বায়ার্নের আক্রমণ সামলে ফাইনালে রিয়াল

আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা বায়ার্ন মিউনিখকে সামলাতে পেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বারবার চিত্রপট পাল্টানো ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হওয়ায় টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে জিনেদিন জিদানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2018, 08:39 PM
Updated : 2 May 2018, 04:56 AM

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে মঙ্গলবার রাতে সেমি-ফাইনালের ফিরতি পর্ব ২-২ ড্র হয়। গত সপ্তাহে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ২-১ গোলে জেতা রিয়াল ৪-৩ অগ্রগামিতায় ফাইনালে ওঠে।

স্বাগতিকদের করিম বেনজেমার জোড়া গোলের একটি বায়ার্ন গোলরক্ষক স্ভেন উলরাইশের মারাত্মক ভুলে পাওয়া। অন্যপ্রান্তে বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ ঠেকিয়ে রিয়ালের ত্রাতা গোলরক্ষক কেইলর নাভাস।

ইউরোপ সেরার মঞ্চে রিয়ালের বিপক্ষে টানা পাঁচ হারের বৃত্ত ভেঙে ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে শুরুটা ভালোই করেছিল বায়ার্ন। ঘরের মাঠে দলকে এগিয়ে দেওয়া জসুয়া কিমিচ ফিরতি পর্বের শুরুতেও জালের দেখা পান।

তৃতীয় মিনিটে ডান দিক থেকে আসা ক্রস গোলমুখে ফেরাতে পারেননি সের্হিও রামোস। বল চলে যায় ডি-বক্সে থাকা কিমিচের পায়ে। ঠাণ্ডা মাথায় কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন জার্মান এই ডিফেন্ডার।

পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি রিয়াল। একাদশ মিনিটে দূর থেকে মাতেও কোভাসিচের বাড়ানো ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ক্রস করেন মার্সেলো। হেডে বল ঠিকানায় পাঠান অরক্ষিত অবস্থায় থাকা করিম বেনজেমা।

৩৩তম মিনিটে ফের এগিয়ে যেতে পারতো বায়ার্ন। কিন্তু রবের্ত লেভানদোভস্কির কোনাকুনি শট কেইলর নাভাস পা দিয়ে ঠেকানোর পর আলগা বল গোলমুখে পেয়ে সুযোগ নষ্ট করেন হামেস রদ্রিগেস।

প্রথম লেগের মতো নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধেও বলের দখল পেতে লড়াই করতে দেখা যায় রিয়ালকে। বিরতির ঠিক আগে আরও বিপদে পড়তে পারতো তারা। কিমিচের ক্রসে বল মার্সেলোর হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে অতিথিরা। তবে রেফারি সাড়া দেননি।

দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই উলরাইশের মারাত্মক ভুল। ফরাসি মিডফিল্ডার তোলিসোর ব্যাকপাস ঠেকাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন বায়ার্নের দ্বিতীয় পছন্দের গোলরক্ষক। তাকে ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় গোলমুখে, ছুটে গিয়ে অনায়াসে বাকি কাজটুকু সারেন বেনজেমা।

পাঁচ মিনিট পর দাভিদ আলাবার শট ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের পায়ে লেগে জালে ঢুকতে যাচ্ছিল। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকান নাভাস। খানিক পর সহজ দুটি সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো। গোলমুখে বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হওয়ার পর মার্সেলোর ক্রস ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

৬৩তম মিনিটে ম্যাচটা আরও জমিয়ে তোলেন হামেস রদ্রিগেস। তার প্রথম শট ভারানের পায়ে প্রতিহত হয়। ফিরতি বল পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে নিচু শটে নাভাসকে পরাস্ত করেন। গোলটি অবশ্য উদযাপন করেননি এ মৌসুমের শুরুতে বের্নাবেউ থেকে জার্মান ক্লাবটিতে ধারে খেলতে যাওয়া কলম্বিয়ার এই মিডফিল্ডার।

আরেকটি গোল পেলেই বেশি অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে ফাইনাল, তাই মরিয়া হয়ে ওঠে বায়ার্ন। তবে ৭৪তম মিনিটে নাভাসের নৈপুণ্যে আরেক দফা বেঁচে যায় রিয়াল; তোলিসোর কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। শেষ কয়েক মিনিট রিয়ালের রক্ষণে একচেটিয়া চাপ ধরে রেখেও কাঙ্ক্ষিত গোল আর পায়নি বায়ার্ন।

অপর সেমি-ফাইনালের ফিরতি পর্বে বুধবার মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও রোমা। ওই লড়াইয়ের বিজয়ীর সঙ্গে আগামী ২৬ মে ইউক্রেনের কিয়েভে ফাইনালে লড়বে রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।