ঝিকরগাছা আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ পৌর মেয়রের

তবে হত্যার হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ তোলেছেন মুছা মাহমুদ।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2023, 03:14 PM
Updated : 17 March 2023, 03:14 PM

যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়রকে গুলি করে হত্যার হুমকি অভিযোগ উঠেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিরুদ্ধে।

শুক্রবার দুপুর ১২টায় যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল।

তিনি জানান, এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় সংবাদ সম্মেলন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের সঙ্গে পৌরসভার ১১ জন কাউন্সিলরও ছিলেন।

পৌর পরিষদের সিদ্ধান্তে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় বলে মেয়র জানান।

সেখানে লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি পৌরসভায় নিজ কার্যালয়ে ছিলেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ কক্ষে ঢুকে সেখানে উপস্থিত সবাইকে বের করে দেন। এরপর তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বাইরে বের হলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন।

পৌর মেয়র আরও বলেন, “তার (মুছা মাহমুদ) সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে কথাবার্তা বন্ধ আছে। কারণ, সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিলে মুছা মাহমুদ গং প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করে।

“আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ায় পৌর পরিষদের প্যাডে ঝিকরগাছা থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করি। অত্যান্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ঢুকে একজন পৌর মেয়রকে হত্যার হুমকির পরও ঝিকরগাছা থানার ওসি আমার এজাহারটি গ্রহণ করলেও মামলা হিসেবে রেকর্ড করেন নাই। এ বিষয়ে আমি ওসি সাহেবের কাছে ফোন করলে তিনি উপরের নির্দেশের অপেক্ষার কথা বলেন।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, “আপনাদের কাছে প্রশ্ন হল- আওয়ামী লীগের পদে থাকলেই কি সে আইনের ঊর্ধ্বে?”

কী কারণে হত্যার হুমকি- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, “ঝিকরগাছা পৌরসভার সাবেক বোটঘাট এলাকায় পাঁচ শতকের একটি সরকারি সম্পত্তি ডিসিআর না কেটেই মুছা মাহমুদের নেতৃত্বে ব্যক্তিস্বার্থে দখল করে নেওয়া হয়েছে। এতদিন ওই জমিতে থাকা ভবনে তালা দেওয়া থাকলেও গত বুধবার সেটা খোলা অবস্থায় দেখি। তখন আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে কেউ ওই সম্পত্তির ডিসিআর কেটে নিয়েছে কিনা জানতে চাই। এর ঘণ্টাখানেক পর মুছা মাহমুদ এসে আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যান।”

বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা আওয়ামী লীগকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

তবে হুমকির বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন মুছা মাহমুদ।

তার দাবি, ওই জমি আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কার্যালয়ের। যুবলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেনসহ কয়েকজন অফিস খুললে পৌর মেয়র সেখানে গিয়ে তাদের গালিগালাজ করেন।

উল্টো তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে দাবি করে মুছা মাহমুদ বলেন, ওই ভবনে পৌর মেয়র তার ব্যক্তিগত অফিস বানাতে চায়। এ বিষয়ে জানতেই তিনি পৌরসভায় মেয়রের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়র তার পিস্তল বের করে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন।

এসব বিষয় উল্লেখ করে পরদিনই ঝিকরগাছা থানায় জিডি করেছেন বলে জানান মুছা মাহমুদ।

মুছা নিজে ওই ভবনটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে চান দাবি করে মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা বলেন, ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে মুছা তার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন।

এ বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার জানান, তারা উভয়ের বক্তব্য শুনেছেন। এখন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”