ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে আতলেতিকোর কাছে বার্সা

গোল হজমের ধাক্কা কাটাতে একটুও দেরি করল না বার্সেলোনা। মিলল প্রতিপক্ষের উপহারও। ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে পয়েন্টের হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদের পাশে বসল রোনাল্ড কুমানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2021, 04:07 PM
Updated : 25 April 2021, 04:54 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে শুরু হওয়া ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। সামুয়েল চুকওয়েজের গোলে সফরকারীরা পিছিয়ে পড়ার পর জোড়া গোল করেন অঁতোয়ান গ্রিজমান।

গত সেপ্টেম্বরে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৪-০ গোলে জিতে আসর শুরু করেছিল কুমানের বার্সেলোনা। এবার অবশ্য জিততে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে শিরোপা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এগিয়ে চলা দলটিকে।

দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে ১০ জনের দলে পরিণত হলেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে স্বাগতিকরা। বল দখলে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও আক্রমণে ছিল প্রায় সমানে-সমান। বার্সেলোনার ১৫ শটের পাঁচটি আর ভিয়ারিয়ালের ১০ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে।

টানা ১৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে হেরে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছিল বার্সেলোনার। তবে, শিরোপা লড়াইয়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে আবারও লাগাম হাতে নিয়েছে মেসিরা। লিগ টেবিলে এখন তারা ২ পয়েন্ট পিছিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদের চেয়ে।

পা হড়কালেই শিরোপা-ভাগ্য চলে যাবে অন্যের হাতে, কঠিন এই চ্যালেঞ্জে তৃতীয় মিনিটেই বিপদে পড়তে পারতো বার্সেলোনা। তবে কর্নারে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে জেরার্দ মোরেনোর হেড ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। তিন মিনিট পর পাল্টা সুযোগও পায় তারা; কিন্তু অরক্ষিত গ্রিজমান তা কাজে লাগাতে পারেননি।

পঞ্চদশ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় বার্সেলোনার। কাছ থেকে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের শট গোললাইন থেকে কোনোমতে ফেরান গোলরক্ষক সের্হিও আসেনহো। ফিরতি বল পেয়েছিলেন ডাচ মিডফিল্ডার, কিন্তু পা লাগাতে পারেননি তিনি। তিন মিনিট পর মেসির শটও ঠেকিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক।

২৬তম মিনিটে দারুণ পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায় ভিয়ারিয়াল। মাঝমাঠ থেকে পাউ তরেসের থ্রু পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককে কাটিয়ে গোলটি করেন নাইরেজিয়ান উইঙ্গার চুকওয়েজে।

পাল্টা জবাব দিতে মোটেও দেরি করেনি বার্সেলোনা। অনেকটা একইরকম ভাবে মাঝমাঠ থেকে উঁচু করে বল বাড়ান অস্কার মিনগেসা। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে সমতা টানেন গ্রিজমান।

প্রতিপক্ষের দৃষ্টিকটু ভুলের সুযোগে ৩৫তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন গ্রিজমান। নিজেদের ডি-বক্সের বাইরে জটলার মাঝে বল ক্লিয়ার না করে ডিফেন্ডার হুয়ান ফয়েত কি বুঝে গোলরক্ষকের উদ্দেশ্যে দুর্বল ব্যাকপাস বাড়ান। দেখলেনও না সামনেই আছেন গ্রিজমান! প্রতিপক্ষের অমন উপহার পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল ধরে অনায়াসে বাকি কাজ সারেন বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে চলতে থাকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের লড়াই। ৬২তম মিনিটে সুযোগ আসে ভিয়ারিয়ালের সামনে; তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। এতিয়েন কেপুর নিচু শট পা দিয়ে রুখে দেন জার্মান গোলরক্ষক।

দুই মিনিট পরই বড় ধাক্কাটা খায় স্বাগতিকরা। মেসিকে বিপজ্জনক ফাউল করায় স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মানু ত্রিগেরোসকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

এক জন কম নিয়েও ভালোই লড়ে যাচ্ছিল ভিয়ারিয়াল। ৭৭তম মিনিটে সুযোগও পায় তারা; কিন্তু ডি-বক্সে দারুণ পজিশন থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মোরেনো।

সাত মিনিট পর ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েও হতাশ করেন ডি ইয়ং। বদলি নামা উসমান দেম্বেলের বাঁ দিক থেকে বাড়ানো বল খুঁজে পায় তাকে। সামনে একমাত্র বাধা ছিল গোলরক্ষক, কিন্তু লক্ষভ্রষ্ট শট নেন তিনি।

বাকি সময়ে আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউ।

স্বস্তির জয়ে মাঠ ছাড়া বার্সেলোনা ৩২ ম্যাচে ২২ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে। সমান পয়েন্ট নিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। শিরোপাধারীরা এক ম্যাচ বেশি খেলেছে।

শীর্ষে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭৩।