এশিয়ান কাপ বাছাই
শিলংয়ের ঠাণ্ডায় দলের ক্যাম্পে বইছে আত্মবিশ্বাসের উষ্ণ স্রোত, ‘এবার হবে।’
Published : 22 Mar 2025, 11:55 PM
মূল প্রস্তুতি শুরুর আগে গা-গরমের পর্বে দেখা মিলল দৃশ্যটির। এই পর্বে পাসিং অনুশীলনের জন্য ‘চোর-পুলিশ’ খেলা হয়। তা শুরু হলো হামজাকে ‘চোর’ বানিয়ে! খুব বেশিক্ষণ অবশ্য তাকে আটকে রাখতে পারলেন না তপু-জামাল-হৃদয়রা। তবে, যতটুকু সময় আটকে রাখা গেল, ততক্ষণ চলল বাকিদের আনন্দ-উল্লাস। হাসিমুখে সময়টুকু কাটালেন হামজাও।
শিলং স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের টার্ফে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় অনুশীলনে নামার আগে বাংলাদেশ দলের আবহে এই হাসি-খুশি অবশ্য ছিল না। থাকবেই বা কী করে? অনুশীলনের সময় বদলানোয় হোটেলে হামজাদের বন্দি থাকতে হয়েছে দীর্ঘক্ষণ। অথচ আগামী মঙ্গলবার এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হতে হবে। এ মুহূর্তে প্রতিটি সেকেন্ড মহামূল্যবান।
এদিন প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ছয়টায়, কিন্তু একই সময় ভারত দল জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি নেওয়ায় পিছিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রস্তুতির ক্ষণ। এক ঝটকায় সেটা চলে যায় সাড়ে সাতটায়, ততক্ষণে শিলংয়ে ঠাণ্ডা বাড়ে আরও।
বাংলাদেশ দল যখন প্রস্তুতি নামল, তখনও স্টেডিয়ামে আলো-আধারী অবস্থা। মাত্র একটা ফ্লাড লাইট জ্বালানো ছিল। অথচ, দল মাঠে পৌঁছানোর আগেই সবগুলোই জ্বলে ওঠার কথা। তবে এর মধ্যেই প্রস্তুতির ছক সাজানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন হাভিয়ের কাবরেরা। খেলোয়াড়েরা সময় নষ্ট না করে মাঝমাঠে গা গরম করতে নেমে পড়লেন। এর কিছুক্ষণ পর জ্বলল বাকি ফ্লাড লাইটগুলো।
দল এদিনও প্রস্তুতি নিল টার্ফে। শিলংয়ে এসে এখনও মূল মাঠে অনুশীলনের সুযোগ মেলেনি। ম্যাচের আগের দিন মিলতে পারে সে সুযোগ। তবে এই বিড়ম্বনাগুলোর মুখোমুখি যে হতে হবে, সে প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল বলে জানালেন সহকারী কোচ হাসান আল মামুন।
“আমরা তো টার্ফে অনুশীলন করতে চাইনি। ঘাসের মাঠ চেয়েছিলাম। কিন্তু ওদের সীমাবদ্ধতা বা অন্য কোনো কারণ হয়তো ছিল। এগুলো নিয়ে ভাবছি না। আমরা অনুশীলনে মনোযোগ রাখছি, অন্য কিছুতে নয়। প্রথম দিন থেকেই বলে এসেছি, ভারতে আমাদের এরকম সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এজন্য আমাদের প্রস্তত থাকতে হবে।”
সে প্রস্তুতি যে আছে, তার প্রমাণ অনুশীলন দেখে বোঝাও যাচ্ছে। তবে কনকনে ঠাণ্ডায় সাদউদ্দিন-সোহেল রানারা একটু হলেও যে কাবু হয়ে পড়েছেন, তাও দেখা গেল। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে এসে রাইট ব্যাক সাদউদ্দিন বলে গেলেন ঠাণ্ডা একটু বেশি।
বরাবরের মতোই অনুশীলনে কাবরেরা গণমাধ্যম কর্মীদের বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে দেননি। বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৫ মিনিট। তবে এই সময়েই দেখা মিলেছে, সব প্রতিকূলতার স্রোত ডিঙিয়ে কাঙিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর আত্মবিশ্বাসের স্রোতও বইছে দলের মধ্যে। এই বাধা-বিপত্তিগুলো দলের মনোবল কমাচ্ছে না, বরং আরও বাড়াচ্ছে। জাতীয় দলের রাইটব্যাক সাদউদ্দিন যেমন, প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলে গেলেন, “এবার হবে।”
মানে ২০১৯ সালে সল্টলেকে ভারতের বিপক্ষে যেটা হয়নি, সেটা এবার হবে। সেবার শেষ দিকে গোল হজম করে জয় হাত ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। ১-১ ড্রয়ের সেই হতাশা, শিলংয়ের নানা প্রতিকূলতার সাথে হাসমুখে লড়ে যাওয়া, দলের অন্দরে বয়ে চলা প্রাণোচ্ছ্বল আবহ যেন বলে দিচ্ছে ‘এবার হবে।’