ভুল স্বীকার করে সময় চাইলেন বাংলাদেশ কোচ

এ ম্যাচেও বাংলাদেশ প্রথম গোল হজম করল গোলরক্ষক রুপনা চাকমার ভুলে। ভারতের খেলোয়াড়দের গতি ঠিকমতো বুঝতে না পেরে নিজেদের পোস্ট অরক্ষিত রেখে পরের দুই গোল খেল দল। এরপর যোগ করা সময়ে হারের ব্যবধান বাড়ল আরও। ম্যাচ শেষে ভুলগুলো স্বীকার করে নিয়ে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন সময় চাইলেন আরও।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরনেপালের বিরাটনগর থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2019, 01:58 PM
Updated : 20 March 2019, 01:58 PM

নেপালের বিরাটনগরের শহীদ রঙ্গসালা স্টেডিয়ামে বুধবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনালে ৪-০ গোলে হারে বাংলাদেশ। গতবার ফাইনালে ভারতের কাছে হেরেই শিরোপা স্বপ্ন গুঁড়িয়েছিল সাবিনা-কৃষ্ণাদের।

প্রথম গোল হজমের আগ পর্যন্ত দারুণ খেলছিল দল। কিন্তু অষ্টাদশ মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল রুপনার গ্রিপে নিতে যাওয়ার ভুলটুকু দিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার শুরু বলে জানালেন রব্বানী।

“আপনারা সবাই দেখেছেন মেয়েরা ভালো শুরু করেছিল। ১৭ মিনিট পর্যন্ত যদি বিশ্লেষণ করেন, দেখবেন আমরাই এগিয়ে ছিলাম। এরপর আবার সেই নিজেদের ভুল থেকে গোল খেয়ে আসলে ছন্নছাড়া হয়ে গেছি। ভুলে গোল খাওয়ার পর আর মেয়েরা খেলায় ছিল না।”

“কর্নারের ওই বল যদি রুপনা গ্রিপ না করে ফিস্ট করত বা কোনো ডিফেন্ডার হেড করত তাহলে কিন্তু অন্য কিছু হতে পারত। যেহেতু তাদের বয়স কম, তারা এই ছোটখাট ভুলগুলো করছে। এটাই স্বাভাবিক। মেয়েরা যেহেতু তরুণ, গোল খাওয়ার পর তারা আসলে চাপটা নিতে পারে না।”

“এটা বুঝতে হবে ভারত অনেক পরিপক্ক দল। আমি আগেও এটা বলেছি। আসলে গোল খাওয়ার পর দল নার্ভাস হয়ে যায়। গোল খাওয়ার আগ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক ছিল, গোল খাওয়ার পর ব্রেক হয়ে গেছে। এই জায়গায় উন্নতি করতে হবে।”

সাফের ইতিহাসে কখনও হারের স্বাদ না পাওয়া ভারতের বিপক্ষে রক্ষণ ছেড়ে আঁখি-মাশুরা বারবার উপরে উঠে গেছেন। শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র পারেননি ইন্দুমতি, মনীষাদের আটকে রাখতে। রব্বানীও মেনে নিলেন ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতা।

“মেয়েদের যেখানে থাকার কথা ছিল, সেখানে তারা ছিল না। একসাথে হয়ে যাওয়ায় ইন্দুমতি ফ্রি হয়ে গেছে এবং এ কারণে গোল হয়েছে। শিউলি রাইট ব্যাক ছিল তার মার্ক করার দায়িত্ব ছিল কিন্তু ১৭ মিনিট পর্যন্ত সে পেরেছে। এরপর পারেনি।”

সাফ, অলিম্পিক বাছাই, এসএ গেমস মিলিয়ে এ নিয়ে ১০ ম্যাচে নয়বার ভারতের কাছে হারল বাংলাদেশ। তবে গত নভেম্বরে মিয়ানমারের হারের চেয়ে ব্যবধান কম হওয়ায় কোচের দাবি ভালো খেলেছে তার দল।

“মিয়ানমারে ভারতের কাছে ৭-১ গোলে হেরেছিলাম। সেখানে আমরা দাঁড়াতেই পারেনি। আজ ম্যাচে মেয়েরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে এবং খেলার চেষ্টা করেছে। গোল হয়েছে কিন্তু খেলার চেষ্টা করেছে-এটাও আপনাদের দেখতে হবে।”

“গত সাফে যেভাবে লড়াই করেছি, এবারও সেই চেষ্টা করেছে মেয়েরা। এখানেও ভালো খেলেছি আমরা।”

টানা পঞ্চমবারের মতো ফাইনালে উঠে দারুণ খুশি ভারত কোচ মায়মল রকির প্রশংসাও পেয়েছে বাংলাদেশ দল।

“এটা মোটেও সহজ ম্যাচ ছিল না। আমরা শুরুর ১০-১৫ মিনিট খুবই সংগ্রাম করেছি। এরপর মেয়েরা গতির সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গোল পেয়েছে এবং প্রথমার্ধেই তিন গোল করে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ আসলেই খুব ভালো খেলেছে।”

“বয়সভিত্তিক ফুটবলে আমার মনে হয় গত দুই বছরে বাংলাদেশ খুব ভালো করছে। এএফসির মূল পর্বে যে দল উঠেছে তাদের প্রায় সবাইকে আমি এই সিনিয়র দলে দেখছি। তাদের সময় দিতে হবে। আমার মনে হয় সময় পেলে সাফে বাংলাদেশ একটা ভালো দল হয়ে উঠবে।”

নিজ দলের খেলোয়াড়দের গড় বয়স ১৭ বছরের একটু বেশি বলে বয়স ও অভিজ্ঞতার কমতির প্রসঙ্গ হরহামেশাই টানেন রব্বানী। তবে ভারত কোচ রকি বিষয়টা ওভাবে দেখেন না। 

“আমাদের দলে অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলের কোনো সদস্য নেই। তবে আমি বলব না এটা অভিজ্ঞতার কাছে তারুণ্যের হার। আমাদের মেয়েদের গড় বয়স ২১ বছর চার মাস। বেশিরভাগ সিনিয়র খেলোয়াড় এ দল থেকে বেরিয়ে গেছে। যারা আছে তারাও ভালো খেলোয়াড় বলে দল জিতেছে।”