নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাংচুর, মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মী

মামলায় ২৪ জনের নাম ও ঠিকানা উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2022, 12:53 PM
Updated : 19 Nov 2022, 12:53 PM

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাংচুরের অভিযোগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

শুক্রবার রাতে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ছাত্রলীগ কর্মী মো. সোহেল। 

মামলায় বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল (৬০), নাজমুল হক রানা (৪৮), দিপু (৩৮), কাজী আনিসসহ (৩৮) ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মামলার পর রাতেই এজাহারনামীয় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ পানেছ (৫২), ধানগড় এলাকার সজীব হোসেন (৩৩), কদমরসূলের আজিজুল হক রাজীব (৪৪) ও সোনাচরার হুমায়ুন কবীর বুলবুল (৫০)। 

মামলার এজাহারে বাদী বলেন, বন্দরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কবিলের মোড়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়। সামনেই মামলার এক নম্বর আসামি আতাউর রহমান মুকুলের বাড়ি ও রাজনৈতিক কার্যালয়। 

“কিছুদিন যাবৎ আসামিরা বাদী ও দলের লোকজনকে ডেকে তাদের পক্ষে কাজ করতে বলে। আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সমাবেশেও অংশগ্রহণের কথা বলে। এই বিষয়ে অসম্মতি জানালে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এর জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।” 

মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী সোহেল আরও বলেন, “আতাউর রহমান মুকুল ও নুর মোহাম্মদ পনেছের নেতৃত্বে আসামিরা কুড়াল, ছেনা, লোহার রড, হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। 

“একই সময় কার্যালয়ের ড্রয়ারে থাকা বাদীর ব্যবসায়ের নগদ ৫০ হাজার টাকা ও তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায় আসামিরা।” 

মামলার বিষয়ে বাদী মো. সোহেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে এজাহারে উল্লেখিত তথ্যের সাথে তার বক্তব্যের ভিন্নতা পাওয়া যায়।

বাদী সোহেল শনিবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ৫-৬ জন লোক গেঞ্জির কাপড় দিয়ে তাদের মুখ ঢেকে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালায়। এই সময় তাদের একজনের হাতে একটা ডাশা (কাঠের লাঠি) ছিল। 

“তারা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। অফিসের বাইরে কয়েকজন ককটেল ফাটায়। তখন আমরা দ্রুত দৌড়ে বেরিয়ে যাই। হামলাকারীদের মুখে কাপড় বাঁধা থাকায় আসামিদের কাউকে চিনতে পারিনি।” 

হামলাকারীদের কাউকেই চিনতে না পারলেও আসামির তালিকায় ২৪ জনের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানাসহ উল্লেখ করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাদী সোহেল বলেন, “আমি ধারণা করছি বিএনপির লোকজনই হামলা করছে। ধারণা থেকেই তাদের আসামি করছি। মামলায় যারা আসামি তারা সবাই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী।” 

এ বিষয়ে মামলার ১ নম্বর আসামি মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুক্রবার মাগরিবের পর থেকে এশা পর্যন্ত আমার বাসায় একটা ঘরোয়া মিটিং ছিল। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো হামলা-ভাঙচুর করা হয় নাই। 

“আমরা তো এমনিতেই নানা মামলা নিয়ে দৌড়ের উপরে আছি, আমরা আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর করবো কোন সাহসে? তাও আবার আমার বাড়ির সামনে অফিস।” 

তিনি আরও বলেন, “আসলে এইগুলো হলো নাটক সাজিয়ে বিরোধীদলকে দমানোর চেষ্টা। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশে আমরা যাতে ঢাকায় যেতে না পারি সেজন্য এইসব নাটক সাজানো হচ্ছে সরকারি দলের পক্ষ থেকে। তবে এতে আমাদের দমানো যাবে না।”