সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়াই লক্ষ্য মেয়েদের

তিন মাসের নিবিড় প্রস্তুতির সন্তুষ্টি আছে। থাইল্যান্ডে খেলে আসা দলের ১১ জনের অভিজ্ঞতাও যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে বাংলাদেশ দারুণ আশাবাদী। কোচ, খেলোয়াড় সবাই লক্ষ্যের কথা জানাতে প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলেছেন-চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2017, 01:39 PM
Updated : 12 Dec 2017, 01:39 PM

আগামী ১৭ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে চার দল নিয়ে শুরু হবে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসর। স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান লড়বে শিরোপার জন্য।

দলসংখ্যা বেশি না হওয়ায় রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলা হবে। সেরা দুই দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে। নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ২৩ জনের দলে দুই নতুন মুখ থাকার কথা জানান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় হওয়া জেএফএ কাপ থেকে ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার (ময়মনসিংহ জেলা) ও গোলরক্ষক সাগরিকা (ঠাকুরগাঁও জেলা)  ঠাঁই পেয়েছেন দলে।

গত সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে খেলে আসা দলের ১১ জনই আছেন সাফ মিশনে। নেপালে (২০১৫), তাজিকিস্তানে (২০১৬) হওয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় এই প্রতিপক্ষদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। ছোটন তাই দল নিয়ে দারুণ আশাবাদী।

“এ টুর্নামেন্ট সামনে রেখে তিন মাস ধরে আমরা প্রস্তুতির মধ্যে আছি। থাইল্যান্ডে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে যে ২৩ জন খেলেছিল, সেই দলের ১১ জন এই দলে আছে। মেয়েরা খেলার মধ্যে আছে। সবাই মেয়েদের ফুটবল নিয়ে মনোযোগী। আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া।”

“প্রতিপক্ষ দলগুলো নিয়ে আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে-এই দলগুলোর বিপক্ষে আমরা আগেও খেলেছি এবং জিতেছি।”

আগে থেকে দলে থাকা আরেক ডিফেন্ডার শামসুন্নাহারের ভূমিকার বদল হচ্ছে। ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার বয়সের কারণে খেলতে না পারায় ডিফেন্ডার থেকে ফরোয়ার্ড হয়ে যাচ্ছেন শামসুন্নাহার। ছোটনের বিশ্বাস নতুন ভূমিকাতেও সফল হবে তার শিষ্য।

“শামসুন্নাহার ডিফেন্ডার হলেও আমরা দেখেছি সে দ্রুত ওপরে উঠে যায় এবং আক্রমণ করে। আমাদের মনে হয়েছে, ফরোয়ার্ড হিসেবে ভালো খেলবে এবং আমার বিশ্বাস এই টুর্নামেন্টে আপনারা সেটা দেখতেও পাবেন। বয়সের কারণে কৃষ্ণারা খেলতে পারছে না। আমি মনে করি, সেই জায়গাটা সে পূরণ করতে পারবে।”

দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের ফুটবল নিয়ে কাজ করা বাফুফের স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি অবশ্য জানালেন দুটি লক্ষ্যের কথা, “সাফে আমাদের দুইটা লক্ষ্য। প্রথমত শিরোপা জেতা। দ্বিতীয়ত ভালো খেলা উপহার দেওয়া।”

দেশের মাঠে খেলা বলে বাড়তি কোনো চাপ অনুভব না করার কথা জানান মারিয়া মাণ্ডা। লক্ষ্যের প্রশ্নে এই মিডফিল্ডারও সুর মেলালেন কোচের সঙ্গে।

“দেশের মাটিতে খেলা। ভালো খেলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। আমরা কিছুদিন আগে থাইল্যান্ডে খেলে এসেছি। এর আগে নেপাল ও তাজিকিস্তানে অনূর্ধ্ব-১৪ টুর্নামেন্টে ভারতকে হারিয়েছে। তাদেরকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা নিজেদের সেরাটা খেলেই চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।”

“দেশের মাটিতে খেলা বলে আমরা কোনো চাপে নেই। প্রথম ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ম্যাচে জিততে পারলে পরের ম্যাচগুলো আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।”

বাংলাদেশ দল: মাহমুদা আক্তার, রুপনা চাকমা, সাগরিকা, আঁখি খাতুন, নাজমা, আনাই মগিনি, নীলুফার ইয়াসমিন নীলা, দীপা খাতুন, রুনা আক্তার, রুমি আক্তার, মারিয়া মাণ্ডা, মণিকা চাকমা, তহুরা খাতুন, লাবনী আক্তার, শামসুন্নাহার-১, মুন্নী আক্তার, সোহাগী কিসকু, আনুচিং মগিনি, শামসুন্নাহার-২, মার্জিয়া, সাজেদা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা ও সুলতানা পারভীন।