জার্মানির বিপক্ষে প্রতিশোধের আশায় গোটা ব্রাজিল

হন্ডুরাসের বিপক্ষে প্রথম সেমি-ফাইনাল ম্যাচটির প্রথমার্ধ তখনও শেষ হয়নি, ব্রাজিল ৩-০ গোলে এগিয়ে; স্বাগতিক দেশের সমর্থকরা চিৎকার করতে শুরু করে, “জার্মানি, অপেক্ষা করো, তোমাদের সময় আসছে।”

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2016, 01:26 PM
Updated : 18 August 2016, 01:26 PM

জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে দেশের মাটিতে ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েছিল ব্রাজিল। সেই ম্যাচের প্রতিশোধের জন্য মরিয়া অপেক্ষা করছে দেশটির ফুটবল-পাগল মানুষ। তারা চেয়েছিল রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে নাইজেরিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠুক জার্মানি।

কয়েক ঘণ্টা পর ব্রাজিলের সমর্থকদের ইচ্ছা পুর্ণ হয়; নাইজেরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে জার্মানি।

আগামী শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটায় জার্মানির বিপক্ষে সোনার লড়াইয়ে নামবে নেইমাররা।

বাংলাদেশ সময় বুধবার রাতে হন্ডুরাসকে ৬-০ গোলে হারিয়ে মারাকানা স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা জানত না, জার্মানি নাইজেরিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে উঠবে কিনা। কিন্তু তারা ফাইনালে উঠেছে এবং ব্রাজিলের ফুল-ব্যাক দগলাস সান্তোসের জন্য এটা ভালো খবর।

ব্রাজিলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই ম্যাচটিকে অবশ্য প্রতিশোধের উপলক্ষ হিসেবে দেখতে নারাজ। তবে সান্তোস মনে করেন, এই ম্যাচে মারকানা স্টেডিয়ামের আবহটা একটু অন্যরকমই থাকবে।

“আমি এটাকে প্রতিশোধ হিসেবে দেখি না, আমার কাছে এটা একটা সুযোগ। সমর্থকরা যে কঠিন হারের কথা বলে, সেটা উল্টে দেওয়ার একটা সুযোগ হবে এটা। ঈশ্বর চাইলে, আমরা এই স্কোর লাইনটা উল্টে দিতে পারি।”

দুই দলেরর কেউই এখনও অলিম্পিক সোনা জেতেনি। ১৯৭৬ সালে কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানি অলিম্পিক ফুটবলের সোনা জিতেছিল বটে, তবে সেটা এই জার্মানির ক্ষেত্রে অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক।

অলিম্পিক ফুটবলে মূলত কোনো দেশের অনূর্ধ্ব-২৩ দল খেলে। তবে কোচ চাইলে তিন জন বেশি বয়সী খেলোয়াড় দলে নিতে পারেন। অলিম্পিক ফুটবলে সোনার পদকের অভাব মেটাতে মরিয়া ব্রাজিল বেশি বয়সীর কোটায় দেশের সেরা খেলোয়াড় নেইমারকে দলে রাখে।

ফাইনালের দুই দল মিলিয়ে একমাত্র বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড নেইমারের আছে ২০১৪ বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা। তবে চোটের কারণে তিনি জার্মানির বিপক্ষে সেমি-ফাইনালের সেই ম্যাচে খেলতে পারেননি।

আক্রমণভাগে নেইমারের সঙ্গে আছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে নাম লেখানো তরুণ তারকা গাব্রিয়েল জেসুস আর ‘গাবিগোল’ নামে পরিচিত সান্তোসের গাব্রিয়েল বারবোসা। আর রক্ষণে আছে পিএসজির ডিফেন্ডার মারকুইনিয়োসের মতো নাম। 

অন্যদিকে জার্মানির অলিম্পিক দলে নেই দেশের সেরা ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের কোনো খেলোয়াড়। শীর্ষ চারের মধ্যে থেকে গত মৌসুমে লিগ শেষ করা অন্য তিন দলের কেবল ৪ জন খেলোয়াড় আছে।

জার্মানির বেশি বয়সী তিনজন খেলোয়াড় মিলে জার্মানির হয়ে ২৬টি ম্যাচ খেলেন। আর ব্রাজিলের বেশি বয়সী তিনজন মিলে খেলেছেন ৮১টি ম্যাচ। অভিজ্ঞতার দিক থেকে এগিয়ে থাকার সঙ্গে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধাও আছে ব্রাজিলের।

হন্ডুরাসের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ব্রাজিল দলকে উৎসাহ জুগিয়েছে ৫২ হাজার সমর্থক। ম্যাচটি শেষে গাব্রিয়েল জেসুস বলেন, “সমর্থকরা আমাদের সাহায্য করে। এটা একটা পার্থক্য গড়ে দেয়। আমি নিশ্চিত, তারা শনিবার আমাদের আরও বেশি সাহায্য করবে।”