পর্তুগালের লিসবনে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শিরোপা লড়াইয়ে নামবে বায়ার্ন ও পিএসজি। বড় মঞ্চের বড় লড়াইয়ে দারুণ অভিজ্ঞ মিউনিখের দলটি, ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে একাদশবারের মতো ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। যেখানে ফরাসি চ্যাম্পিয়ন পিএসজি এবারই প্রথম উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ।
বড় প্রতিযোগিতায় অভিজ্ঞতায় ৫০ বছরের পুরনো পিএসজি পিছিয়ে থাকলেও শক্তিতে তারা কোনো অংশে কম নয়। অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞের মতে, তারকাসমৃদ্ধ আক্রমণভাগ, ছন্দে থাকা মিডফিল্ডার ও জমাট রক্ষণ নিয়ে গড়া দলটিই বরং‘পরিপূর্ণ প্যাকেজ’।
তবে, ২০২০-এ অজেয় হয়ে ওঠা বায়ার্ন যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। হারতে ভুলে গেছে। সব প্রতিযোগিতা মিলে এখন পর্যন্ত এ বছরে ২৫ ম্যাচের ২৪টিতে জিতেছে তারা, অন্যটি ড্র। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০ ম্যাচের সবকটিতে জয়ের পথে প্রতিপক্ষের জালে ৪২ বার বল পাঠিয়েছে তারা, হজম করেছে মাত্র ৮টি।
বুন্ডেসলিগা জয়ের পথে ৩৪ ম্যাচে তারা গোলের সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। জার্মান কাপে ছয় ম্যাচের সবকটি জয়ের পথে তাদের গোল সংখ্যা ১৬টি।
এত এত সাফল্য! যার মূলে ওই আক্রমণাত্মক কৌশল, প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা। এর সবচেয়ে সফল প্রয়োগ দেখা গেছে কদিন আগে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে। ৮-২ গোলে তাদের রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের সেই ম্যাচে দেখা মেলে ফ্লিকের দলের ক্ষুণে মানসিকতা।
বায়ার্নের এই কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাদের দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের পজিশনিং। ডিফেন্ডারদের চিরাচরিত পজিশন থেকে তারা অনেকখানি সামনে উঠে খেলেন। এর ফলে প্রতিপক্ষের জন্য আক্রমণ তৈরির জায়গা কমে যায়, যার সঙ্গে অনেক দলই মানিয়ে নিতে পারে না; খেই হারিয়ে বসে।
আছে শঙ্কাও। বিশেষ করে প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগে যদি থাকে গতিময় ফুটবলার। অলিম্পিক লিওঁর বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে যে দুর্ভাবনার উদয়। তবে ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ফ্লিক জানিয়ে দিলেন, শেষ মুহূর্তে নতুন কৌশল প্রয়োগ করতে চান না তিনি।
বার্সেলোনার আক্রমণভাগেও তারকার কমতি ছিল না। রেকর্ড ছয়বারের বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির পাশে ছিলেন অঁতোয়ান গ্রিজমান, লুইস সুয়ারেসের মতো ফরোয়ার্ড। পিএসজিরও অনেকটা সেরকম। বার্সেলোনা ম্যাচ থেকেই আত্মবিশ্বাস খুঁজে নিচ্ছেন গত নভেম্বরে দায়িত্ব পেয়ে বায়ার্নকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলা ফ্লিক।
“পিএসজির আক্রমণভাগে অনেক মানসম্পন্ন শক্তিশালী খেলোয়াড় আছে। অনেকটা বার্সেলোনার মতো। লিওঁর খেলার ধরন অনেকটা সোজাসুজি লাইনে আক্রমণে ওঠা, তারা গোল বরাবর আক্রমণে ওঠে এবং প্রায়ই প্রতিপক্ষের সীমানায় ফাঁকা জায়গায় ফরোয়ার্ডদের থ্রু পাস দেয়।”
“তাই ওই পাসিং জায়গাগুলো বন্ধ করে দেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেন প্রতিপক্ষ ওইসব জায়গায় বল বাড়াতে না পারে। অবশ্যই, পিএসজি শিবিরে অনেক গতিময় ফুটবলার আছে। অবিশ্বাস্য কিছু খেলোয়াড় নিয়ে গড়া উঁচু মানের এক দল। দারুণ রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ হতে যাচ্ছে।”
তবে প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, সাফল্য এনে দেওয়া নিজেদের কৌশলে যে খুব একটা বদল আনবেন না, আবারও জানিয়ে দিলেন ফ্লিক।
“গত ১০ মাসে আমরা সবসময় আমাদের খেলার ধরন প্রতিপক্ষের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছি। সবসময় আমরা ডিফেন্স লাইন ওপরে তুলে খেলেছি এবং শেষ পর্যন্ত সাফল্যও পেয়েছি। তাই, ওই জায়গাটায় আমরা খুব একটা পরিবর্তন আনব না।”