২১ মার্চ থেকে ৬ মে
করোনাভাইরাসের ছোবলে সেরি আ স্থগিত হলো ৯ মার্চ। ইতালির অলিগলি থেকে প্রতিদিনই আসতে থাকল ভাইরাসের সংক্রমণ, মৃত্যুর খবর। শঙ্কা আর আতংকে ভরা সময়। শরীরটা ভালো বোধ না করায় বান্ধবী ওরিয়ানা সাবাতিনিকে নিয়ে কভিড-১৯ টেস্ট করাতে গেলেন দিবালা। ২১ মার্চে রিপোর্ট এলো দুঃসংবাদ নিয়ে-দুজনেই ‘পজিটিভ’। নিয়ম মেনে চলে গেলেন ‘স্বেচ্ছা-আইসোলেশনে’।
দিন ঘুরে মাস যায়। টেস্ট চলে। সেরে ওঠার নামগন্ধ নেই। অবশেষে ৪৬দিন গৃহবন্দী দশার অবসান ৬ মেতে। সুখবর পেলেন দিবালা, টেস্টের ফল নেগেটিভ। এরপর এক সাক্ষাৎকারে দুঃসময়ের স্মৃতিচারণ করতে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড বলেছিলেন, “আমার উপসর্গগুলো বেশ কঠিন ছিল, তবে আজ আমি অনেক ভালো বোধ করছি। এখন চলাফেরা করতে ও হাঁটতে পারি, অনুশীলনের চেষ্টা করছি। কিছুদিন আগে যখন এগুলো করার চেষ্টা করতাম, তখন শ্বাস নিতে কষ্ট হত। পেশিগুলো ব্যথা করত।”
ব্যর্থতায় ভরা ইতালিয়ান কাপ
আইসোলেশন থেকে মুক্তির পর অনুশীলনে ডুব দিলেন দিবালা। ১২ জুন ইতালিয়ান কাপের সেমি-ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ সামনে রেখে নিজেকে ফিরে পাওয়ার জোর প্রচেষ্টা শুরু হলো। এসি মিলানের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে শুরু থেকে খেললেন ২৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু ম্যাচ জুড়ে হাতড়ে বেড়ালেন হারানো ছন্দ, নতুন শুরু রাঙাতে পারলেন না একটুও। গোল পেলেন না; কারো গোলে অবদানও নেই। কিন্তু অ্যাওয়ে গোলে ইউভেন্তুস ফাইনালে ওঠায় আড়ালে পড়ল সব।
বোলোনিয়া ম্যাচ ও গোল
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগেও নিজেকে ঠিক সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি দিবালা। ২৪ ম্যাচের ১৭টিতে ছিলেন শুরুর একাদশে, ৭টিতে খেলেছেন বদলি হিসাবে। কিন্তু গোল মোটে ৭টি! তবে আর্জেন্টিনার করদোবা থেকে উঠে আসা এই ফরোয়ার্ড চলতি লিগে নতুন শুরু করলেন গোল নিয়ে। বোলোনিয়া ম্যাচে ৩৬তম মিনিটে ফেদেরিকো বের্নারদেস্কির ব্যাকহিলে বাড়ানো বল পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দারুণ বাঁকানো শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দিবালা। তার আগে ২৩তম মিনিটে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো স্পট কিক থেকে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। দুই ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে ইউভেন্তুসও আরেকটু এগিয়ে গেল টানা নবম সেরি আ শিরোপা জয়ের পথে।
শরীর থেকে করোনাভাইরাস বিদায় নিয়েছে ঠিকই। কিন্তু ছাপ রেখে গেছে। বোলোনিয়া ম্যাচের পর ইউভেন্তুসের ‘নাম্বার-১০’ নিজেই জানিয়েছেন সে কথা, “সত্যি বলতে, আসলে আমি আজও খুব ভালো অনুভব করছিলাম না। কিন্তু আমি খুশি যে, দারুণ একটা ম্যাচ খেললাম। করোনাভাইরাসের দিনগুলিতে যখন অলস বসে ছিলাম, তখনও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে ফিট থাকার চেষ্টা করেছি।”
২০১৫ সালে পালেরমো থেকে ইউভেন্তুসে পাড়ি জমানোর পর উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন দিবালা। প্রথম মৌসুমের লিগে উপহার দেন ১৯ গোল। পরেরবার গ্রাফ নিম্নমুখী-১১টি। ২০১৭-১৮ লিগে ২২ গোল এখন পর্যন্ত দলটির হয়ে এক লিগে তার সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। গত লিগে ছিলেন বড্ড মলিন, মাত্র ৫ গোল। চোট আর ইউভেন্তুসের সেসময়কার কোচ মাস্সিমিলিয়ানো আল্লেগ্রির সঙ্গে টানাপোড়েনও ছিল অন্যতম কারণ। চলতি লিগ স্থগিত হওয়ার আগে করেন ৭ গোল। নতুন শুরুতে গোল পেয়েছেন। মোট গোলের হিসাবে যদিও আহামরি কিছু নয়, তবে বোলোনিয়া ম্যাচ নতুন পথচলায় আত্মবিশ্বাসী করতেই পারে দিবালাকে।