ওসমানী মেডিকেলে কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2024, 06:11 AM
Updated : 11 March 2024, 06:11 AM

সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় রোববার দুপুরে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করা হয় বলে প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান। 

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শনিবার রাতে ঘটনায় রোববার আমরা দুই ঘণ্টা কর্মবিরতির পর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি স্থগিত করি।

“কিন্তু বেলা তিনটার দিকে ক্যাস্পাসের শেখ রাসেল ছাত্রাবাসে থাকা স্টাফ মো. এলিম ও গোবিন্দের দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে। ভাঙচুর ও হামলার বিষয়টিও কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

মারধরের অভিযোগ আনা নৈশপ্রহরী মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের জানান, গত শনিবার রাতে তিনিসহ আরও দুজন রাতের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। মেডিকেল কলেজের অডিটরিয়ামে ৬০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেটি শেষ হয়েছে রাত পৌনে চারটার দিকে। অনুষ্ঠান শেষে অডিটরিয়ামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ করতে যান তিনি। সেসময় চেয়ারে একটি ব্যাগ পান। পরে অডিটরিয়াম থেকে বেরিয়ে বাইরে কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে সেই ব্যাগ তিনি বুঝিয়ে দেন।

তার দাবি, এর কিছুক্ষণ পর এক ছাত্রী অডিটরিয়ামের মঞ্চে গিয়ে মোবাইল ফোন হারানোর কথা জানান। তখন তিনিসহ অন্যরা ফোন খুঁজতে থাকেন। এ সময় ওই ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে প্রথমে কল বাজলেও পরে নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন শিক্ষার্থীরা তাকে সন্দেহ করে তল্লাশি করেন। কিন্তু তার কাছে কোনো ফোন পাওয়া যায়নি।

নৈশপ্রহরী মোহাম্মদ আলীর অভিযোগ, একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সেখানে গিয়ে তাকে মারধর করে হাসপাতালের পুলিশ বক্সে নিয়ে যান। তবে তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি সকালে বিষয়টি চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী পরিষদের নেতাদের জানান। 

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ওই কর্মচারীর গায়ে তিনি হাত তোলেননি। শনিবার রাতের অনুষ্ঠানে তিনি অতিথি ছিলেন। রাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে কল করে ফোন চুরির বিষয়টি জানান। তিনি সেখানে গেলে ওই কর্মচারীর সামনেই সাউন্ড স্পিকার সরবরাহকারী দোকানের কর্মচারী প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে চুরির ঘটনার বর্ণনা দেন।

সাইফুল ইসলামের দাবি, এ সময় ওই কর্মচারীকে তিনি বিষয়টি কাউকে না বলার শর্তে ফোনটি নিয়ে থাকলে দিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু ফোন না পেয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

ওই কর্মচারীর নিরাপত্তার খাতিরেই তাকে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিলেন দাবি করে সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, “সকালে জানতে পারি ওই কর্মচারী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগসহ অন্যদের নিয়ে কলেজে গেছেন।”

এসব বিষয়ে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশির রঞ্জন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন।

শিক্ষার্থীরা তাকে জানান, প্রত্যক্ষদর্শীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ওই কর্মচারীকে আটক করা হয়। কিন্তু তার কাছে  মোবাইল পাওয়া যায়নি। কিন্তু মারধরের অভিযোগে কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান। এ বিষয়ে সোমবার উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সমাধানের জন্য বলা হয়েছে; এরপর কর্মচারীরা কাজে ফিরেছেন।