অসংখ্য সুযোগ হারিয়ে বার্সার হোঁচট

একের পর এক আক্রমণে আলাভেসকে কাঁপিয়ে দিল বার্সেলোনা। কিন্তু কখনও আলাভেসের রক্ষণ, কখনও গোলরক্ষক দারুণ দৃঢ়তায় রুখে দিল সব। লা লিগায় দীর্ঘ হলো রোনাল্ড কুমানের দলের দুঃসময়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2020, 10:10 PM
Updated : 31 Oct 2020, 10:18 PM

প্রতিপক্ষের মাঠে শনিবার রাতে ১-১ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা। এ নিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়শূন্য রইলো দলটি। সেভিয়ার বিপক্ষে ড্র করার পর গেতাফে ও রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে হারে কাতালান ক্লাবটি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইউভেন্তুসের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফুটবল খেলা বার্সেলোনা এদিন শুরু করে ঢিমে তালে। নিজেদের মাঠে কাতালান ক্লাবটির বিপক্ষে ২০০১ সালে সবশেষ জেতা আলাভেস মনোযোগী ছিল রক্ষণে।

দ্বাদশ মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। ক্লেমোঁ লংলের বাড়ানো বল ধরে সামনে এগিয়ে যান আনসু ফাতি। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক। কিন্তু ১৮তম জন্মদিন পালন করা ফাতির শট থাকেনি লক্ষ্যে।

পাঁচ মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে দারুণ সুযোগ আসে আলাভেসের সামনে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও তার বরাবর শট নিয়ে বসেন লুকাস রিয়োহা। বেঁচে যায় বার্সেলোনা।

২৩তম মিনিটে লিওনেল মেসির ফ্রি কিক গোললাইন থেকে বাঁচিয়ে আলাভেসের ত্রাতা নাভারো হিমেনেস।

৩১তম মিনিটে নিজেদের ভুলে পিছিয়ে যায় বার্সেলোনা। আপাত নিরীহ এক বল নেতোকে ব্যাকপাস দেন দলের হয়ে ৫৫০তম ম্যাচ খেলা জেরার্দ পিকে। সুযোগটা কাজে লাগান রিয়োহা। তাকে ছুটে আসতে দেখে তালগোল পাকিয়ে বল হারান বার্সেলোনা গোলরক্ষক। উপহার কাজে লাগাতে কোনো ভুল করেননি রিয়োহা।

আলাভাসের মাঠে সাত ম্যাচে এই প্রথম বার্সেলোনার জালে গেল বল। চলতি মৌসুমে লা লিগায় শুরুতে গোল খাওয়া আগের তিন ম্যাচেই জিততে ব্যর্থ হয়েছে কুমানের দল।

ছয় মিনিট পর সমতা টানার সুযোগ হাতছাড়া করেন ফ্রেংকি ডি ইয়ং। সের্হিও রবের্তোর ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এই ডাচ মিডফিল্ডার। যোগ করা সময়ে ফাতির কাছ থেকে বল পেয়ে মেসির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।

আক্রমণের ধার বাড়াতে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ত্রিনকাও, পেদ্রি ও পিয়ানিচকে মাঠে নামান কুমান। ৪৮তম মিনিটে কর্নারের বিনিময়ে মেসির শট ঠেকান গোলরক্ষক।

পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে আলাভেস। বার্সেলোনা গোলরক্ষক ছাড়া বাকি সবাই ছিলেন স্বাগতিকদের অর্ধে। একের পর এক আক্রমণে তাদের কাঁপিয়ে দেয় বার্সেলোনা। কিন্তু ভাঙতে পারছিল না জমাটরক্ষণ। 

৬২তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হোতা। পরের মিনিটেই চমৎকার ফিনিশিংয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান অঁতোয়ান গ্রিজমান। কিন্তু এরপর মেসি-ফাতিরা কেবল আক্রমণেই করে গেলো। পেলো না জয়সূচক গোলের দেখা।

তিন মিনিট পর মেসির শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে আলাভেসের ত্রাতা গোলরক্ষক ফের্নান্দো পাচেকো। ৭১তম মিনিটে আবার বল জালে পাঠিয়েছিলেন গ্রিজমান কিন্তু তাকে বল দেওয়া ত্রিনকাও অফসাইডে থাকায় গোল দেননি রেফারি।

সাত মিনিট পর ফাতির শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। জন্মদিনে এটাই ছিল তরুণ ফরোয়ার্ডের শেষ শট। এরপরই তার জায়গায় মার্টিন ব্রাথওয়েটকে নামান বার্সেলোনা কোচ।

৮৫তম মিনিটে বল জালে পাঠান মেসি। তবে পরিষ্কার অফসাইড ছিলেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। দুই মিনিট পর তার বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি কিক থেকে সের্জিনো দেস্তের শট অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। পরের মিনিটে পিয়ানিচের বুলেট গতির শট এক হাতে ব্যর্থ করে দেন তিনি।

বাকি সময়েও অসংখ্য আক্রমণ করেছে বার্সেলোনা কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক গোলরক্ষকের প্রতিরোধ ভাঙা আর সম্ভব হয়নি।

৬ ম্যাচে দুই জয় ও দুই ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ১২ নম্বরে রয়েছে বার্সেলোনা।

দিনের অন্য ম্যাচে ওয়েস্কাকে ৪-১ গোলে হারানো রিয়াল মাদ্রিদ ৭ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে। ওসাসুনাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে উঠে এসেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। গোল পার্থক্যে এগিয়ে দুই নম্বরে আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ, পিছিয়ে চারে কাদিস।