১ কোটি ৬০ লাখের বেশি ডলার ঘুষ নেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন চীনের সাবেক মিডফিল্ডার ও সাবেক কোচ লি টাই।
Published : 13 Dec 2024, 05:55 PM
ঘুষ দেওয়া ও নেওয়ার অপরাধে বড় শাস্তি পেয়েছেন চীনের ইতিহাসের সেরা ফুটবলারদের একজন ও জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ লি টাই। তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ম্যাচ ফিক্সিং, ঘুষ নেওয়া এবং শীর্ষ পর্যায়ে কোচের চাকরি পাওয়ার জন্য ঘুষ দেওয়ার কথা এই বছরের শুরুতে স্বীকার করেন একসময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এভারটনের হয়ে খেলা লি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের ফল হিসেবে দেখা হচ্ছে লির এই মামলাকে।
এই সপ্তাহে চাইনিজ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (সিএফএ) তিন সদস্যকেও ঘুষের দায়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া এক ডজনের বেশি কোচ ও খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে।
৪৭ বছর বয়সী লি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চীন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ছিলেন। ১ কোটি ৬০ লাখের বেশি ডলার ঘুষ নেওয়ার জন্য গত মার্চে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
আদালত বলেছে, এসব ঘটনা ঘটেছে ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত সময়ে। ২০১৫ সালের অগাস্ট থেকে এক বছর চায়না ফরচুন ক্লাবে সহকারী কোচ ছিলেন লি।
এই বছরের শুরুতে চীনের সরকারি সম্প্রচারক সিসিটিভিতে লির দুর্নীতির একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। যেখানে নিজের অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি।
“আমি খুবই দুঃখিত। আমার উচিত ছিল সঠিক পথ অনুসরণ করা। কিছু বিষয় সেই সময়ে ফুটবলে বেশ প্রচলিত ছিল।”
সাবেক ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার লি চীনের হয়ে খেলেছেন ৯২ ম্যাচ। ২০০২ বিশ্বকাপেও খেলেছেন তিনি। বিশ্বকাপে দেশটির একমাত্র অংশগ্রহণ সেটিই।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে ম্যাচ ফিক্সিং ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে চাইনিজ ফুটবল। জাতীয় দলের ধারাবাহিক বাজে পারফরম্যান্সের জন্য দুর্নীতিকেই দায়ী করে থাকে সমর্থকরা।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্ষমতায় এসে আশা প্রকাশ করেন যে, চীন দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করবে, তারপর এই টুর্নামেন্টের আয়োজক হবে এবং একদিন ট্রফি জিতবে।
শি জিনপিংয়ের সরকার ব্যাপক দুর্নীতিবিরোধী প্রচারাভিযান শুরু করে। এক কোটি ১০ লাখ ডলার ঘুষ নেওয়ার জন্য এই বছরের শুরুতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় চাইনিজ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (সিএফএ) সাবেক প্রধান চেন হুয়ানকে।
দুর্নীতির দায়ে এই বছর ফুটবলের আরও বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তাকে আড়াই বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়৷
ম্যাচ ফিক্সিং ও জুয়া নিয়ে দুই বছরের তদন্তের পর গত সেপ্টেম্বরে ৩৮ জন খেলোয়াড় ও পাঁচ জন ক্লাব কর্মকর্তাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে সিএফএ। তদন্তে দেখা যায়, ১২০টি ম্যাচে ফিক্সিং করা হয়েছে, যেখানে জড়িত ৪১টি ক্লাব।