ফেনীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজন করা গণইফতার কর্মসূচিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
সোমবার সন্ধ্যায় ফেনী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন হামলায় আহত ও কলেজের বিবিএসের শিক্ষার্থী আলী আহাম্মদ ফোরকান।
তিনিসহ গণইফতারের আয়োজকদের দাবি, হামলায় অন্তত আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ফোরকান ছাড়াও গণিত বিভাগের আবদুল মোহাইমিন আজিম, বিএসসি’র সাইফুল ইসলাম ও এমরান হোসেন চিকিৎসা নিয়েছেন।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রশিবির গণইফতারের আয়োজন করে। ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তাদের সরিয়ে দেওয়া হলেও কাউকে পেটানো হয়নি।
আলী আহাম্মদ ফোরকান বলেন, কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি আয়োজনে বিধিনিষেধ দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় কলেজের আঙিনায় গণইফতার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেজন্য কলেজ সংলগ্ন মসজিদে আসর নামাজ শেষে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন।
খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিবের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী তাদের জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চান। এর কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে যান জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু।
তখন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী ব্যাট ও স্টাম্প দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন বলে অভিযোগ করেন ফোরকান।
আহত আরেক শিক্ষার্থী আবদুল মোহাইমিন আজিম জানান, ইফতারে অংশ নিতে এলে তাদের ক্রিকেট ব্যাট-স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। একপর্যায়ে তাকে আটকে রাখার আধাঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কলেজে ছাত্রশিবির এই ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করেছে দাবি করে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিব বলেন, “ফেইসবুকে গণইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। পরে সেখানে গিয়ে দেখি তারা জড়ো হচ্ছেন। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তাদের কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।”
ফেনী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু বলেন, “ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে অরাজকতা করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গণইফতারের আয়োজন করে। বিষয়টি কলেজ প্রশাসন ও ছাত্র সংসদের কেউ জানতো না। নেতাকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কলেজে গিয়ে তাদের সরিয়ে দিই।”
তবে সেখানে কাউকে পেটানো হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন।
ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোক্তার হোসেইন বলেন, “ইফতার পার্টির জন্য কেউ আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নেয়নি। তবে ইফতার পার্টিতে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি।”
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, "ঝামেলার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। কেউ আহত হয়েছে কিনা জানা নেই। সোমবার রাত পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগও করেনি।