স্প্যানিশ ফুটবল
রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্রমেই আপন রূপে নিজেকে মেলে ধরছেন কিলিয়ান এমবাপে, তাকেই বিশ্বের সেরা মনে করেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি।
Published : 20 Jan 2025, 11:02 AM
সমালোচনার তির ধেয়ে এসেছে চারপাশ থেকে। কিন্তু বর্ম হয়ে কিলিয়ান এমবাপেকে রক্ষা করেছেন কার্লো আনচেলত্তি। রেয়াল মাদ্রিদের কোচ বরাবরই তার আস্থার কথা বলেছেন এই ফরোয়ার্ডের পারফরম্যান্সে। এখন মলিনতা সরিয়ে এমবাপে যখন আপন আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছেন ক্রমেই, আনচেলত্তিও তাতে দারুণ গর্বিত।
লা লিগায় রোববার লাস পালমাসের বিপক্ষে ম্যাচে দুটি গোল করেছেন এমবাপে। তার জোড়া গোলের সঙ্গে ব্রাহিম দিয়াস ও রদ্রিগোর গোলে রেয়াল মাদ্রিদ জিতেছে ৪-১ গোলে। এই জয় রেয়ালকে পৌছে দিয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
কিছুদিন আগে পর্যন্তও অনেক সমালোচনার শিকার হচ্ছিলেন এমবাপে। আকাশচুম্বি প্রত্যাশা সঙ্গী করে পিএসজি থেকে রেয়ালে পাড়ি জমালেও অনেকটা অচেনা হয়েই ছিলেন তিনি। মাঝমধ্যে ঝলক দেখালেও ছিল না ধারাবাহিকতা। তবে সেই সময়টা পেছনে ফেলে এখন স্বরূপে ফেরার পথে ২৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
সবশেষ তিন ম্যাচে চারটি গোল করলেন তিনি। লা লিগায় ১২ গোল নিয়ে এখন তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল হয়ে গেল ১৮টি।
মৌসুমের অনেকটা সময় ধরে টানাপোড়েন ছিল তার পজিশন নিয়েও। আক্রমণভাগে নানা জায়গায় তাকে বাজিয়ে দেখা হয়েছে। তবে এখন তার আসল পজিশন খুঁজে পেয়েছেন আনচেলত্তি, যেখানে তাকেই বিশ্বের সেরা মনে করেন কোচ।
“এমবাপে বিশ্বের সেরা সেন্টার ফরোয়ার্ড। লোকের সংশয় ছিল সে এই পজিশনে খেলতে পারে কি না। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো সংশয় থাকাই উচিত নয়।”
“সে দুর্দান্ত এক স্ট্রাইকার, যে উইংয়ের চেয়ে মাঝখানে খেললেই বেশি ভালো। কারণ, এখানেই সে তার গতি ও টেকনিক দিয়ে আক্রমণে ছুটতে পারে, যেখানে সে অনন্য।”
এই জয়ের পর ২০ ম্যাচে রেয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৪৬। দুইয়ে থাকা আতলেতিকো মাদ্রিদ আছে দুই পয়েন্ট পেছনে। ৩৯ পয়েন্ট বার্সেলোনা ও আথলেতিক বিলবাওয়ের।
অথচ এই মৌসুমে আনচেলত্তিকে নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। লিগে অধারাবাহিক ছিল দল। কদিন আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে তারা বিধ্বস্ত হয় ৫-২ গোলে। কোপা দেল রেতে সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ সময়ে দুটি গোল হজম করায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ঘরের মাঠেই সেদিন প্রবল দুয়ো শুনতে হয় রেয়াল মাদ্রিদকে।
সেই দুয়োকে পরে স্বাগত জানিয়ে আনচেলত্তি বলেছিলেন, তার দলের জন্য এটা প্রেরণাদায়ক ও জেগে ওঠার ডাক। একই কথা কোচ বললেন আবারও। তবে সমালোচকদের দিকে ইঙ্গিত দিতেও তিনি ভুললেন না।
“কঠিন সময়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আত্মসমালোচনা ও ইতিবাচকতা জরুরি। সমালোচনা থাকবেই, অনেক সময় বেশি কিছুও হবে। বের্নাবেউয়ে দুয়ো দেওয়া হয়েছিল আমাদের, কারণ সমর্থকেরা খুশি ছিল না। এটা আমাদেরকে উজ্জীবিত করেছে। দলের জন্য এটা ছিল জেগে ওঠার কার্যকর এক ডাক। ছেলেরা সাড়া দিয়েছে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে।”
“ফুটবল খেলাটাই এমন। তবে আমি এখনও একটা ব্যাপার নিয়ে ভাবছি। শুনেছি যে লোকে বলেছে, আমরা খুব খারাপ ফুটবল খেলেছি এই মৌসুমে। অথচ আজকে আমরা লা লিগার পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। গবেষণা চালিয়ে যাব, দেখব আমি ভুল কি না।”