অষ্টাদশ মিনিটেই দশ জনের দলে পরিণত হলো চট্টগ্রাম আবাহনী। দলটির পোস্টের নিচে ম্যাচজুড়ে দারুণ সব সেভ করলেন মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু বসুন্ধরা কিংসকে আটকানোর জন্য তা যথেষ্ট হলো না। কাঙ্ক্ষিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল অস্কার ব্রুসনের দল।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার ২-০ গোলে জিতে কিংস। ফেডারেশন কাপে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও প্রিমিয়ার লিগে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির কাছে হারের পর জয়ে ফিরল তারা।
চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে জয়ের পর লিগ শিরোপার ঘ্রাণ আরও ভালোভাবে পাচ্ছে কিংস। ১৬ ম্যাচ ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনীর চেয়ে ১০ পয়েন্টের ব্যবধান ধরে রাখা কিংসের শিরোপা উৎসবের জন্য দরকার আর মাত্র একটি জয়।
পেনাল্টি গোলের পর লাল কার্ডের ধাক্কা চ. আবাহনীর
কিংসের ঘরের মাঠে শুরু থেকে দারুণ লড়াই করছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু ষোড়শ মিনিটে দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তোকে বক্সে ফাউল করে বসেন গোলরক্ষক নাঈম। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিক থেকে মিগেল ফিগেইরা দামাশেনো এগিয়ে নেন কিংসকে।
দামাশেনোর পাস দোরিয়েলতন রিসিভ করার সময় বলে স্পর্শ জোরে হয়ে যায়। ওই সময় নাঈম ফাউল না করলে বলে বেরিয়ে যেতে পারত বাইরে দিয়ে।
এই গোলের ধাক্কার পরই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার ফরহাদ মনা। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে রেফারির সঙ্গে বাহাসে জড়িয়ে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেও সতর্ক হননি তিনি, বাহাস অব্যাহত রেখে পান দ্বিতীয় হলুদ কার্ড।
নাঈমের প্রতিরোধ
পিছিয়ে পড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর পোস্ট বিরতির আগ পর্যন্ত আগলে রেখে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে দেননি গোলরক্ষক নাঈম। ২২তম মিনিটে রবিনিয়োর ডিফেন্সচেরা পাস ধরে দোরিয়েলতনের শটে ছুটে এসে ফেরান তিনি।
৩৩তম মিনিটে সোহেল রানার শট এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে কিছুটা দিক পাল্টালেও নাঈম ঝাঁপিয়ে গ্লাভসে নেন।
পরের মিনিটে ভালো সুযোগ কড়া নাড়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর দরজায়। ডেভিড ইফেগুয়ের পাস ধরে রকি ক্রস বাড়ান বক্সে। ইকবালের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সমতার সুযোগ নষ্ট হয় বন্দরনগরীর দলটির।
৩৮তম মিনিটে সমতার সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ চট্টগ্রাম আবাহনী। পাল্টা আক্রমণে ডেভিড ছুটছিলেন ডান দিক দিয়ে। রিমন হোসেন ছিলেন একমাত্র ডিফেন্ডার। বাঁ দিকে তখন চট্টগ্রাম আবাহনীর মোস্তফা এবং আরও একজন। কিন্তু এক বনাম তিন পরিস্থিতিতে সতীর্থকে পাস দিতে দেরি করে বসেন ডেডিভ। এরপর তার পাসের প্রথম চেষ্টা রিমন আটকালে ফের পেয়ে যান তিনি। কিন্তু ডেভিডের শট এবার আটকান গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
দোরিয়েলতনের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলের দেখা পেয়ে যায় কিংস। রবিনিয়োর কর্নার ক্লিয়ার করতে পারেননি ডিফেন্ডাররা। রাকিব হোসেনের ফ্লিকের পর দূরের পোস্টে থাকা দোরিয়েলতন সুযোগ কাজে লাগান অনায়াসে।
আগে থেকেই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন দোরিয়েলতন। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের গোল সংখ্যা দাঁড়াল ১৪টি।
রবিনিয়োর পেনাল্টিও আটকালেন নাঈম
ম্যাচটা ‘শেষ’ হয়ে যেতে পারত ৬১তম মিনিটেই। কিন্তু রবসন দি সিলভা রবিনিয়োর স্পট কিক নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়ে আটকান নাঈম। রবিনিয়োকে বক্সে দুখু মিয়া ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।
৭২তম মিনিটে দামাশেনের কোনাকুণি শট কর্নারের বিনিময়ে বের করে দেন নাঈম। একটু পর দোরিয়েলতনের শট আটকান পা দিয়ে। ৭৬তম মিনিটে এই ব্রাজিলিয়ান নাঈমকে পরাস্ত করে জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে হয়নি গোল। কিন্তু ম্যাচ জুড়ে একের পর এক সেভ করেও নাঈম মাঠ ছেড়েছেন হারের বিষাদ নিয়ে।