চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে জখম, হাসপাতালে মৃত্যু

মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে তিনটি ভ্যানগাড়ি চুরির কথা স্বীকার করে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2022, 05:12 AM
Updated : 25 Sept 2022, 05:12 AM

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রিকশাভ্যান চুরির অভিযোগ তুলে এক যুবককে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।

শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে শনিবার ভোরে রানা মিয়াকে মারধর করা হয়। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের ছেলে নিহত ৩০ বছর বয়সী রানা মিয়া স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরি করতো।

ঘটনার বর্ণনায় আমিরুল বলেন, স্থানীয় কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মো. শিপন মিয়া (২৫) ভাঙ্গারির ব্যবসা করে। সম্প্রতি শিপনের পাঁচটি ভ্যানগাড়ি চুরি হয়। এ ঘটনায় রানার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে তাকে শনিবার ভোর ৩টার দিকে আটকে রাখে শিপন।

“পরে রাতভোর রানাকে মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তিনটি ভ্যানগাড়ি চুরির কথা স্বীকার করে রানা।”

তিনি আরও জানান, এ সময় স্থানীয়রা রানাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করে৷ কিন্তু তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে সবার সামনেই শিপনসহ আকাশ মিয়া (২২), উজ্জ্বল মিয়া (২৫) ও আবুল কাশেমের ছেলে ইমন (২৬) রানাকে মারধর করতে থাকে। পরে রানার কাছ থেকে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেয়।

এরপর রানাকে উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।

পরে রানাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান আমিরুল।

তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, “আমি বারবার আকুতি মিনতি করলেও আমার ছেলেকে তারা ছাড়লো না, আমি তাদের পায়ে পর্যন্ত ধরেছি। তবুও তারা আমার কথা শুনলো না। সবশেষ আমার ছেলেকে মেরেই ফেললো। আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করে বুকের পাঁজর, দুই হাত ও পা ভেঙে দেয়।

“আমার ছেলের শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা নেই যে, আঘাত করেনি। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। তাই হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে সরাসরি থানায় এসেছি।”

এ বিষয়ে জানতে শিপনের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মা রোকেয়া আক্তার জানান, শিপন ব্যবসার কাজে এলাকার বাইরে গেছে।

ওসি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।