ফেডারেশন কাপ
মোহামেডানের দারুণ জয়ের আনন্দ অবশ্য কিছুটা ফিকে হয়েছে অধিনায়ক সুলেমানে দিয়াবাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায়।
Published : 24 Dec 2024, 04:35 PM
প্রিমিয়ার লিগে উড়তে থাকা মোহামেডান ছন্দটা অবশেষে টেনে আনতে পারল ফেডারেশন কাপে। গোল করে ও করিয়ে ম্যাচের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন আরিফ হোসেন ও রাজু আহমেদ জিসান। হার দিয়ে শুরুর বিবর্ণতা কাটিয়ে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল সাদাকালো জার্সিধারীরা।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মঙ্গলবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৬-০ গোলে হারিয়েছে মোহামেডান। ইমানুয়েল সানডে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সুলেমানে দিয়বাতে। দ্বিতীয়ার্ধে আরিফ, জিসান, সৌরভ দেওয়ান ও জুয়েল মিয়া ব্যবধান আরও বাড়ান।
রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটির বিপক্ষে শেষ দিকের গোলে হেরে ফেডারেশন কাপ শুরু করেছিল মোহামেডান। প্রথম জয়ে ৩ পয়েন্ট পাওয়ায় ফাইনালে ওঠার প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা জোরাল করল আলফাজ আহমেদের দল।
আবাহনীর বিপক্ষে হেরে প্রতিযোগিতা শুরু করা চট্টগ্রাম আবাহনীই তৈরি করেছিল প্রথম সুযোগ, ষষ্ঠ মিনিটে। দূরপাল্লার ফ্রি কিকে চেষ্টা করেন সেলিম রেজা, কিন্তু ফিস্ট করে মোহামেডানের ত্রাতা গোলকিপার সুজন হোসেন। ম্যাচের বাকি অংশজুড়ে কেবল মোহামেডানের গোল উৎসবের গল্প।
দশম মিনিটের প্রথম গোছালো আক্রমণ থেকে মোহামেডানকে এগিয়ে নেন সানডে। বক্সে আরিফের পাস প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জটলার ভেতর থেকে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
চার মিনিটে পর দারুণ আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় প্রিমিয়ার লিগে টানা চার ম্যাচে জয় পাওয়া মোহামেডান। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের থ্রু পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন আরিফ। গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট না নিয়ে তিনি বাড়ান ডানে অরক্ষিত থাকা দিয়াবাতেকে, ফাঁকা পোস্টে আলতো টোকায় বল পাঠিয়ে দেন অধিনায়ক।
৪০তম মিনিটে অবিশ্বাস্য মিস করেন দিয়াবাতে। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা জিসানের ক্রসে গোলকিপার স্লাইড করায় ঠিকঠাক পা ছোঁয়াতে পারেননি আরিফ, বল গোলকিপারের গায়ে লেগে চলে যায় দিয়াবাতের পায়ে। গোলমুখ থেকে উড়িয়ে মারেন তিনি!
এর একটু পরই দিয়বাতেকে মাঠে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ চিকিৎসা নেওয়ার পর স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন মোহামেডান অধিনায়ক।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে ফেরার সুযোগ কড়া নেড়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর দুয়ারে। ডান দিক থেকে আসা ক্রস ফিস্ট করে ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেনি গোলরক্ষক। তৌহিদুল আলম সবুজের টোকায় বল পোস্টে ভেতরের দিকে লাগার পর গোললাইন থেকে ফেরান রিয়াদুল হাসান রাফি।
৫২তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় নেয় মোহামেডান। রাফির থ্রো ইনের পর জিসানের আড়াআড়ি ক্রসে ছুটে গিয়ে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আরিফ। ৬৮তম মিনিটে সতীর্থের লং পাস ধরে বক্সে ঢুকে নিখুঁত টোকায় স্কোরলাইন ৪-০ করেন জিসান।
৭৭তম মিনিটে আরিফের ক্রস প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন সৌরভ দেওয়ান। এই গোলের রেশ থাকতেই সব অনিশ্চয়তার ইতি টেনে দেন বদলি নামা জুয়েল।
ফকিরেরপুলের জালে রহমতগঞ্জের ৬ গোল
ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে গোল উৎসব করেছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটিও। নাবীব নেওয়াজ জীবনের হ্যাটট্রিকে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে ফেডারেশন কাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে কামাল বাবুর দল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলেও শীর্ষে আছে তারা।
মোহামেডানকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ শুরুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামা রহমতগঞ্জ প্রথমার্ধেই মেহরাজ হোসেন অপি ও জীবনের গোলে বসে যায় চালকের আসনে। দ্বিতীয়ার্ধে স্যামুয়েল বোয়াটেং স্কোরলাইন ৩-০ করার পর জোড়া গোলে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন জীবন। পুরান ঢাকার দলটির হয়ে শেষ দিকে ব্যবধান আরও বাড়ান মোহাম্মদ তোহা।