বাবা-মাকে কোপানোর পর প্রতিবেশীকে খুন, গণপিটুনিতে যুবক নিহত

ওসি বলেন, “মঞ্জু চাকমা মানসিক রোগী বলে সংবাদ পাই আমরা।”

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2022, 05:15 PM
Updated : 10 Dec 2022, 05:15 PM

বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করতে আসা প্রতিবেশীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির এক যুবকের বিরুদ্ধে; পরে তাকেও পিটিয়ে হত্যা করে জনতা।

উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের শিজক গলাচিপা এলাকায় শনিবার বিকালে এ দুটি খুনের ঘটনা ঘটে বলে বাঘাইছড়ি থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন জানান। 

গণপিটুনিতে নিহত মঞ্জু চাকমা (৩০) ওই এলাকার রত্নকুমার চাকমা ও কালোচুলি চাকমার ছেলে। তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছিলেন বলে স্বজনরা পুলিশকে জানিয়েছেন।

মঞ্জুর দায়ের কোপে নিহত সরল চাকমা (৫০) ওই এলাকারই বাসিন্দা।  

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মঞ্জু চাকমা তার মা কালোচুলি চাকমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্ত্রীকে বাঁচাতে রত্নকুমার চাকমা এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে আহত করেন মঞ্জু। এরপর তিনি বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। লোকজন আর তাকে খুঁজে পায়নি।  

গুরুতর আহত অবস্থায় রত্মকুমার চাকমাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

শনিবার বিকালের দিকে মঞ্জু চাকমাকে গ্রাম ছেড়ে পালাতে দেখে লোকজন আটকের চেষ্টা করে। তখন তাকে ধরতে গেলে তিনি সরল চাকমাকে (৫০) দা দিয়ে কোপানো শুরু করেন। এতে সরল চাকমা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

পরে লোকজন মঞ্জুকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং পিটিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে।

সারোয়াতলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অতুল বিহারি চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, “মঞ্জু একজন মানসিক রোগী। আগের দিন রাতে তার মা ও বাবাকে কুপিয়ে জখম করেন। আজ পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধরতে গেলে তার হাতে থাকা দায়ের কোপে সরল চাকমা খুন হন।”

“পরে উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পিটুনি দিলে তিনিও ঘটনাস্থলে মারা যায় বলে জানতে পেরেছি।”

বাঘাইছড়ি থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “ঘটনাস্থলেই দুজন মারা গেছেন বলে জেনেছি। মঞ্জু চাকমা মানসিক রোগী বলে সংবাদ পাই আমরা। পুলিশের একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। ফিরে এলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক। একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কারণে এই ঘটনাটি ঘটল।

“যতুটুকু জেনেছি, মঞ্জু চাকমা নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে তার বাবা-মাকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে তার দায়ের আঘাতে একজন প্রতিবেশি মারা গেছেন এবং পরে স্থানীয়দের আঘাতে তারও মৃত্যু হয়েছে।“