ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ
স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তের আশা, পা মাটিতেই রেখে উন্নতির চেষ্টা করে যাবেন তরুণ প্রতিভাবান এই ফুটবলার।
Published : 10 Jul 2024, 09:13 AM
লামিনে ইয়ামালের বয়স আর তিন দিন পরে বয়স হবে মাত্র ১৭। অথচ খেলা দেখলে মনে হয় যেন, কত পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ এক ফুটবলার তিনি! এই বয়সেই যিনি এরকম খেলেন, আরও পরিণত হলে তিনি কেমন খেলতে পারে, সেই সম্ভাবনা নিয়ে রোমাঞ্চিত স্পেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তার আশা, এভাবেই পা মাটিতে রেখে উন্নতির চেষ্টা করে যাবেন ইয়ামাল এবং আরও অনেক বছর তার খেলঅ উপভোগ করতে পারবে ফুটবলবিশ্ব।
এবারের ইউরোতে ইয়ামাল আলো ছড়াচ্ছেন শুরু থেকেই। তবে দারুণ খেলেও গোল পাচ্ছিলেন না। সেই ঘাটতিও পুষিয়ে দিলেন সেমি-ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে। চোখধাঁধানো এক গোল করে মঙ্গলবার দলকে সমতায় ফেরালেন ফ্রান্সের বিপক্ষে। নাম লেখালেন তিনি রেকর্ডের পাতায়। ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার কীর্তি এখন তারই।
তার গোলে সমতা ফেরানোর পর দানি ওলমোর গোল এগিয়ে দেয় স্পেনকে। শেষ পর্যন্ত সেই ব্যবধানেই ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে যায় স্পেন।
ম্যাচের পর কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে স্তুতিতে ভাসালেন ইয়ামালকে। বার্সেলোনার হয়ে গত মৌসুমেই নিজের প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। এই বয়সের একজন ফুটবলারের ওপর ভরসা রাখার কৃতিত্ব বার্সেলোনার সেই সময়ের কোচ শাভি এর্নান্দেসকে দিতেই হবে। ক্লাবের জার্সিতে নজর কাড়া ইয়ামালকে দেশের জার্সির ভারও দিতে পিছপা হননি দে লা ফুয়েন্তে। তরুণ তারকা এখানেও আপন আলোয় উদ্ভাসিত।
দে লা ফুয়েন্তের আশা, এই পথ ধরেই আরও অনেক ছুটে যাবেন ইয়ামাল।
“আমরা সবাই জানি সে কেমন। তার যত্ন নিতে হবে আমাদের। আমি চাই, সে একইরকম বিনম্রতায় কাজ করে যাবে, পা মাটিতেই রাখবে যেন আরও উন্নতি করতে পারে। মাঠে যে পরিণত আচরণ সে মেলে ধরে, আশা করি একই মানসিকতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে সে শিখতে থাকবে।”
“সত্যি বলতে, তাকে দেখে মনে হয় যে, বয়সের তুলনায় সে বেশি পরিণত। তার মতো একজন ফুটবলার যে আমাদের দলে খেলে, সে যে একজন স্প্যানিশ, এটা উদযাপন করার মতোই ব্যাপা এবং আশা করি, অনেক বছর ধরে তার খেলা আমরা উপভোগ করতে পারব।”
শুধু ইয়ামাল নয়, কোচের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়েছে গোটা দলই। টুর্নামেন্টজুড়েই স্পেনের দলীয় একতা আলাদা করেই নজর কেড়েছে সবার। কোচের মতেও তাদের সাফল্যের মূল কারণ এটিই।
“আমাদের ফূটবলীয় ধারণা নির্ভর করে আত্মপ্রত্যয়ের ওপর। আজকের মতো এরকমই খেলতে চাই আমরা। নিজেদের শক্তি অনুযায়ী খেলতে চাই। আমরা জানি যে, ফুটবলটা আমরা খেলতে পারি, টুর্নামেন্টজুড়ে আমরা তা দেখিয়েছি।”
“ব্যক্তিগতভাবে এই দলের অনেকেই দারুণ ফুটবলার। কিন্তু সেই ব্যক্তিগত মানের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল আমরা পাই… ওরা সবাই একটি লক্ষ্য নিয়েই এগোয়, সবাই মিলে চেষ্টা করে। নিঃস্বার্থভাবে দলের জন্য কাজ করে যায় তারা। আজকের পারফরম্যান্সে আরও একবার ফুটে উঠেছে যে, এই দল সহজে তৃপ্ত হয় না এবং ত্যাগের চেতনাকে সঙ্গী করে ক্রমাগত উন্নতি করতে চায়।”
ফাইনালে ওঠার পর সমালোচকদের খানিকটা জবাব দিতেও ভুলেননি দে লা ফুয়েন্তে। তার দল নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে স্পেনের সংবাদমাধ্যমে। ইউরোর আগে এই দলকে শীর্ষ ফেভারিটের কাতারে রাখেননি অনেকেই। কিন্তু কোচের দাবি, তার বিশ্বাস ছিল সবসময়ই।
“আপনাদেরকে এটা জানাতে চাই যে, আপনারা যতটা বিস্মিত হয়েছেন, আমরা ততটা হইনি, কারণ এই দলের সম্ভাবনা আমাদের জানা ছিল। এই ছেলেদেরকে আমি চিনি এবং সেটার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। নিজের খেয়াল থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।”
“আপনারা বলে গেছেন যে অমুক ফুটবলারকে কেন নেওয়া হয়নি, তমুক কেন নেই। অথচ তাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু আপনাদের জানা নেই। আমি ও আমাদের টেকনিক্যাল স্টাফ, আমরা জানি এসব… এবং এটাও জানি যে, আমার ছেলেরা আরও বেশি কিছু দিতে পারে এবং আরও উন্নতি করতে পারে।”