বল দখলে রাখার চর্চা জামাল-জীবনদের

প্রত্যাশা একটাই-এসএ গেমসে ফুটবলের মুকুট ফিরে পাওয়া। কাঠমাণ্ডুর তীব্র ঠাণ্ডা, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা, টানা খেলার সূচির মতো প্রতিবন্ধকতা ঘিরে ধরেছে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে। তবে সব বাধা জয় করে স্বপ্ন পূরণের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার ছক কষছেন কোচ জেমি ডে।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়ের কাঠমান্ডু থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2019, 11:53 AM
Updated : 30 Nov 2019, 03:06 PM

কাঠমান্ডুর পুলিশ গ্রাউন্ডে শনিবার সকালে ঘণ্টা দুয়েকের অনুশীলন সেরেছে দল। কোচ মাঠকে তিন ভাগ করে ইয়াসিন-জামাল-জীবনদের নিয়ে কাজ করেছেন । ডের শেষ মুহূর্তের অনুশীলনে গুরুত্ব পাচ্ছে বল পজেশনে এগিয়ে থেকে ম্যাচের নিয়ণ্ত্রণ মুঠোয় রাখার বিষয়টি। সঙ্গে রক্ষণ জমাট রেখে দ্রুত আক্রমণে ওঠার কৌশলও।

কাঠমাণ্ডু-পোখারায় আগামী রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) ত্রয়োদশ আসর। পরের দিন শুরু হবে ছেলেদের ফুটবল ইভেন্ট। ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মুকুট পুনরুদ্ধারের মিশনে নামবে দল। ১৯৯৯ সালে প্রথম ছেলেদের ফুটবলে সোনা জয়ের পর ২০১০ সালে দ্বিতীয় ও শেষবার সেরা হয়েছিল বাংলাদেশ। গতবার পেয়েছিল ব্রোঞ্জ।

তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় জামাল ভূইয়া, নাবীব নেওয়াজ জীবন ও ইয়াসিন খান একদল তরুণ সতীর্থ নিয়ে নামবেন সেরা হওয়ার লড়াইয়ে। গত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ১৬ গোল করা ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন অনুশীলন শেষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন প্রস্তুতির খুঁটিনাটি নিয়ে।

“আজকের অনুশীলনে কোচ বেশি কাজ করেছেন বল পজেশন নিয়ে। টিম শেপ নিয়ে। কিভাবে প্রতি-আক্রমণে উঠব এবং কতটা দ্রুত উঠব, বল হারালে দ্রুত পুনরুদ্ধার করা এবং সতীর্থের পায়ে বল থাকলে আমাদের প্রত্যেকের অবস্থান কোথায় হবে সেগুলো খুব ভালোভাবে বুঝিয়েছেন। তিন ভাগে মাঠ সাজিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কোচ। কাজ হয়েছে ফিনিশিং নিয়েও।”

“প্রস্তুতি ভালো। দলের সবাই ভালো অবস্থায় আছে। সেরা হওয়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আমাদের মাঠে সেরাটা খেলতে হবে। সেটা দিতে পারলে আশা করি, কাঙ্ক্ষিত পদক নিয়ে দেশে ফিরতে পারব আমরা।”

“শুরুর দিকে এখানে এসে ঠাণ্ডায় প্রস্তুতি নিতে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু এ দুই দিনে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছি। আজকের প্রস্তুতিতে আশা করি আরও মানিয়ে নিতে পারব। এখানে আমাদের মূল সমস্যা হচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা। এ কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।”

 

টিম হোটেল মানাংয়ের লবিতে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় সাদউদ্দিনও কাঠমাণ্ডুর ঠাণ্ডা, প্রতিকূল পরিবেশ নিয়ে কথা বললেন। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে গোল করা এই উইঙ্গার জানালেন লক্ষ্যটাও।

“আমরা কদিন আগে এসেছি এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। ইনশাল্লাহ সবাই ভালো আছে। মানিয়ে নিয়েছে। পাঁচ দিনে চারটা ম্যাচ-এটা একটু কঠিন। কারণ রিকোভারীরর সময় কম। তবে এ পরিস্থিতি সবার জন্যই সমান। সবাই এভাবেই খেলবে। আশা করি, ওটা বড় কোনো ফ্যাক্ট হবে না আমাদের জন্য। চেষ্টা করব ভালো কিছু করার।”

চার প্রতিপক্ষের মধ্যে স্বাগতিক নেপালই বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণের পথে মূল বাধা। গতবারের চ্যাম্পিয়নরা তারা; এবার খেলবেও চেনা মাঠ দশরথ স্টেডিয়ামে, নিজেদের দর্শকের সামনে। জীবনের আপাতত ভাবনা অবশ্য ভুটানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ নিয়ে।

“আমার মনে হয়, নেপালই আমাদের মূল প্রতিপক্ষ হবে। কেননা, ওরা নিজেদের মাঠে, দর্শকের সামনে খেলবে। তবে আমাদের জন্য ভুটানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। গত দুই ম্যাচে ওদেরকে আমরা হারিয়েছি। ওই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।”

সাদ জানালেন কোনো প্রতিপক্ষকে হালকা ভেবে প্রস্তুতি না নেওয়ার কথা। প্রাপ্তির চূড়ায় পৌঁছাতে সবাইকে সেরাটা নিংড়ে দিতে হবে বলে মনে করেন ২১ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়। জাতীয় দলের হয়ে দুটি প্রীতি ম্যাচে ভুটানকে ৪-১ ও ২-০ গোলে হারানোর সুখস্মৃতিও আওড়ালেন এই তরুণ।

“ভারত খেলবে না বলে কোনো রিল্যাক্স নেই আমাদের মধ্যে। নেপাল অনেক ভালো দল। তারা নিজেদের মাঠে খেলবে। সব প্রতিপক্ষকে আমরা সমানভাবে দেখি। কাউকে ছোট করে দেখি না।“

“প্রথম ম্যাচ সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করব সবাই শেষবার যেভাবে ভুটানের বিপক্ষে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে খেলেছি, সেভাবে খেলতে। তাহলে ভুটানকে হারাতে পারব।”