপা লড়াইয়ে জোর ধাক্কা খেল বার্সেলোনা। শিরোপা ভাগ্য ছুটে গেছে আতলেতিকোর থেকেও। তবে শীর্ষস্থানে এখনও তারাই আছে।

৩৫ ম্যাচে ২৩ জয় ও আট ড্রয়ে ৭৭ পয়েন্ট আতলেতিকোর। দুই নম্বরে উঠে আসা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৫। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়াল ১ পয়েন্ট কম নিয়ে নেমে গেছে তৃতীয় স্থানে। 

আসরে প্রথম দেখায় গত নভেম্বরে আতলেতিকোর মাঠে ইয়ানিক কারাসকোর একমাত্র গোলে হেরেছিল বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধে তারা বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় পারেনি পার্থক্য গড়ে দিতে।

নিশ্চিত সুযোগের হিসেবে একটু হলেও এগিয়ে আতলেতিকো। কিন্তু বিরতির পর ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধে গোলের লক্ষ্যে ছয়টি শট নেয়া দলটি দ্বিতীয়ার্ধে পারেনি একটিও!

ম্যাচের প্রথম সুযোগটি আসে উনবিংশ মিনিটে। মারিও এরমোসোর ক্রস ডি-বক্সে খুঁজে পায় আনহেল কোররেয়াকে; তবে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের শট দারুণ স্লাইডিং চ্যালেঞ্জে কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন ক্লেমোঁ লংলে।

বিরতির আগের ১৫ মিনিটে প্রবল চাপ বাড়ায় সফরকারীরা। ৩৪তম মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ তৈরি করে তারা; মার্ক আন্ড্রে টের স্টেগেনের দেয়াল ভাঙতে পারেনি দলটি। ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যথেষ্ট গতির শট নিতে পারেননি মার্কোস ইয়োরেন্তে, ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। এরপর সাবেক সতীর্থ লুইস সুয়ারেসের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া ক্রসও ঠেকান তিনি। দুই মিনিট পর কারাসকোর প্রচেষ্টাও ঠেকিয়ে দেন জার্মান গোলরক্ষক।

৪১তম মিনিটে মেসির জাদুকরী ফুটবলে প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে একজনকে কাটিয়ে চোখের পলকে সামনে আরও দুজনের ফাঁক দিয়ে বামে ঢুকে জায়গা বানিয়ে ট্রেডমার্ক শট নেন আর্জেন্টাইন তারকা। অসাধারণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে কোনোমতে আঙুল ছুঁয়ে জাল অক্ষত রাখেন ইয়ান ওবলাক। চার মিনিট পর আরেকটি নিশ্চিত সুযোগ উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন আতলেতিকোর ফেলিপে।

মৌসুমের শুরুতে আতলেতিকো মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর এই ম্যাচ দিয়েই প্রথমবারের মতো বন্ধু লিওনেল মেসির মুখোমুখি হন লুইস সুয়ারেস।

প্রথমার্ধে দুই শিবিরেই চোট আঘাত হানে। শুরুর দিকে গোড়ালির সমস্যায় মাঠ ছাড়েন আতলেতিকোর ফরাসি মিডফিল্ডার তুমা লুমা, বদলি নামেন সাউল নিগেস। আর ৩৩তম মিনিটে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে সের্হিও বুসকেতস, বদলি নামে তরুণ মিডফিল্ডার ইলাইশ মোরিবা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দূর থেকে ভীতি ছড়ান সুয়ারেস। যদিও তার জোরালো হাফ ভলি পোস্টের বেশ বাইরে দিয়ে যায়। পরের ১৫ মিনিটে ধীরে ধীরে চাপ বাড়াতে থাকে বার্সেলোনা।

৭১তম মিনিটে জর্দি আলবার ক্রসে হেডে বল জালে পাঠান রোনালদো আরাহো। তবে অফসাইডে ছিলেন উরুগুয়ের এই ডিফেন্ডার।

আক্রমণের ধার বাড়াতে সের্জিনো দেস্তকে বসিয়ে উসমান দেম্বেলেকে নামায় বার্সেলোনা। ৮৫তম মিনিটে তার হাত হাত ধরেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। তবে অরক্ষিত এই ফরোয়ার্ডের হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

শেষ সময়ে শেষ একটা চেষ্টা করেন মেসি। কিন্তু তার প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা। নিষেধাজ্ঞায় ডাগআউটে ছিলেন না বার্সেলোনা কোচ রোনাল্ড কুমান। দলের সুযোগ নষ্টে গ্যালারিতে বসা এই ডাচের চোখে-মুখে ছিল হতাশা।

তবে, চেনা আঙিনায় পয়েন্ট হারালেও শিরোপা লড়াইয়ে ঠিকই আছে বার্সেলোনা। আগের দিন কুমানও ঠিক তাই বলেছিলেন, এই ম্যাচ শিরোপা নির্ধারক নয়।

শিরোপা ভাগ্য রিয়ালের হাতে গেলেও তা ধরে রাখতে বাকি চার ম্যাচের সবগুলো জিততে হবে তাদের। দুরূহ সে চ্যালেঞ্জের প্রথম ধাপে রোববার তাদের প্রতিপক্ষ পয়েন্ট তালিকার চার নম্বর দল সেভিয়া। ৩৪ ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে আছে তারাও।