সিলেটে জঙ্গি সংগঠন শারক্বীয়ার ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

‘আব্দুল্লাহ মায়মুন অভিনব কৌশলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন, যা সংগঠনের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণে ব্যবহার হতো।’

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 03:30 PM
Updated : 9 May 2023, 03:30 PM

সিলেট থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র এক নেতাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট সংলগ্ন বড়শলা এলাকা থেকে এদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে সংগঠনটির শুরা সদস্য ও দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুনও রয়েছেন। তার বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায়।” 

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন ফরিদপুরের চরভদ্রসনের মো. আবু জাফর ওরফে জাফর ওরফে তাহান (৪০), চাঁদপুর মতলব উত্তরের মো. আক্তার কাজী ওরফে সাইদ ওরফে আইজল (৩৮) এবং গোপালগঞ্জ মুকসেদপুরের সালাউদ্দিন রাজ্জাক মোল্লা (৩২)। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার জঙ্গিদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা, বেশকিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করা হয়েছে। 

খন্দকার আল মঈন বলেন, “আব্দুল্লাহ মায়মুন অভিনব কৌশলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন। এ নতুন জঙ্গি সংগঠনের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হতো। পাশাপাশি তিনি জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলামের’ সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সেতুবন্ধনের কাজও করতেন।” 

২০২২ সালের ২৩ অগাস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয় বলে জানান র‌্যাবের এ কমান্ডার।

তিনি আরও বলেন, ওই নিখোঁজ তরুণদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে র‌্যাব জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের একটি নতুন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় থাকার তথ্য পায়। 

“জানা যায়, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।” 

খন্দকার আল মঈন বলেন, এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ সর্বমোট ৬৮ জন এবং পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য কেএনএফের ১৭ নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। 

“বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়,  এই সংগঠনের আমীর আনিসুর রহমান মাহমুদ, দাওয়াতী কার্যক্রমের প্রধান গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ মায়মুন, সংগঠনের উপদেষ্টা শামীম মাহফুজ, অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান রাকিব।”

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে সংগঠনটির শুরা সদস্য ও দাওয়াতী শাখার প্রধান আব্দুল্লাহ মায়মুন কয়েকজন সদস্যসহ সিলেট এলাকায় অবস্থান করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। 

“এরই ভিত্তিতে সোমবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র‌্যাব-৯ যৌথ অভিযান চালায়। সেখানেই এ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আব্দুল্লাহ মায়মুন ২০১৩ সালে স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। তিনি সংগঠনটির সিলেট বিভাগের প্রধান ছিলেন। শীর্ষ জঙ্গি নেতা চাকরিচ্যুত মেজর জিয়ার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

২০১৯ সালে বগুড়ার একটি সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং এক বছরের বেশি সময় কারাভোগ শেষে ২০২০ সালে জামিনে মুক্ত হন বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।