কোপা আমেরিকা
কোপা আমেরিকা দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলতে যাওয়া আর্জেন্টাইন তারকা ফরোয়ার্ড কানাডা ম্যাচ শেষে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
Published : 10 Jul 2024, 05:16 PM
লাতিন আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার যাত্রা শেষ তো, আনহেল দি মারিয়ারও পথের সমাপ্তি। জাতীয় দলের জার্সিতে দীর্ঘ দিনের সতীর্থের শেষ সময়টা যতটা সম্ভব লম্বা করতে চান লিওনেল মেসি। কানাডার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তিনি বললেন, ফাইনালে যেতে চান দি মারিয়ার জন্য। অধিনায়কের কথায় সে সময় আবেগ যেন ছুঁয়ে গিয়েছিল অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ডকে।
বছর দুয়েক আগে কাতার বিশ্বকাপ দিয়েই জাতীয় দলকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন দি মারিয়া। তবে তাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের বেশে দেশের হয়ে কিছু ম্যাচ খেলে যাওয়ার পরামর্শ দেন মেসিই। এরপর গত অক্টোবরে এবারের কোপা আমেরিকা দিয়ে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন দি মারিয়া। নিজের সিদ্ধান্তে এখনও অনড় ৩৬ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।
দেশের জার্সি গায়ে শেষ টুর্নামেন্টে সতীর্থকে ভালো কিছু উপহার দেওয়ার ইচ্ছা মেসির। বুধবার কানাডার বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে নামার আগে তাই দলের সবাইকে যেকোনো মূল্যে ম্যাচটি জেতার তাগিদ দেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
শেষ পর্যন্ত তার চাওয়াই পূরণ হয়েছে। কানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচটিতে শিরোপাধারীদের হয়ে ৭৮ মিনিট খেলেন দি মারিয়া।
ম্যাচ শেষে তিনি কৃতজ্ঞতা জানান, এতদিন তার পাশে থাকা সবাইকে। এরপর চোখে জল নিয়ে তুলে ধরেন, দলের প্রতি মেসির সেই বার্তা।
“যারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছেন, আমার পরিবার এবং এই দল যারা আমাকে সবকিছু দিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আজ মাঠে নামার আগে লিও (মেসি) বলেছিল, তারা আমার জন্য ফাইনালে উঠতে চায় এবং এটা আমাকে গর্বিত করেছে। তাদের সবার সঙ্গে এই শেষ সময়ে যা কিছু অর্জন করেছি, তা অর্জনের সুযোগ পাওয়াটা আমার জন্য গর্বের।”
আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মাঠে গড়াবে এবারের কোপা আমেরিকার ফাইনাল। শিরোপা জেতার লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে কলম্বিয়া বা উরুগুয়েকে।
সেই লড়াইয়ের জন্য এখনও প্রস্তুত নন গত কোপা আমেরিকার ফাইনালের নায়ক দি মারিয়া। তার গোলেই ব্রাজিলকে হারিয়ে দীর্ঘ খরা কাটিয়ে বড় কোনো শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা।
“জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচের জন্য এখনও আমি তৈরি না। তবে এটাই সঠিক সময়। এভাবেই হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি আর সেভাবেই শেষ হতে যাচ্ছে, আরেকটি ফাইনালে পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে।”
“সতীর্থরা জানে, আর ফেরার সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে। আমার নেওয়া এই সিদ্ধান্ত তারা সমর্থন করেছে। আর একটি ম্যাচই কেবল বাকি। স্বপ্নের মতো করে শেষ হচ্ছে, আর এটাই আমি চেয়েছিলাম। আমার মনে হয়, এখনও আমি চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু আমার মনে হয় এটাই সঠিক সময়। আর্জেন্টিনায় ওদের বাছাইয়ের ম্যাচ আমি দেখতে যাব।”
আবেগের রাতে ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টেও সতীর্থদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন ৩৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
“আমার ভেতরে এই মুহূর্তে যা চলছে, তা প্রকাশ করার মতো ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। এই ছেলেদের প্রতি আমি যে কতটা কৃতজ্ঞ সেটা আমি তুলে ধরতে চাই। আজ যেখানে আছি সেখানে আসার পেছনে এদের প্রত্যেকেরই অবদান আছে। এদের কোনো একজনকে ছাড়া আমি যা জিতেছি এর সব জিততে পারতাম না।”
“অনেক ট্রফি আমি বাড়ি নিয়ে গেছি তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সতীর্থ, স্বজনরা। এগুলো টাকা দিয়ে কেনা যায় না। এই দলের সবাইকে অন্তহীন ধন্যবাদ। ওদের কথা সবসময়ই আমার হৃদয়ে থাকবে। চলো, আর্জেন্টিনা। আরেকটি ফাইনাল, আরেকটি পদক্ষেপ।”